তানভিরুল মিরাজ রিপন
বাংলাদেশের শিক্ষানীতির বলী প্রতিবছর কোনো না কোনো পাবলিক পরীক্ষার ফলাফলের পরই দেখি আত্মহত্যা কিংবা মৃত্যুর মিছিল।লাশের সংখ্যা বাড়ে। অভিভাবকরা যতোই সন্তানদের পড়াশুনার প্রতি অবহেলার কথা বা অভিযোগ তুলুক না কেনো-দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মনগড়া সিদ্ধান্তও শিক্ষার্থীদের মানসিক অস্থিরতার সৃষ্টি করে।কিন্তু সিস্টেমকে দোষানো যায়,ইচ্ছামত নিজস্ব অবস্থান থেকে বলা যায় যেকোনো কথা।কিন্তু?টনক তো নড়ে না সিস্টেমের।কেউ শুনেনা-শুধু আর্তনাদ বাড়ে।
মমিনুল রাকিবকে লেখা চিঠি-তার অনুমতি স্বাপেক্ষে চিঠিটি সবার জন্য তুলে ধরলাম।-
আমি তোমার ভিডিও গুলো দেখি।তুমি বেশ কথা বলতে জানো।তোমার উচ্চারণ আর কথার স্পীড এগুলো রেয়ার খুবই।যে কারো কাছে থাকে না।আমি খুব মনোযোগ দিয়ে তোমার উপস্থাপনা দেখি।আরে ম্যান সিস্টেম সবাইরে জবাই করে।সিস্টেম কি মানুষের জন্য বানানো হয়? সিস্টেমতো মানুষকে আটকে রাখার জন্য বানায়।তুমি যে সিদ্ধান্তটা নিতে চাও ওটাতো সিস্টেমকে প্রান দেওয়ার মতো।বেঁচে থাকতে হবে আমাদের-পরিবর্তন তোমার কারনে হবে এরকম অসংখ্য তোমার কারনে হবে।তুমি মরে গেলে তো সিস্টেম জিতে যাবে।আর তুমি মরে গেলে অন্যজন মরার সাহস পাবে।মানুষ সিস্টেমের কারনে মরবে কেনো?সিস্টেম কি মানুষের চেয়েও বড়? তুমি মেধাবী, মেধাবীরা তো মানুষ বাঁচায়। তুমিও বাঁচাবে।বাচ্চা নেইতো আর তুমি,এখন বাচ্চামি করার সময় আর নাই।একটা নির্দিষ্ট সংখ্যায় দাড়িয়ে আছো যেটাতে তোমাকে বলা হয় যুবক প্রায়।হ্যাঁ আমরা সকলে জানি আবেগ দিয়েই হয় পৃথিবীর সবকিছু,সকল সুন্দর আবেগ দিয়ে নির্মান হয়-কিন্তু অতি আবেগ নয়।এখন মানুষের জন্য বড় হচ্ছো।সার্টিফিকেট কি?ভালো জিপিএ, ভালো ভার্সিটি এসব কি?কিছুইনা।মেধাবীদের জন্য গোটা পৃথিবী একটা সৃষ্টির স্থান।তোমার স্টেটাস গুলো আমার পড়া হয় মাঝে মাঝে, ঐ যে আমার পেইজে কোন পোস্টে লাইক দিলে আমার কাছে নোটিফিকেশন আসে।আমার ভালো লাগে-কোন ক্রিয়েটিভ মানুষ আমার পোস্ট পড়লে।তোমারতো শক্তি আছে। শেষ করে দিতে চাও কেনো?
বেঁচে থাকতে হবে আমাদেরই।মৃত্যু কি? তুচ্ছ খুবই তুচ্ছ।আর আন্টি আংকেলকে খুশিটা বা প্রতিদান দিতে পারোনি তাই বলে মৃত্যু উপহার?এটা জঘন্য নয়?এটা বিশ্রী নয়?
” দূঃখ করো না বাঁচো”।তোমার যা গুন আছে ঐ গুন কাউকেই তোমার ওপরে উঠতে দিবে না।তুমি সেরা, সেরাই থাকবে।
বেঁচে থাকা খুবই প্রয়োজন।মৃত্যু নয়। মোটেও মৃত্যু নয়।মৃত্যু মানে শেষ।কিছুরই সুযোগ থাকবেনা।বেঁচে থাকলে শুরু করা যায়।এই যে শ্বাস প্রশ্বাস যতোদিনই আছে ততোদিনই সুযোগ।বেঁচে থাকাটা হলো সবচেয়ে বড় সুযোগ।
শুনো পরাবাস্তবতা একটা এইচ এস সি রেজাল্টের চেয়ে কঠিন থেকে আরো বেশি কঠিন।ওখানে বেঁচে থাকাটা পাপ কিন্তু মৃত্যু হলো দুর্বলের কাজ।সুতরাং এই পাপ না করলে তুমি মানুষও না।এই পাপ করতে হবে।
আত্মহত্যা না করে পাপ করো পাপ-অন্তত সিস্টেমের কারনে যারা মরছে তাদের জন্য একটা শক্তি হও।অসংখ্য মরা মানুষ বাঁচিয়ে রাখার দ্বায়িত্ব এবার তোমারও।
ভালো থাকার দরকার নাই।বেঁচে থাকো। শুভ কামনা।দূঃখ তোমার যে পরিমাণ আমারও তার পরিমাণ।বেঁচে আছি।