সারা দেশে বিডিসিএসও প্রসেসের এবং কক্সবাজারে সিসিএনএফের একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন

বাংলাদেশে কর্মরত আন্তর্জাতিক সংস্থায় স্থানীয় প্রকল্পে বাংলা ভাষা ব্যবহার চালুর দাবি

প্রকাশ: ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০৬:৫৭

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:
আত্মমর্যাদাশীল নাগরিক সমাজ গঠনের লক্ষ্য গড়ে ওঠা নাগরিক সংগঠনের নেটওয়ার্ক ‘বিডিসিএসও প্রসেস’ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের অংশ হিসেবে দেশব্যাপী কয়েকটি অনলাইন সভার আয়োজন করে। কোভিড-১৯ মহামারীর জন্য শহীদ মিনারে জনসমাগম সীমিত করার নির্দেশনা থাকায় বিডিসিএসও প্রসেস ৪টি বিভাগে, সিসিএনএফ কক্সবাজারে এবং কোস্ট ফাউন্ডেশন তার সকল কর্মী নিয়ে পৃথক ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
মাতৃভাষা রক্ষায় ১৯৫২ সালে বাংলাদেশের জনগণ যে আত্মাহুতি দিয়েছে, তার মূলে ছিল দেশের মানুষের আত্মমর্যাদার উপলব্ধি ও পরাধীনতার শেকল ভাঙার শপথ। পাশাপাশি ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো যখন এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়, তখন সেখানে যুক্ত হয় আন্তর্জাতিকতাবাদ ও সর্বজনীন মানবাধিকার। সেই চেতনা থেকেই এই দিনে বিডিসিএসও প্রসেস, সিসিএনএফ এবং কোস্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশে একটি আত্মমর্যাদাশীল নাগরিক সমাজ গড়ে তোলার অঙ্গিকার ব্যক্ত করে এই দিবসটি পালন করে।
গতকাল ২১ ফেব্রুয়ারি সারাদিন ও ২২ ফেব্রুয়ারি সকালে খুলনা, রংপুর, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিটি আয়োজিত চারটি পৃথক অনলাইন আলোচনা সভায় অংশ নেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের সকল জেলা সদস্যবৃন্দ। এছাড়াও কক্সবাজারে বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় সিসিএনএফ (কক্সবাজার সিএসও এনজিও ফোরাম) ও বিডিসিএসও প্রসেস যৌথভাবে একটি অনলাইন আলোচনা সভা আয়োজন করে। কোস্ট ট্রাস্টের সকল কর্মী নিয়ে একটি পৃথক ভার্চুয়াল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
কক্সবাজারের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সিসিএনএফের কো-চেয়ার জনাব আবু মোরশেদ চৌধুরী। এ সভায় বক্তারা বলেন, কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের নেতৃত্বেই মূলত মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চলছে। কিন্তু ইংরেজি ভাষায় সকল সভা ও যোগাযোগ সম্পন্ন হবার কারণে স্থানীয়রা এতে সামান্যই অংশগ্রহন করতে পারছেন। স্থানীয় প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিশেষ করে স্থানীয় সকল স্টেকহোল্ডারের অংশগ্রহন নিশ্চিত করতে তাদের উচিত ছিল সকল কার্যক্রম বাংলা ভাষায় পরিচালনা করা।
বিভাগীয় পর্যায়ের সভাগুলোতে কেন্দ্রীয় সচিবালয়ের পক্ষ থেকে আলোচনায় অংশগ্রহন করেন বিডিসিএসও’র প্রধান সঞ্চালক রেজাউল করিম চৌধুরী ও কোস্ট ট্রাস্টের পরিচালক মোস্তফা কামাল আকন্দ। খুলনা বিভাগের সভা সঞ্চালন করেন প্রত্যাশা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থার বেলাল হোসাইন, রংপুরের সভা সঞ্চালনা করেন আফাডের নির্বাহী পরিচালক সাইদা ইয়াসমিন, ময়মনসিংহের সভা পরিচালনা করেন তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থার খন্দকার ফারুক আহমেদ, বরিশালের সভার সঞ্চালনা করেন শুভঙ্কর চক্রবর্তী, সভাপতিত্ব করেন জনাব আনোয়ার জাহিদ। এছাড়া কোস্ট ট্রাস্টে অনলাইন সভা সঞ্চালনা করেন কোস্টের উপ-নির্বাহী পরিচালক সনৎ কুমার ভৌমিক।
“একুশের চেতনা আমাদের সাহসী ও আত্মমর্যাদাশীল করে” এই শিরেনামে একটি লিফলেট তৈরি করে তা আগেই সকলের কাছে পাঠানো হয়, যাতে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হয়। লিফলেটে ব্যাখ্যা করা হয়, কিভাবে একুশে ফেব্রুয়ারির চেতনা এবং বাংলাদেশে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গড়ে ওঠা নাগরিক সংগঠনসমূহের লক্ষ্য একমুখী। লিফলেটে বলা হয়, বিদেশি সহায়তার পাবার আশায় কোনো নাগরিক সংগঠন তাদের আত্মমর্যাদা বিসর্জন দেবে না। কারণ, তারা দেশের জন্য একটি মহান কাজের সঙ্গে জড়িত। বরং স্থানীয় পর্যায়ের সম্পদ কাজে লাগিয়ে স্থায়িত্বশীল নাগরিক সমাজ উন্নয়নের দিকে তারা মনোযোগী হবে।
একুশে ফেব্রুয়ারির মহান ভাষা শহীদ দিবস উৎযাপনের অংশ হিসেবে কোভিড-১৯ সতর্কতার নির্দেশনা মেনে কোস্ট ট্রাস্ট, সিসিএনএফ, বিডিসিএসও প্রসেস এবং ইক্যুইটিবিডি পৃথকভাবে সকল বিভাগীয় শহরে, ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে, এবং কোস্ট ট্রাস্টের সকল আঞ্চলিক ও শাখা কার্যালয়ের পক্ষ থেকে স্থানীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়।
বিডিসিএসও প্রসেসের প্রধান সঞ্চালক রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এখন থেকে সকল জাতীয় দিবস তারা দেশব্যাপী পালন করবেন এবং উক্ত দিবসের মূল চেতনার সঙ্গে নিজেদের কর্মসূচিকে সমন্বয় করে আলোচনা করা হবে যাতে তরুন নাগরিকেরা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়, দেশের স্থানীয় পর্যায়ের নাগরিক সংগঠনসমূহ যেন আরো আত্মমর্যাদাশীল হয়ে উঠে জনগনকে সেবা প্রদান করতে পারে।
কক্সবাজারে সিসিএনএফ আয়োজিত সভায় বক্তব্য রাখেন মুক্তি’র বিমল চন্দ্র দে, হেলপের নির্বাহী পরিচালক আবুল কাশেম, একলাবের নির্বাহী পরিচালক তরিকুল ইসলাম, হোপ ফাউন্ডেশনের আবু রাকীব, কোস্ট ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক ও আঞ্চলিক টিম লিডার জাহাঙ্গীর আলম।