সিবিএন:
ঘড়িতে সময় সন্ধ্যা ৬ টা ২৩ মিনিট। স্থান কক্সবাজার সদর হাসপাতাল। ২য় তলা, প্রসূতি বিভাগ। একটি মেয়ে দৌড়াঁতে দৌড়াঁতে ২য় তলার দরজায় এসে চিৎকার করে বলে উঠল ‘ওহ্ মা বইনঅল, উয়্যারে অইন ধরগ্যে তোয়ারা বেগ্গুন বের অইযগই’।
মেয়েটির কথা শোনার সাথে সাথে পুরো হাসপাতাল জুড়ে রোগীদের মাঝে ছুটাছুটি শুরু হয়ে যায়। সিজার রোগী এবং রোগীর স্বজনরা বাচ্চা নিয়ে দৌড়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য দিকবিদিক ছুটাছুটি শুরু করে। মুহুর্তের মধ্যে হাসপাতাল জুড়ে ব্যাপক হট্টগোল শুরু হয়ে যায়। ঘটনাকালিন আমি ২য় তলায় প্রসূতি বিভাগে আমার নিজ স্বজনের বিছানার পাশেই উপস্থিত ছিলাম। মেয়েটির পরনে ছিল থামি এবং কথায় মনে হল মেয়েটি রোহিঙ্গা। মেয়েটির চিৎকার করে বলাতে আমি তৎক্ষনাৎ বুঝতে পেরেছিলাম যে খুব খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে। যতটা দ্রুত সম্ভব আমি মেয়েটিকে বকাবকি করে হাসপাতালের ২য় তলা থেকে বের করে দিই। ততক্ষনে প্রাণ ভয়ে সিজার রোগীরা এবং স্বজনরা বাচ্চা নিয়ে সবাই একযোগে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য ছুটছিল। আমি চিৎকার করে সবাইকে বুঝাচ্ছিলাম যে কোন ধরনের আগুন ধরেনি, হাসপাতালের বাগানে মেশিন দিয়ে মশার ঔষুধ দেয়া হচ্ছে। আর আগুন ধরলেও আমাদের এখানে কিছুই হবে না। অনেকে আমাকে ঠেলে বের হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল, তারপরও যেতে দিইনি। জানতাম কয়েকজন চলে গেলে বাকিরাও যেতে চাইবে এবং সবাই একসাথে বের হতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে বড় রকমের কোন দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। যেমনটি বিভিন্ন গার্মেন্টসে আগুন ধরার ঘটনায় ঘটে থাকে।মূলত হাসপাতালে উঠার পথে মেশিন দিয়ে মশার ঔষুধ দেওয়ার বিষয়টা আমার চোখে পড়েছিল। অনেক বকাঝকা ও চিল্লাচিল্লির পর সবাইকে বুঝাতে সক্ষম হলাম যে হাসপাতালে আগুন ধরার বিষয়টি শুধুমাত্র গুজব। এই ফাঁকে এক বৃদ্ধা আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যায় এক রোগীর কাছে, বলল “অফুত সেলাইনর লাইউন্যা এক্কানা ছিরি দেচাই”। অর্থাৎ পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পরও সে হাসপাতাল থেকে আগুনের ভয়ে পালাতে চাচ্ছে।
এদিকে পরিস্থিতি শান্ত হতে না হতে খবর আসলো একই ঘটনা ৩য়, ৪র্থ ও ৫ তলাতেও ঘটেছে একই কায়দায়। ৩য় তলায় এক অপারেশন রোগী ছুটাছুটি করে পালাতে গিয়ে রক্তে সয়লাব হয়েছে ফ্লোরের প্রবেশ অংশ। এ ফাঁকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও ছুটে আসে। তাদেরকে বিষয়টি খুলে বললাম, পরে ফায়ার কর্মীরা হাসপাতালের বিভিন্ন ফ্লোরে গিয়ে রোগীদের এবং স্বজনদের বুঝানোর চেষ্টা করে হাসপাতালে আগুন নয়, বাগানে মশার ঔষুধ দেওয়া হচ্ছিল। মশার ঔষুধ থেকেই ধোঁয়ার কুন্ডলি দেখা গিয়েছে।
নোট : সত্যতা যাছাই না করে গুজবে কান দিতে গিয়ে বড় কোন দুর্ঘটনা ঘটতে যাচ্ছিল।
-পিন্টু দত্তের ফেসবুক থেকে নেয়া।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।