প্রেস বিজ্ঞপ্তি:

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির’র সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আ জ ম ওবায়েদুল্লাহ বলেন, বিশ্বের অযুত সম্ভাবনার দেশ বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ এদেশের তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীরাই। যারা নিজেদের মেধাকে শাণিত করে নানা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখে মা-বাবা, পরিবার-পরিজনের মুখ উজ্জ্বল করে সমাজকে আলোকিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস সমাজ বা রাষ্ট্র আমাদের পরবর্তী এ মেধাবী প্রজন্মকে তাদের যথাযথ মর্যাদা না দেয়ায় তারা বিপথেই পা বাড়াচ্ছে। যার ফলে এসব মেধাবী প্রজন্ম দেশের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে যেয়ে বিভিন্ন খারাপ কাজে নিজেদের জড়িয়ে বরং অকালেই তাদের মেধা বিনষ্ট করে চলেছে। এতে করে দেশের এসব মেধাবী প্রজন্ম সুপথে পরিচালিত না হওয়ায় আমরা আমাদের বিদ্যমান জনসংখ্যাকে দেশের জন্য সম্পদ হিসেবে ব্যবহার করতে পারছি না। দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তির কারণে সম্ভাবনাময় মেধাবী শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষাঙ্গনে গিয়ে বিপদগ্রস্থ হওয়া থেকে মুক্ত হতে তারা বিশ্বের উন্নত দেশের দিকে ধাবিত হচ্ছে। কলেজ জীবনে যেসব মেধাবী ছাত্ররা তাদের ঈর্ষনীয় সাফল্য ধরে রাখতে সক্ষম হচ্ছে তারা উচ্চ শিক্ষা নিতে পৃথিবীর ধনী দেশগুলোতে পাড়ি জমাচ্ছে। সেসব দেশগুলোতে নানা সুযোগ সুবিধা পেয়ে নিজ দেশে ফিরে না আসায় প্রতি বছর আমরা বিপুল সংখ্যক মেধাবী শিক্ষার্থীদের হারাতে হচ্ছে। যার দরুন প্রত্যেক বছরই মেধার শীর্ষে থাকা শিক্ষার্থীদের সেবা থেকে দেশমাতৃকা বঞ্চিত হচ্ছে। দেশের বর্তমান বিরাজিত পরিবেশে মেধাবী শিক্ষার্থীদের সঠিক পথ নির্দেশনা প্রদানের মাধ্যমে একটি দুর্নীতিমুক্ত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে ছাত্রশিবির নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে। আজ মেধাহীন ও সন্ত্রাস নির্ভর ছাত্র রাজনীতির বিপরীতে শিবির এদেশের লক্ষ তরুণ ছাত্র সমাজের কাছে প্রিয় ঠিকানা হিসেবে পরিণত হয়েছে। তিনি মেধাবী শিক্ষার্থীদের রাজনীতির কালো থাবায় না জড়িয়ে সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করে নিজেকে যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ার মাধ্যমে সম্ভাবনার বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান।

চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তর শিবির’র উদ্যোগে স্থানীয় একটি কমিউনিটি সেন্টারে এসএসসি/দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আজ (১২.০৫.’১৮) এসব কথা বলেন। নগর উত্তর শিবির সভাপতি আহমেদ সাদমান সালেহ’র সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারী আ স ম রায়হান’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক সালাহউদ্দিন আইউবী, শিবির নেতা কামাল হোসাইন, আমান উল্লাহ, আবু জোবায়ের, সাইফুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসাইন, মুহাম্মদ ইয়াছিন প্রমুখ। কৃতি ছাত্রদের মধ্যে আব্দুল্লাহ আনাস, তানজিম হোসাইন, জামিল আশরাফ তাদের অনুভুতি ব্যক্ত করেন।

প্রধান বক্তা সালাহউদ্দিন আইউবী বলেন দেশের প্রশাসনের প্রত্যেক স্তর আজ দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। তার উপর ক্ষমতাসীন সরকার নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষতার পরিচয় দিতে যেয়ে নতুন নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করে জাতিকে ধর্মহীন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এর ফলে শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলামী ভাবধারার লেখকদের প্রবন্ধ-কবিতা উঠিয়ে দিয়ে তার পরিবর্তে নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা চালু করেছে। রাষ্ট্র ক্ষমতায় চেপে বসা অযোগ্য নেতৃত্বের কারণে শিক্ষাঙ্গনে সেশন জট, সরকার দলীয় ক্যাডারদের সন্ত্রাস ও সীমাহীন দুর্নীতি, বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র-খাতা ফাঁসসহ নানা অপতৎপরতায় বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এখন ধ্বংসের কিনারায় উপনীত হয়েছে। বিদ্যমান জনসংখ্যাকে যথার্থ ব্যবহার করতে না পারায় দেশে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেকারত্বের হার। পরিকল্পিত ভাবে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধর্মহীন করার সুগভীর চক্রান্তের ব্যাপারে আমাদের সজাগ-সচেতন থেকে নৈতিকতা বিরোধী ও জাতি বিনাশী শিক্ষার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যথায় জাতি সন্ত্রাস, দুর্নীতির করাল গ্রাস থেকে মুক্তি পাওয়া তো দূরের কথা বরং এসব অপকর্ম জাতিকে কুড়িয়ে গিলে আমাদের এ মেধাবী প্রজন্মকে আশার বালুচরে রূপকথার গল্প শুনানোর মধ্যে ঘুম পাড়াতে থাকবে।

সভাপতি আহমেদ সাদমান সালেহ মেধাবীদের উদ্দেশ্যে বলেন একটি সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে মেধাবী ছাত্রদের এগিয়ে আসার কোন বিকল্প নেই। দেশকে কল্যাণকামী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে মেধাবীর জন্যে যা যা করণীয় তা করতে ছাত্রশিবির সাধ্য মতো চেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সে সাথে তিনি মেধাবী শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার পাশাপাশি আদর্শিক জ্ঞান অর্জন করে সমাজে নিজেকে একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গঠন করার আহবান জানান। অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ মেধার স্বীকৃতি হিসেবে উপস্থিত কৃতি ছাত্রদের হাতে ক্রেস্ট, ফুল ও উপহার সামগ্রী তুলে দেন।