‘…….এ যুদ্ধ চলবে’

প্রকাশ: ১ জুন, ২০১৮ ০৮:২৪ , আপডেট: ১ জুন, ২০১৮ ০৮:২৫

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


শাহেদ মিজান, সিবিএন:
কর্মপাগল ও জনবান্ধব আমলা কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ নোনাম হোসেন প্রিন্সের বদলীর আদেশ নিয়ে আবেগঘন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল আশরাফ জয়। সাধারণ জনগণের মতো তিনিও মোঃ নোনাম হোসেন প্রিন্সের বদলীর আদেশ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনিও এই মোঃ নোনাম হোসেন প্রিন্সের বদলীতে নষ্ট মানুষের ইঙ্গিত দিয়েছেন। ফেসবুকে স্ট্যাটাসে সাইফুল আশরাফ জয় আমলা তন্ত্রের ইতিবাচক পরিবর্তন এবং সমাজ ও রাষ্ট্রদ্রোহী মানুষদের সমালোচনা করেছেন।

নিচে তাঁর স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-

দিন দিন সৎ আর নির্ভীক কর্মকর্তাদের স্থান সংকুচিত হয়ে আসছে। সামান্য লাভের আশায় মিথ্যার বেসাতি নিয়ে নির্লজ্জের মত এগিয়ে যাচ্ছি। এ দেশটি কত সুন্দর হতে পারত যদি নিজ নিজ দায়িত্ত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারতাম। নতুনরা সব সময় পরিবর্তনের পক্ষে, ন্যায়ের পক্ষে। বিগত কয়েক বছরে দেশের আমলাতন্ত্রে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। পূর্বের অভিজাততন্ত্র মনোভাব থেকে সরে এসে জনগণের সাথে মিশে একাকার হয়ে যাচ্ছে নবীন আমলারা। মূলত আমরা যারা নতুন, তারা চাচ্ছি নিজেদের সব কিছু দিয়ে দেশে একটি পজিটিভ পরিবর্তন আনতে।এ পরিবর্তন উন্নয়নের, এ পরিবর্তন সেবা জনগনের ঘরে পৌঁছে দেওয়ার, এ পরিবর্তন ডিজিটালাইজেশনের, এ পরিবর্তন দূর্নীতির মূলোৎপাটনের। কিন্তু এর জন্য প্রয়োজন সমাজের সব স্তর থেকে সহযোগিতার। কিন্তু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র লাভের আশায় বিক্রী করে দিচ্ছি আমাদের বিবেক। রাজনীতিবিদ, আমলা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক অধিকাংশ পেশাজীবীই তুচ্ছাতিতুচ্ছ স্বার্থে পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে যায়। ধ্রুব সত্যকে নির্লজ্জ বেহায়ার মত মিথ্যা বলে উড়িয়ে দেয় আবার নিরেট মিথ্যাকে নিজেদের প্রয়োজনে সত্য বলে মিছিল করে। কর্মসূত্রে আমরা বিভিন্ন এলাকায় কাজ করি। পরিবার পরিজন থেকে দূরে কাজ করি। সততার ঝান্ডা হাতে নিয়ে ঘুরি, পরিবর্তনের আশায় দিন রাত ফেরিওয়ালার মত কাজ করি। অথচ কিছু ভন্ড, অসাধু, কপট, ধান্ধাবাজ, নির্লজ্জ, বেহায়া কীটদের জন্য সমাজ পরিবর্তনের এ যুদ্ধ কঠিন হয়ে যায়। তারপরও এ যুদ্ধ চলবে, যতদিন মস্তিষ্ক সজাগ এবং সতেজ আছে। পরম শ্রদ্ধেয় মোঃ নোমান হোসেন প্রিন্স স্যার যেখানেই থাকুন যুদ্ধ চালিয়ে যান বিজয় আমাদের হবেই।

মাত্র আট মাসের মাথায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ নোনাম হোসেন প্রিন্সের বদলীর আদেশ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তাঁর বদলীর আদেশ নিয়ে গত তিন ধরে কক্সবাজারের সাধারণ জনগণের মাঝে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ও সর্বত্র সমালোচনা চলছে। অভিযোগ উঠেছে, জেলার একজন শীর্ষ জনপ্রতিনিধির স্বার্থের বিপরীতে কাজ করায় ষড়যন্ত্র করে তাঁেক বদলী করানো হয়েছে। কিন্তু এই আদেশ প্রত্যাহার করে মোঃ নোনাম হোসেন প্রিন্সকে কক্সবাজারে সদর উপজেলায় বহাল দাবি জানাচ্ছে জনগণ। এই জন্য মাববন্ধনসহ বিভিন্ন প্রতিবাদ ও দাবি জানানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়; গত দু’বছরের চারজন ইউএনও বদলীর করা হয়েছে। সবার বদলীর পিছনের ওই জনপ্রতিনিধি হাত রয়েছে বলে দাবি সকলের।
এ ব্যাপারে সদরের জালালাবাদ ইউপি চেয়ারম্যান ইমরুল রাশেদ বলেন, ‘গত দু’বছরে কক্সবাজার সদর উপজেলায় চারজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বদলী করা হয়েছে। এটা সামগ্রিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা। বিশেষ করে মোঃ নোমান হোসেনের শূন্যস্থানটা সহজে পূরণ হবার হয়।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ নোমান হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা জনগণের সেবক। কিন্তু একথাটা অনেকে ভুলে যায় বা মানে না। জনগণের সেবক হিসেবে আমি নিজেকে প্রতিটি মুহূর্ত জনগণের সেবায় নিয়োজিত থাকার চেষ্টা করেছি। এই জন্য কোনো অপরাধীকে আমি প্রশ্রয় না দিই না। পাশাপাশি আমি নিজেকে জনগণের একজন মনে করে তাদের খুব কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করি।’

জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘বদলী বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ দেখে। সেখানে আমার কোনো মন্তব্য বা করার কিছু থাকে না। তবে কক্সবাজার সদরে গত ১৫ মাসে চারজন ইউএনও বদলী হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক। এতে সরকারের উন্নয়ন কাজে বড় ব্যাঘাত ঘটে। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ যদি তার প্রত্যাহার করে তাহলে বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।’

উল্লেখ্য, যোগ দেয়ার মাত্র পাঁচ মাসের মাথায় জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নির্বাচিত হয়েছিলেন মোঃ নোমান হোসেন প্রিন্সভ