আলমগীর মানিক, রাঙামাটি:

বহুল আলোচিত সংস্কারপন্থী জেএসএস এমএন লারমা গ্রুপের নেতা এবং রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমাকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত হত্যা মামলার অন্যতম সাপেক্টেট আসামী সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য জনসংহতি সমিতি জেএসএস এর অন্যতম প্রভাবশালী নেতা সুভাষ চাকমা ও মিলন চাকমাসহ মোট চারজনকে অবশেষে আটক করতে সক্ষম হয়েছে যৌথবাহিনী। আটককৃত বাকি দুইজনের নাম তাৎক্ষনিকভাবে পাওয়া যায়নি। রাঙামাটি কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ মীর জাহিদুল হক ও নানিয়ারচর থানার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল লতিফ আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে রাঙামাটি আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মোঃ ইসরাফিল মজুমদার জানিয়েছেন, আটককৃত সুভাষ চাকমা ও তার অপর চার সহযোগিকে নানিয়ারচার থানা পুলিশ মঙ্গলবার ও বুধবার অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে রাঙামাটিস্থ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট এর আদালতে উপস্থাপন করলে মাননীয় আদালত আসামীদেরকে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়ে আগামী ৩১/১০/২০১৮ ইং তারিখ মামলার পরবর্তী দিন ধার্য্য করেন। বুধবার বিকালে রাঙামাটির চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ জাহেদ এর আদালত এই রায় দেন।

এরআগে, বুধবার দুপুর সাড়ে বারোটার সময় নানিয়ারচরের ঘিলাছড়ির কৃঞ্চমাছড়ি এলাকা থেকে সেনা-পুলিশের যৌথ অভিযানে সুভাষকে আটক করে। তারও আগে মঙ্গলবার সাপছড়ি এলাকা থেকে মিলন চাকমাসহ আরো তিনজনকে আটক করে।

কোর্ট ইন্সপেক্টর ইসরাফিল জানিয়েছেন, গত ৩রা মে ২০১৮ ইং তারিখে নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের নিজ কার্যালয়ের সামনে প্রকাশ্যে দিবালোকে গুলি করে হত্যা করা হয় নানিয়ারচর উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমাকে। এই ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে সুভাষ চাকমা, মিলণ চাকমাসহ মোট চারজনের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে পুলিশের তদন্তে তথ্য পাওয়া গেছে। এরই আলোকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাদেরকে আটক করে। তিনি জানান, পরবর্তী ৩১ তারিখে আসামীদের বিরুদ্ধে রিমান্ডের আবেদন করবে থানা পুলিশ।

নিরাপত্তা বাহিনী দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, সুভাষ চাকমার প্রত্যক্ষ ইন্ধনেই শক্তিমান চাকমাকে ইউপিডিএফ এর সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। এছাড়াও অঘোষিত সমঝোতা চুক্তির আলোকে সুভাষ চাকমা ইউপিডিএফ’র সাথে আতাঁত করে বিরোধী পক্ষের লোকজনকে হত্যার মিশন পরিচালনা করতো।

এছাড়াও রাঙামাটি-চট্টগ্রাম রুটের ঘাগড়া বাজারে প্রকাশ্যে চাঁদা আদায় করে বিভিন্ন যানবাহন থেকে। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলাসহ থানায় একাধিক জিডি রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩ মে রাঙামাটির নানিয়ারচরের উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সম্মুখে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট শক্তিমান চাকমাকে দৃর্বৃত্তরা ব্রাশ ফায়ারে করে হত্যা করে। এই হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন রূপন চাকমা নামে চেয়ারম্যানের সহকারী। এই হত্যা মামলায় বেশ কয়েকজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়। এই হত্যা মামলায় সম্পৃক্ততা থাকার প্রমান পাওয়ায় বুধবার জেএসএস নেতাকর্মীদের আটক করা হয়।