মো. নুরুল করিম আরমান, লামা:

গত এক বছরেও শুরু করা যায়নি বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের নির্মান কাজ। ভবনের জন্য নির্ধারিত জায়গার মালিকানা নিয়ে বিরোধ থাকার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আগামী জুন মাসের আগে কাজ শুরু করা না গেলে বরাদ্দকৃত টাকা ফেরত যাবে। তবে এখনো জমি পাওয়া গেলে কাজ শুরু করা যেতে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আলীকদম উপজেলায় এক সাথে ১নং আলীকদম ইউনিয়ন পরিষদের আধুনিকমানের ভবন নির্মাণের জন্য ৭৪ লক্ষ টাকা এবং ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নির্মাণৈর জন্য আরো ৭৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ। গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি মাসে মেসার্স নজরুল কন্সট্রাকশনকে ভবন দুটি নির্মাণের দায়িত্ব পায়। কিন্তু ২নং চৈক্ষ্যং ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের নির্মাণের কাজ যথাসময়ে শুরু হয়ে শেষ হলেও ১নং আলীকদম ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের নির্মাণকাজ এখনও শুরু করা যায়নি। কারণ পরিষদ ভবনের জন্য নির্ধারিত জায়গা নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। এতে করে ভবন নির্মাণ কাজ থমকে যায়। দীর্ঘ এক বছরেও এর সমাধা হয়নি। ফলে আগামী জুন মাসের আগে বিরোধ মিমাংসা করে কাজ শুরু করা না গেলে বরাদ্দকৃত টাকা ফেরত যাবে।

এদিকে ২০১৭ সালের ৩ মার্চ পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি ভবন দুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। জনবিচ্ছিন্ন এলাকা হওয়ায় সেই সময় প্রতিমন্ত্রী ভবনটি নির্মাণের জন্য সহজ ও জনগণের সুবিধা হয় এমন জায়গা দেখে ভবনটির কাজ শুরু করতে নির্দেশ দেন। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন জায়গা না পাওয়ার অজুহাতে ভবন নির্মাণের বিষয়টি চাপা দিয়ে রাখেন।

এবিষয়ে স্থানীয়রা বলেন, আলীকদম বাজারস্থ পুরাতন টাউন হলের জায়গাটি সদর ইউনিয়ন পরিষদের নিজস্ব সম্পত্তি। চেয়ারম্যান ইচ্ছা করলে ওই জায়গার ওপর ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করতে পারেন। স্বদিচ্ছার অভাবে এক বছরেও ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়নি বলেও জানান তারা।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ভবন নির্মাণের জন্য বিকল্প কোন জায়গা না পাওয়ায় জটিলতা দেখা দেয়। ইউনিয়ন পরিষদ ভবন নির্মাণের জন্য যে পরিমাণ জায়গার প্রয়োজন তা পরিষদের নেই। তাছাড়া পুরাতন টাউন হলের জাযগাটি আমার আগের চেয়ারম্যানগনরা ভাড়া দিয়ে গেছেন।

এক বছরেও ইউপি ভবন নির্মাণ কাজ শুরু না হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে আলীকদম উপজেলা প্রকৌশলী শান্তনু ঘোষ সাগর জানান, ভবন নির্মাণের জমি না থাকার অজুহাতে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বরাদ্দকৃত ৭৪ লক্ষ টাকার কাজ না করেই ফেরত দেওয়া হচ্ছে। জমি পাওয়া না গেলে নিয়মানুযায়ী আগামী জুন নাগাদ এসব টাকা ফেরত যাবে। তবে এখনো জমি পাওয়া গেলে কাজ শুরু করা যেতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আমিরুল কইসার বলেন, আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখবো এবং ভবনটি যেন অবশ্যই নির্মাণ হয় সেই চেষ্টা করব।