সিবিএন ডেস্ক:
মিয়ানমারে নিজেদের দুটি বড় পাইপলাইন প্রকল্পের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামরিক সরকারের বিরোধীরা বলছেন, চীনের পাইপলাইন বিস্ফোরিত হোক বা না হোক, এটি মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। মঙ্গলবার দেশটির সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর এক প্রতিবেদনে এই বিষয়টি জানা গেছে।

ফাঁস হওয়া একটি নথি অনুসারে, মিয়ানমারে যখন সামরিক সরকার অভ্যুত্থানবিরোধীদের দমন-পীড়নে গুলি ও আটক করছে তখন চীনের সঙ্গে দেশটির স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে চীনের পক্ষ থেকে সামরিক শাসকদের কাছে দেশজুড়ে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের পাইপলাইনের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বাস চাওয়া হয়েছে। অভ্যুত্থানে নিয়ে অবস্থানের কারণে মিয়ানমারে চীনবিরোধী মনোভাব বাড়ছে।

মিয়ানমারে চীনের ৮০০ কিলোমিটার পাইপলাইন রয়েছে। সমান্তরাল দুটি পাইপলাইন বঙ্গোপসাগর থেকে রাখাইন হয়ে মাগওয়ে ও মান্দালয় ও শান রাজ্য হয়ে চীনে প্রবেশ করেছে। বেইজিংয়ের প্রত্যাশা, মিয়ানমার এগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কার্যকর উদ্যোগ নেবে।

চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে মিয়ানমারে চীন নিজেদের স্বার্থরক্ষার এমন উদ্যোগে বিক্ষোভকারীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দেশটির সামরিক অভ্যুত্থান জানাতে চীনের ব্যর্থতার কারণে মানুষের মনে থাকা ক্ষোভ আরও বেড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চীনা পণ্য বয়কটের একটি আহ্বান অর্ধলক্ষাধিক মানুষ শেয়ার করেছে।

দশ লাখের বেশি মানুষ ফেসবুক ও টুইটারে বার্মিজ, চীনা ও ইংরেজি ভাষায় শেয়ার করা পোস্টে বলছেন, চীন আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমারের মানুষের মৃত্যু ও আহত হওয়াকে অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে।

ওই পোস্টে বলা হয়েছে, যা ঘটছে সেটিকে যদি এখনও মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মনে করে চীন তাহলে দেশের ভেতরে দিয়ে যাওয়া পাইপলাইনের বিস্ফোরিত হওয়া আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। দেখা যাক এখন চীন কী বলে।

তারা আরও বলছেন, মিয়ানমারের মানুষের হারানোর কিছু নেই। জাতিসংঘের বৈঠকে চীন যদি ভেটো দেয় তাহলে মিয়ানমারের মানুষও চীনের সঙ্গে একই আচরণ করবে।

বেইজিংয়ের প্রতি সতর্কতা জানিয়ে তারা বলছেন, আপনারা যদি নিজেদের পাইপলাইনের সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত হন তাহলে জান্তাকে সমর্থন দেবেন না। আমরা মিয়ানমারের জনগণ ঐক্যবদ্ধ।

অনেকেই আবার হুমকি দিয়েছেন, যদি চীন জান্তাকে সমর্থন অব্যাহত রাখে তাহলে শিগগিরই মিয়ানমারে পাইপলাইনসহ চীনা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হবে।