স্পোর্টস ডেস্ক:
পাকিস্তানের বিপক্ষে বাজে বোলিংয়ের কারণে সমর্থকদের রোষানলে পড়েছেন আফগানিস্তান জাতীয় দলের অধিনায়ক গুলবাদিন নাইব। পাকিস্তানের বিপক্ষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে গতকাল (শুক্রবার) ৩ উইকেটের ব্যবধানে হারে আফগানিস্তান। যে হারে দলকে প্রায় একাই ডুবিয়েছেন নাইব। ব্যাট হাতে তেমন কিছু না করার পর, বল হাতে তার খরুচে বোলিংয়েই হার নিশ্চিত হয় আফগানিস্তানের।

টুর্নামেন্ট থেকে আগেই বিদায় নেয়ায় পাকিস্তানের বিপক্ষে সান্ত্বনার জয়ে খোঁজে মাঠে নামে আফগানিস্তান। হেডিংলির লিডসে টসে জিতে আগে ব্যাটিং নিয়ে ২২৭ রানের সংগ্রহ গড়ে তারা। জবাব দিতে নেমে আফগান বোলারদের দারুণ বোলিংয়ে হারের পথেই ছিল পাকিস্তান। তবে ৪৬তম ওভারে বল হাতে তুলে নিয়েই যেন সমস্ত হিসেব-নিকেশ উল্টে দেন নাইব। ওই ওভারে আফগান অধিনায়ক দেন ১৮টি মূল্যবান রান। যে কারণে ম্যাচ ফসকে যায় আফগানিস্তানের হাত থেকে।

বাজে বোলিং ছাড়াও বেশ সমালোচিত হচ্ছে নাইবের অধিনায়কত্ব। তার বাজে ক্যাপ্টেনসিও যে দল হারের অন্যতম কারণ তা বলছেন অনেক ক্রিকেট বিশ্লেষক। মূলত, এই ম্যাচ পাকিস্তান হেরে গেলেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়তো। সরফরাজদের এই জয় তাই দাগ লাগচ্ছে নাইবের গায়ে। অনেকে আবার খুঁজে পাচ্ছেন ম্যাচ গড়াপেটার গন্ধ। কেউ কেউ দাবি তুলছেন আইসিসি যেন এই ম্যাচে নাইবের গতিবিধি খতিয়ে দেখে।

গতকাল মাত্র ২২৮ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিলেও ১৫৬ রানের মধ্যেই পাকিস্তানের ৬ উইকেট তুলে নেয় আফগান বোলাররা। মুজিব উর রহমান, মোহাম্মদ নবি, শেনওয়ারিরা করেন দুর্দান্ত বোলিং। এমন ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় যারপরনাই হতাশ আফগান সমর্থকরা। হতাশ আপামত ক্রিকেট পাগল মানুষও। ম্যাচ শেষে তাই খলনায়ক নাইবকে নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। নেটিজেনরা তাকে ধুয়ে দেন ফেসবুক-টুইটারসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে।

টুইটারে দীপক শর্মা নামে এক ভারতীয় ক্রিকেট সমর্থক লেখেন, ক্রিকেট এর আগে গুলবাদিন নাইবের মতো গর্দভ অধিনায়ক আর দেখেনি। জয়ের পথে থেকেও সে পাকিস্তানের প্লেটে খাবার তুলে দিয়েছে। আরেক টুইটার ব্যবহারকারী লেখেন, ‘নাইব কি ম্যাচ ফিক্সিং করেছে?’

এখানেই শেষ নয় এরকম আরও কয়েক হাজার টুইট আর পোস্টে সয়লাব হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়াগুলো। ম্যাচে নাইবের আচরণ, সিদ্ধান্ত ও কর্মকাণ্ডগুলোও সত্যিই ছিল বেশ বিতর্কিত, সন্দেহজনক। বিশেষ করে শেষ ওভারে সহজ এক রানআউটের সুযোগ হাতছাড়া করে তো সমালোচনার আগুনে আরও ঘি ঢেলে দেন তিনি নিজেই।

যদিও ম্যাচ শেষে নিজের সাফাই গেয়েছেন নাইব। এই অলরাউন্ডার আফগান সমর্থকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ্বকাপের দুই মাস আগে বিতর্কিতভাবে আফগান বোর্ডের নির্বাচিত এই অধিনায়ক বলেন, আমরা বুঝতে পারছি, তারা সবাইকে আক্রমণ করে খেলেনি। প্রত্যেক দলেরই বিশেষ পরিকল্পনা থাকে। আমি ৪৬তম ওভারকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধরে নিয়ে বল করেছিলাম। কিন্তু ১৮ রান দিয়ে দিয়েছি। এটা মোটেও ভালো হয়নি।’

তবে নাইব যতই নিজের পক্ষে সাফাই গাক না কেন এতো সহজেই চিরে ভিজছে না। কেননা তার বিতর্কিত পারফরম্যান্সই বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে যোগ করেছে নতুন মাত্রা। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের এবারের আসরকেও করে তুলেছে আরও বেশি আলোচিত-সমালোচিত।