অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩
ও ব্যবহারিক কার্যপ্রণালী
(দ্বিতীয় সংস্করণ)
অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর সর্বশেষ সংশোধনী

মহামান্য উচ্চ আদালতের মার্চ, ২০১৪ সন পর্যন্ত নজিরসহ
মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী
জেলা ও দায়রা জজ
দ্বিতীয় সংস্করণের ভূমিকা:

আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ আদায়ে ১৯৯০ সনের অর্থ আদালত আইন কার্যকরী প্রমাণিত না হওয়ায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ আদায়ের নিমিত্ত ও প্রচলিত আইনের অধিকতর সংশোধন ও সংহতকরণকল্পে ২০০৩ সনে ৮নং আইনের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ প্রণয়ন করে। উক্ত নতুন আইনটি প্রকাশকালে আমি কক্সবাজার জেলায় যুগ্ম জেলা জজ (১ম আদালত) হিসেবে কর্মরত ছিলাম। আইনটির ধারা ৪ এর অধীনে কক্সবাজার জেলায় সরকার পৃথক কোন অর্থ ঋণ আদালত প্রতিষ্ঠা না করায় আমি যুগ্ম জেলা জজ হিসেবে অর্থ ঋণ আদালতে অতিরিক্ত দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলাম। কি কারণে আমি উক্ত আইনের বিষয়ে “অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ ও ব্যবহারিক কার্যপ্রণালী” শীর্ষক গ্রন্থটি রচনায় মনোনিবেশ করি তদবিষয়ে আমি গ্রন্থটির প্রথম প্রকাশ (৩০ জুন, ২০০৫ খ্রি.) এর ভূমিকায় বিস্তারিত উল্লেখ করি। উক্ত গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশনার পর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট (ংঃধশবযড়ষফবৎং) অনেকের নিকট হতে অভূতপূর্ব সাড়া পাই এবং গ্রন্থটির সব প্রিন্ট দ্রুত শেষ হয়ে যায়। ইতোমধ্যে আইনটির বেশ কয়েকটি ধারার সংশোধন, প্রতিস্থাপন, একটি ধারা ও কয়েকটি ধারার কিছু বিষয় বিলুপ্ত, প্রতিস্থাপিত ও সংযোজিত হয়। আমার অনেক সহকর্মী বিজ্ঞ বিচারক, বিজ্ঞ আইনজীবী, শুভাকাঙ্খী, পরিচিত ব্যাংকারগণ গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও পেশাগত ব্যস্তবার কারণে সম্ভব হয়নি। বিগত বৎসর খানেক যাবৎ তাঁদের অনুরোধ ও নিজের তাগিদবোধ থেকে গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণে বিগত পাঁচ/ছয় মাস যাবৎ মনোনিবেশ করি। গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণে নিয়োজিত হয়ে দেখি বেশ কিছু ধারা সংশোধন হওয়ায় গ্রন্থটির রচনায় কিছু পরিবর্তন আনা আবশ্যক এবং উক্ত বিষয়ে সচেতন বিশ্লেষণ জরুরি। গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণের পান্ডুলিপি প্রণয়নে শেষ পর্যায়ে থাকা অবস্থায় মার্চ, ২০১৪ খ্রি. পর্যন্ত প্রাপ্ত বিভিন্ন আইন জার্নালে অর্থ ঋণ আদালত, ২০০৩ এর বিভিন্ন ধারার অনুকূলে বিভিন্ন মামলায় মহামান্য উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত প্রকাশিত হওয়ায় গ্রন্থটিতে প্রয়োজনীয় নজিরসমূহ সন্নিবেশিত করার সুযোগ গ্রহণ করি। উল্লেখ্য, অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ প্রবর্তিত হওয়ার পর ও পরবর্তী কয়েক বৎসর মহামান্য উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত খুব বেশি ছিল না। বর্তমানে উক্ত আইন বিষয়ে মহামান্য উচ্চ আদালতের অনেক সিদ্ধান্ত বিভিন্ন মামলায় প্রকাশিত হয়। আমি গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণে অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ এর সর্বশেষ সংশোধন এবং মহামান্য উচ্চ আদালতের বিভিন্ন মামলার সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে সন্নিবেশ করার চেষ্টা করি। অত্র সংস্করণ গ্রন্থটির মান বিভিন্ন কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে মর্মে আমার প্রতীতি জন্মেছে।
