আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে তাগিদ দিয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে রোহিঙ্গাদের নিরাপদে এবং স্বেচ্ছায় দেশে ফেরাতে মিয়ানমারকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।

রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্য রাষ্ট্রের উপস্থিতিতে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহায়তা এবং রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরানো ও রাখাইনের অভ্যন্তরে যারা গৃহহারা হয়ে পড়েছে তাদের নিজ আবাসস্থলে ফেরাতে সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়।

এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্ররা স্বাধীনতার প্রতিশ্রুতি ও মানবাধিকারের লঙ্ঘনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্বচ্ছ অনুসন্ধানের ওপর সব সময়ই জোরালোভাবে চাপ সৃষ্টি করে আসছে।

মিয়ানমারে জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন স্ক্রানার বার্গেনার বলেন, রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করেছে মিয়ানমার সরকার।

বার্গেনার আরও বলেন মিয়ানমারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, বলছে তারা সত্যিই রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চায়। তিনি এটাও উল্লেখ করেছেন যে, রাখাইনে সংখ্যালঘু মুসলিম এবং বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠদের ব্যাপারে চিন্তিত তারা।

বার্গেনার বলেন, সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে চায় কিন্তু তাদেরকে স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, সম্মানের সাথে এবং স্থায়ীভাবে থাকার মানসিকতা নিয়ে ফিরতে হবে।

মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচির সঙ্গে কথা বলে এই বিশেষ দূত জানান তিনি এ ব্যাপারে বেশ গঠনমূলক, খোলাখুলি এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন। বার্গেনার বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত অং সান সুচি রোহিঙ্গাদের ফেরানোর জটিলতা এবং ঝুঁকি সম্পর্কেও বেশ সচেতন।

দু’মাস আগে যোগদানের পর এ পর্যন্ত দু’বার মিয়ানমারে সফর করেছেন এই বিশেষ দূত। আগামী সেপ্টেম্বরে তিনি আবারও রাখাইন রাজ্যসহ দেশটির বাকি রাজ্যগুলো পরিদর্শন করবেন।

গত বছরের আগস্টের শেষের দিকে রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদে অস্ত্র হাতে তুলে নেয় বিদ্রোহীরা।

মিয়ানমারের সীমান্তে বেশ কিছু নিরাপত্তা চেকপোস্টে বিদ্রোহীদের হামলার কারণে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালায় সেনাবাহিনী। রাখাইনে অভিযানের নামে সেনাবাহিনীর নির্যাতনে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে যায়।