বিবিসি :   সৌদি আরবের ভূমিতে আজ থেকে ৮৫ হাজার বছর আগে আধুনিক মানুষ বসবাস করতো বলে নতুন একটি গবেষণায় বেরিয়ে এসেছে।

সম্প্রতি পাওয়া হোমো স্যাপিয়েন্স বা মানব হাড়ের রেডিও আইসোটোপ পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা এই ধারণা করছেন।

সৌদি আরবের আল ওয়াস্তা এলাকায় সংরক্ষিত একটি হ্রদের নীচে কয়েকটি আঙ্গুলের হাড় পান বিজ্ঞানীরা। এর মালিকের অন্য আর কিছু পাওয়া যায়নি।

”এটা স্বাভাবিক,” বিজ্ঞানী ড. হাও গ্রোকাট বলছেন, ”সে সময়ে বসবাসকারী মানব বা অন্য প্রাণীগুলো বেশিরভাগই কোন চিহ্ন না রেখে বিদায় হয়ে গেছে।”

”আমরা ভাগ্যবান যে, আমরা এরকম একটি টুকরা পেয়েছি। হয়তো একজনের এরকম একটি টুকরা থেকে এখনি কিছু বলা যাবে না, তবে এ থেকে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে।”

হাজার বছর আগে সৌদি আরবের পরিবেশ অন্যরকম ছিল বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন

এর আগে ইসরায়েল, চীন আর অস্ট্রেলিয়া থেকে পাওয়া নানা নমুনা দেখে ধারণা করা হতো যে, অন্তত এক লাখ ৮০ হাজার বছর আগেই মানুষজন আফ্রিকা মহাদেশ থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।

তারও আগে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, আফ্রিকা থেকে অন্তত ৬০ হাজার বছর আগে মানুষজন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।

ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা পুরো হাতের একটি নকশা তৈরি করেছেন।

সৌদি আরবের আল ওয়াস্তা এলাকায় খোড়াখুড়ি করছেন বিজ্ঞানীরা

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ৮৫ হাজার বছর আগে সৌদি আরবের পরিবেশ আজকের তুলনায় বেশ ভিন্ন ছিল। মৌসুমি বৃষ্টিপাতের কারণে তখন অনেক বড় বড় হৃদ তৈরি হয়েছিল, জলহস্তীর মতো প্রাণী সেসব হৃদে থাকতো। অ্যান্টি লোপ আর বুনো গরুর মতো অনেক প্রাণী এখানে বাস করতো।

ড. গ্রোকাটের মতে, এসব কারণেই আফ্রিকা থেকে তখনকার মানুষরা সৌদি আরবে এসে বসবাস করতে শুরু করে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় সাম্প্রতিক গবেষণাতেও বেরিয়ে এসেছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই সেই প্রাচীন সময় মানুষজন আফ্রিকা থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন মহাদেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।

এখন মরুভূমি হলেও একসময়ে এখানে একটি হৃদ ছিল বলে বিজ্ঞানীরা বলছেন

তবে এসব নমুনা থেকে পুরোপুরি বোঝা যাচ্ছে না মানুষজন সেখানে কতদিন বাস করেছে। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, এটি কয়েকশো বছর আর কয়েক হাজার বছর হতে পারে।

সেই মানুষরা কি সবাই মারা গেছে নাকি অন্য কোথাও চলে গেছে, সেটাও এখনো পরিষ্কার নয়।

”এই লোকগুলোর কি হলো, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় রহস্য”, বলছেন ড. গ্রোকাট।

একটা সম্ভাবনা হতে পারে, তারা সবাই বিলুপ্ত হয়ে গেছে, আর তাদের স্থানেই জায়গা করে নিয়েছে মানুষের বর্তমান প্রজাতি।