শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর:

কক্সবাজার সদরের বৃহত্তর ঈদগাঁওর ৬/৭টি ইউনিয়নে ৩ লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। বেঁচে থাকার তাগিদে প্রতিদিন খেতে হয় কিছু না কিছু ভাল খাবার। আর সে খাবার যদি খেতে হয় বিষাক্ত ক্যামিকেলযুক্ত, তাহলে মানুষের কি হবে? বিশেষ করে শিশুদের বেলায় সকালের নাস্তার টেবিলে বিস্কুট পাউরুটি, কেকসহ বিভিন্ন বেকারীজাত খাবার, অভিভাবকদের কিনে আনতে হয়। আর সে খাবার যদি হয় মরণ খাবার, তাহলে ভবিষ্যত প্রজন্ম শিশুরা বাঁচবে কিভাবে? ঈদগাঁওর আনাচে কানাচে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে ছোট বড় অনেক বেকারী। এসব বেকারীতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে হরেক রকমের সুস্বাদু খাবার। এ খাবার তৈরি করতে তারা ব্যবহার করছে নানা রকম রাসায়নিক দ্রব্য যা মানব দেহের অত্যন্ত ক্ষতিকর। বৈধভাবে বেকারী চালাতে গেলে প্রয়োজন হয় ট্রেড লাইসেন্স, বিএসটিআই অনুমোদিত লাইসেন্স, প্রিমিসেস লাইসেন্স এবং সরকারী বিধি নিষেধ সংক্রান্ত কাগজপত্র।

ঈদগাঁও জাগির পাড়া এলাকায় গড়ে উঠা আল্লাহর দান নামক একটি বেকারীতে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় ঐ বেকারীর কোন সরকারী কাগজপত্র নেই। বিএসটিআই অনুমোদন ছাড়াই রকমারী খাবারের মোড়কে নিজেদের তৈরি সিল ব্যবহার করে দেদাঁরছে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া খাবারের মান নির্ধারণ করে এবং শর্ত সাপেক্ষে দেওয়া হয় বিএসটিআইয়ের অনুমোদন।

এক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকে বিএসটিআই লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন করে। আবেদনের উপর ভিত্তি করে বিএসটি থেকে একটি সিরিয়াল নম্বর দেওয়া হয়। এ নম্বর পেয়ে খাবারের মোড়কে বিএসটি অনুমোদিত সিল ব্যবহার করে খাবার বাজারজাত করছে কয়েকটি বেকারীর মালিক। শুধু বিএসটিআই নয়, সরকারী আসল কোন কাগজপত্রের প্রয়োজন মনে করছে না অনেকেই। যত্রতত্র নোংরা পরিবেশে বেকারীগুলোতে তৈরি হচ্ছে কেক, পাউরুটি, বিস্কুটসহ অন্যান্য রকমারী খাবার।

সরেজমিন আল্লাহর দান বেকারীতে আরো দেখা যায়, চুল্লী (তান্দুল) থেকে বের করে এসব খাবারে স্ট্রেগুলো যখন সাজিয়ে রাখা হয়, দেখা গেছে, মাছিসহ বিভিন্ন প্রকারের পোকামাকড় ভন ভন করে উঠছে। আবার কিছু জেঁকে বসে আছে খাবারের উপর। নোংরা স্যাঁতসেঁতে মাটির উপর ফেলে তা আবার প্যাকেট করা হচ্ছে। খাবারের রং ও কেক পাউরুটি, বিস্কুট ও বনসহ অপরাপর দ্রব্যের প্রসারতা বাড়াতে ব্যবহার করছে বিভিন্ন ধরণের ক্যামিকেল, রাসায়নিক দ্রব্য ও অস্বাস্থ্যকর সুগন্ধি। কেক এবং বিস্কুট তৈরিতে যে রাসায়নিক দ্রব্য এমোনিয়া বাই কার্বনেট ব্যবহার করা হয় তা মানব দেহের অত্যন্ত ক্ষতিকর। যা ক্যান্সারের মত মরণ ব্যাধিকে ডেকে আনে বলে স্থানীয় চিকিৎসকের অভিমত। এ

ব্যাপারে জানতে চাইলে সদর উপজেলা সেনিটারী ইন্সপেক্টর নুরুল আমিন কাদেরী জানান, বিষয়টি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করা হবে। ইউএনও নোমান হোসেন জানান, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পরিচালিত বেকারীতে অভিযান চালানো হবে।

অভিযোগ উঠেছে উপজেলা সেনিটারী ইন্সপেক্টর যোগদানের পর থেকে এসব অবৈধ বেকারী থেকে মাসোহারা নিয়ে কোন ধরণের অভিযান পরিচালনা করে না। যার ফলে তারা বেপরোয়া হয়ে এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।