বহু ব্যস্ততা সত্ত্বেও আইন কমিশনের মামনীয় সদস্য বিচারপতি জনাব এ.টি.এম. ফজলে কবীর মহোদয় গ্রন্থটি পাঠ করে দ্বিতীয় সংস্করণের প্রারম্ভিক ভূমিকা লিখে গ্রন্থটির গুরুত্ব অনেকাংশে বৃদ্ধি করে আমাকে কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট এর বিজ্ঞ রেজিস্ট্রার জনাব এ.কে.এম. শামসুল ইসলাম মহোদয় ও হাইকোর্ট বিভাগের স্পেশাল অফিসার (সিনিয়র জেলা জজ) জনাব এসএম কুদ্দুস জামান মহোদয় গ্রন্থটিতে শুভেচ্ছা বক্তব্য লিখে আমাকে অনুপ্রাণিত করেছেন। তাঁদের নিকটও আমি কৃতজ্ঞ। আমার সহকর্মী বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার-২ জনাব শরীফ উদ্দিন আহমেদ, ডেপুটি রেজিস্ট্রার জনাব মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, জনাব মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন ও জনাব মো. আজিজুল হক এবং সহকারী রেজিস্ট্রার জনাব শাহরিয়ার আরাফাত, জনাব, আমিনুল ইসলাম, জনাব আক্তারুজ্জামান ভূঁইয়া, জনাব গোলাম কিবরিয়া, জনাব, মো. আবু সাঈদ ও আপীল বিভাগের গবেষণা ও তথ্য কর্মকর্তা জনাব মো. শামীম সুফী গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশে উৎসাহিত করায় তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। গ্রন্থটির প্রুফ রিডিংয়ে জনাব মো. আমিনুল ইসলাম ও জনাব মো. আব্দুল কাদের সহায়তা করায় তাদের প্রতি রইল আমার অশেষ ধন্যবাদ।
আমার স্ত্রী ফারজানা বেগমের সার্বক্ষণিক অনুপ্রেরণায় ও গ্রন্থ প্রকাশের দায়িত্ব নেয়ায় এই গ্রন্থ প্রকাশ করা সম্ভব হয়েছে। আমার পুত্র মোহাম্মদ শাদমান শওকত চৌধুরী গ্রন্থটির প্রচ্ছদ তৈরিতে সহায়তা করায় গ্রন্থটি সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের প্রতি রইল আমার অনেক অনেক ভালবাসা ও ধন্যবাদ।
“অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩ ও ব্যবহারিক কার্যপ্রণালী” শীর্ষক গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রথম প্রকাশনার অনুরূপ তিন ভাগে বিভক্ত করে প্রথম ভাগে আইনটির ধারা, ধারার বিশ্লেষণ, প্রযোজ্যক্ষেত্রে উদাহরণ এবং আইনটির প্রায় প্রতিটি ধারার বিষয়ে বিভিন্ন মামলায় মহামান্য উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত যে সমস্ত আইন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে তা সর্বাত্মক চেষ্টা সংগ্রহ করে সন্নিবেশিত করেছি। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাগে অর্থ ঋণ মামলা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত করি। আমার বিশ্বাস গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সকল মহলের প্রয়োজন মিটাবে। সকল প্রচেষ্টা সত্ত্বেও গ্রন্থটির বর্ণিত বিষয়াদি ত্রুটিমুক্ত দাবি করার দুঃসাহস আমার নেই। গ্রন্থটির বিষয়ে সুধী পাঠক সমাজের সুচিন্তিত সমালোচনা গ্রন্থটি ভবিষ্যতে আরও উৎকর্ষ ও সমৃদ্ধ সংস্করণ প্রকাশে সহায়ক হবে। সিদ্দিক প্রিন্টার্সের অন্যতম স্বত্বাধিকারী জনাব মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার জনাব মো. আজিজুল ইসলাম (বাবু) আন্তরিকতা ও সতর্কতার সাথে গ্রন্থটি মুদ্রণ করায় আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। সর্বাত্মক সচেতন থাকা সত্ত্বেও গ্রন্থটির মুদ্রণ প্রমাদসহ কোন বিশ্লেষণজনিত ভুল থাকলে তজ্জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত। গ্রন্থটির আকর্ষণীয় ও টেকসই করার জন্য উন্নত কাগজ ব্যবহার করা হয়েছে। গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণ স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্তত একজন বিদগ্ধ পাঠকের প্রয়োজনে যদি সহায়ক হয় এর পান্ডুলিপি রচনায় আমার রাত জাগা পরিশ্রম স্বার্থক হবে বলে মনে করি। সর্বোপরি, গ্রন্থটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশের সুযোগ দেয়ায় মহান আল্লাহ তা’য়ালার কাছে আন্তরিকভাবে শোকরিয়া আদায় করছি।
সকলের সুন্দর জীবন কামনায়Ñ

তারিখ : এপ্রিল ১০,২০১৪ খ্রি.
ঢাকা।

নিবেদক-
রচয়িতা
মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরী
জেলা ও দায়রা জজ
মুন্সিগঞ্জ, ঢাকা।

চলবে….
কালেক্ট বাই : মো: আকতার হোছাইন কুতুবী সহ-সম্পাদক, জাতীয় দৈনিক আমার কাগজ ও দি গুড মর্নিং, ঢাকা।
প্রধান সম্পাদক, জাতীয় ম্যাগাজিন জনতার কণ্ঠ ও উপদেষ্টা সম্পাদক জাতির আলো, ঢাকা।
মোবাইল : ০১৮২২৮৫৮৪০০, ই-মেইল : ধশঃবৎশঁঃঁনরহবংি@মসধরষ.পড়স