ইমাম খাইর, সিবিএন:
জেলা পর্যায়ে তৃতীয় বারের মতো তাবলীগ জামাতের ৩ দিনের ‘জেলা ইজতেমা’ ফজরের নামাজের পর শুরু হয়েছে।
শুরুতে বয়ান (আলোচনা) করেন কক্সবাজার বিমানবন্দর জামে মসজিদের খতীব ও ইজতেমা বাস্তবায়ন কমিটির জিম্মাদার আতাউল করিম।
সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন জেলে পার্ক ময়দানে প্রতিদিন ফযরের নামাজের পর থেকে এশার নামাজ পর্যন্ত বয়ান চলবে।
শনিবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে আখেরী মোনাজাতে ইজতেমা শেষ হবে।
ইজতেমার মিম্বর থেকে প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় হবে। তবে, জুমার নামাজে কে ইমামতি করবেন- তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কাকরাইলের মুরব্বিরা কক্সবাজার পৌঁছে তা ফাইনাল করবেন বলে আয়োজকরা জানান।
শীতের সকালে ইজতেমা মাঠে প্রচুর মুসল্লি আসতে শুরু করেছে। শহরের বিভিন্ন এলাকা ছাড়া জেলা ও জেলার বাইর থেকে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা জেলেপার্ক ময়দানে ভীড় করছে। বিকাল নাগাদ ইজতেমা প্রাঙ্গন ভরে যাবে-এমনটি ধারণা আয়োজকদের।
ইজতিমায় আগত মুসল্লিদের জন্য ৯৫টি খুটির পয়েন্ট বসানো হয়েছে। প্রতি খুটিতে থাকবে ১৬টি খোপ। প্রতি খোপের আয়তন ৩২৪ বর্গফুট। ১২টি উপজেলার মুসল্লিদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে পৃথক ১২ টি খিবতাহ বা থাকার ঘর। প্রতি খিবতায় সাদা পোষাকে থাকবে ২ জন করে গোয়েন্দা সংস্থার লোক। বয়ানের মিম্বর থেকে অন্তত ৩০০ ফুট দূরত্বে মুরব্বিদের জন্য স্থাপন করা হয়েছে আলাদা তাবু। ওই তাবুতে থাকবেন কাকরাইলসহ দেশ-বিদেশের শীর্ষস্থানীয় মুরব্বিরা। ইজতিমায় প্রবেশ ও বের হওয়ার পথ বালিকা মাদরসা সড়ক ও ডায়াবেটি পয়েন্ট। এছাড়া ইজতেমা মাঠের চাদিকে মুসল্লিদের হাঁটাচলার সুবিধার্থে উম্মুক্ত জায়গা রাখা হয়েছে।
ইজতিমা আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানায়, ইজতেমা প্রাঙ্গনে বসানো হয়েছে প্রায় ৬’শ টয়লেট, ১০০০ পস্রাবখানা, শতাধিক অস্থায়ী নলকূপ, সাতটি বিশাল আকারের ওজুখানা, ২২টি পানির মটর। মুসল্লীদের খেদমতের জন্য ইজতেমার কর্তৃপক্ষের এক হাজার ২০০ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। নিরাপত্তার জেলা পুলিশের সাড়ে ৩’শ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবেন তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
বয়ান করবেন তাবলিগ জামাতের আহলে শুরা মাওলানা মোজাম্মেলুল হক, ছৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, মাওলানা মোশারফ ও কাকরাইল মসজিদের ওস্তাদ মাওলানা মনির বিন ইউসুফসহ দেশবিদেশের আরো বেশ কয়েকজন বক্তা। মাগরীবের নামাজের পর প্রায় ৩ ঘন্টা বয়ান হবে। রাত সাড়ে ৯টার দিকে জামায়াতের সঙ্গে ইজতিমার মাঠে এশার নামাজ আদায় করবে মুসল্লিরা। এরপর খাবার ও পূর্নবিশ্রামের বিরতি। পরের দিন যথারীতি ফজরের পর থেকে বয়ান শুরু হবে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন ইজতেমা বাস্তবায়ন কমিটির জিম্মাদার আতাউল করিম। তিনি জানান, পাঁচ লাখ মুসল্লী সমাগমের লক্ষ্য নিয়ে ইজতেমার আয়োজন করা হয়েছে। পুরো ইজতেমা স্থলের ১৭ একর জায়গায় প্যান্ডেল করা হয়েছে। জেলার রামু, চকরিয়া, সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া টেকনাফ, উখিয়া এবং বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ও লামা উপজেলার মানুষ ইজতেমায় অংশ নেবেন। এছাড়াও কক্সবাজারে অবস্থানরত দেশের বিভিন্ন স্থানের তাবলিগ জামাতের লোকজন ও বাংলাদেশ অবস্থানরত ওমান, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার তাবলিগ জামাতের লোকজন অংশ নেবেন।
পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন বলেন, ইজতেমা ও মুসল্লীদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তার জেলা পুলিশের সাড়ে ৩’শ পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে। সেই সাথে গোয়েন্দা নজরদারী থাকবে সবসময়।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।