চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামে আবুল খায়ের গ্রুপের স্টার শিপ ফ্যাক্টরির মানবসম্পদ বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক শাহাদাত হুসাইন হত্যা মামলার প্রধান আসামী রাকিব বেপারী (২৪)কে দীর্ঘ দুই বছর পর গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকা মিরপুরের শাহ আলী থানাধীন মেঘনা স্টোর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

রাকিব বেপারী ফরিদপুর জেলার সদরপুরের ভাষানচর এলাকার বেপারী বাড়ির বাসিন্দা কালাম বেপারীর ছেলে।

শনিবার (১৪ এপ্রিল) অপরাধ শিকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে আসামি।

মামলা তদন্ত কর্মকর্তা বায়েজিদ থানা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আইয়ুব উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এসআই আইয়ুব উদ্দিন বলেন, ‘কাজে ক্রুটি পেয়ে বকাঝকা করায় ২০১৬ সালের ২৮ ডিসেম্বর স্টার শিপ ফ্যাক্টরির মানবসম্পদ বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. শাহাদাত হোসেন ভূইয়াকে মাথায় কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রাকিবসহ আরও তিন জন। দুই দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহাদাত হোসেন মারা যান। এ ঘটনায় ২৮ ডিসেম্বর স্টার শিপ ফ্যাক্টরির মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মো. নুরুল আবসার বাদী হয়ে গ্রেফতার রাকিবসহ চার জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় দীর্ঘ দিন পলাতক থাকার পর শুক্রবার ঢাকার মিরপুর থেকে রাকিবকে গ্রেফতার করেছি। সে আজ (১৪ ডিসেম্বর) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।’

এ মামলার বাকি তিন আসামি পলাতক। তারা হলেন– নোয়াখালী জেলার কবিরহাট এলাকার রবিউল আলম (২২), পটুয়াখালীর বাউফল এলাকার সাব্বির হোসেন (২০) ও ঢাকার নবাবগঞ্জের মো. মমিনুল ইসলাম ওরফে মিঠু (৩৮)।

এসআই আইয়ুব উদ্দিন বলেন, ‘জবানবন্দিতে রাকিব বেপারী জানায়, ২০১৬ সালের ২৭ ডিসেম্বর স্টার শিপ কারখানায় সে, আমিন ও মিঠু কাজ করছিল। ওইদিন শাহাদাত হোসেনসহ আরও তিন জন তাদের কাজ তদারকি করার জন্য কারখানায় আসেন। এসময় কারখানার ফ্লোরে ওয়েল্ডিংয়ের দাগ দেখে শাহাদাত হোসেন তাদের বকাঝকা করেন। এর একপর্যায়ে শাহাদাত হোসেনসহ অপর দুই জন তাদের লোহার অ্যাংগেল দিয়ে মারধর করেন। এতে মিঠু গুরুতর আহত হয়। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছিল।’

এসআই আইয়ুব উদ্দিন আরও বলেন, ‘এ ঘটনার পর রাকিব ও বাকি তিন জন সিদ্ধান্ত নেয়, ওই কারখানায় আর কাজ করবে না এবং সুযোগ পেলে যারা তাদের মারধর করেছে তাদের মেরে চলে যাবো। পরদিন ২৮ ডিসেম্বর তারা ওই কারখানায় কাজ করতে যায়। কাজ করার এক পর্যায়ে দেখে, আমিন একটি বাঁকা দা ও সাব্বির একটি ফ্ল্যাটবার নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে। এসময় আমিন ও সাব্বির রাকিবকেও যেতে বলে। পরে রাকিব দৌড়ে গিয়ে দেখে, আমিন ও সাব্বির ওয়ার্কশপের সামনে শাহাদাত হোসেনকে তাদের হাতে থাকা দা এবং লোহার ফ্ল্যাটবার দিয়ে আঘাত করছে। দৌড়ে গিয়ে রাকিবও একটি লাঠি দিয়ে শাহাদাত হোসেনকে বাড়ি দেয়। মিঠু নামের অপর আসামি তাদের পেছন পেছন গেলেও শাহাদাত হোসেনকে মারধর করেনি।’