প্রিয় অভিভাবক, 

পত্রের শুরুতে আমার সালাম ও পবিত্র রমজানুল মোবারক মাসের শুভেচ্ছা নিবেন।ভাল এবং সুখে আছেন এই আশা করাটা আজ নিশ্চয় বোকামি।কারণ গণতন্ত্রের মা আপোষহীন নেত্রী বেগম জিয়া মিথ্যা বানোয়াট মামলায় আজ আওয়ামী সরকারের কারাগারে দুঃখ কষ্টে দিন কাটাচ্ছে।আপনার আমার মত দেশের গণতন্ত্রকামী লক্ষ কোটি জনতা আজ শান্তিতে নেই। তবে আশা করছি এ সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। আর সেই সময়কে যথাযথ মূল্যায়নে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই।আন্দোলন করতে হলে তৃনমূলকে সু-সংঘটিত করতে হবে।যেহেতু তৃণমূল একটা দলের প্রাণ ভোমরা সেহেতু আন্দোলন ত্বরান্বিত করতে বা আন্দোলনের সফলতা আনতে তৃণমূল নেতাকর্মীর সাথে সরাসরি যোগাযোগ এবং তাদের মূল্যায়ন অপরিহার্য।তৃণমূলের মূল্যায়ন ও আন্দোলনের সফলতা এ যেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। কক্সবাজার জেলার মাটি ও মানুষের প্রিয় নেতা| আমি বিএনপির একজন ক্ষুদ্র সমর্থক।শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিক এবং আপনার নগণ্য একজন কর্মী। বেগম জিয়া, বিএনপি এবং আপনাকে প্রাণের চেয়ে ভালবাসি। আপনার চিন্তাধারা অনেক বিস্তৃত। সৃজনশীল চিন্তাধারা, বন্ধু সুলভ আচরণ, সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন এবং বিপদে আপদে সবার আগে নিঃস্বার্থ ভাবে গরিব দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়ানো আপনাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে। কক্সবাজার জেলায় আপনার তুলনা একমাত্র আপনি নিজে’ই।

সম্মানিত অভিভাবক,

তারপরও আমি আজ হাতে কলম নিয়েছি দু’কলম লিখব বলে। সাহস করে লিখছি ভুল হলে আপনার মহানুভবতায় ক্ষমা পাব এই আশা রেখে।আমি যেহেতু বৃহত্তর ঈদগাঁওর সন্তান এবং কলেজ জীবন শেষে ঈদগাঁওর বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলাম তাই এই নিয়ে আমার দুকলম অর্থহীন লেখা। লিখছি, আপনার সদর আসনের গুরুত্বপূর্ণ এবং জনবহুল এলাকা বৃহত্তর ঈদগাঁওর রাজনীতি নিয়ে। একটা দুঃখের খবর দিয়ে শুরু করতে হচ্ছে। ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির মধ্যে ঐক্য আজ অতীতের যেই কোন সময়ের চেয়ে বাজে অবস্থায় আছে।অবিশ্বাস, অবমূল্যায়ন এবং পদবীধারী কিছু নেতা নিজেকে সর্বেসর্বা মনে করে গৃহীত একক সিদ্ধান্ত অন্যদের উপর চেপে দেওয়ায় আজ এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

গণমানুষের প্রিয় নেতা,

আপনাকে বলতে চাই, ঈদগাঁওর বর্তমান পরিস্থিতি আগ্নেয়গিরির রূপ ধারণ করেছে,যা বিস্ফোরণের মুখে রয়েছে।অবশ্য আপনি এই সম্পর্কে কম বেশি অবগত আছেন। এই অবস্থা চলতে থাকলে যেই কোন দিন বিস্ফোরণ ঘটবে এবং যার ফলে বিএনপি পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতির আশংকা করছি। বর্তমান কমিটির দুই শীর্ষ নেতা সরাসরি একই দলের অন্য নেতাদের অনুগত্য করে।একজন সংস্কারপন্থি গ্রুপ এবং অন্যজন নির্বাসিত এক নেতার শিষ্য। এরা আপনাকে সামনে রেখে ভিতরে ভিতরে অন্যদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। এদের ব্যাপারে এখনি সতর্ক না হলে পরে সদর আসনের গুরুত্বপূর্ণ জনপদ বৃহত্তর ঈদগাঁওর বিএনপি পাগল জনতাকে জবাবদিহি করতে হতে পারে। কারণ এই দু’এক নেতার নীতি ভঙ্গ এবং বিনিময়ে আদর্শ পরিবর্তনের কারণে সামনের আন্দোলন ও নির্বাচন এই দুই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তৃণমূল সঠিক দিকনির্দেশনা পাবে না। তাই সামনের আন্দোলন ও নির্বাচন এই দুইটি ইস্যু মাথায় রেখে সাংগঠনিক উপজেলাকে ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। আর নেতা নির্বাচনে সদ্য অনুষ্ঠিত রামু উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলের মত করা যেতে পারে। কাউন্সিলরবৃন্দ মতামত প্রকাশের সুযোগ পেলে তৃণমূলের মনোনীত ব্যক্তি’ই উঠে আসবে এবং তাতে সংগঠনের লাভ বেশি হয়ে থাকে।কারণ তারা তৃণমূলের প্রতিনিধিত্ব করবে।আর তৃণমূলের পছন্দের নেতা’ই পারে দলকে একটি সুশৃঙ্খল এবং ঐক্যবদ্ধ আদর্শিক দল হিসাবে গড়ে তুলতে।কাউন্সিল হলে ভেঙ্গে যাবে সিন্ডিকেট। উঠে আসবে তৃণমূলের নেতা।

আমার প্রিয় নেতা, ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রকাশ্যে যারা আপনার বিরোধিতা করে সতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়ে দলের সাথে বেইমানি করেছিল ঠিক এরাই অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনের দলের মনোনীত প্রার্থীর ব্যাচ পরে অন্যদলের প্রার্থীর পক্ষে ভোট চেয়েছেন।এই সব নেতাদের চিহ্নিত করুন।প্রয়োজনে আপনার মনোনীত পরাজিত প্রার্থীদের কাছ থেকে তথ্য নিন।আপনার হাতে কলমে রাজনীতি শেখানো কর্মী বা আপনার হাত ধরে পর্যায়ক্রমে ছাত্রদল, যুবদল করে বিএনপিতে আসা তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থীকে নেতা বানান, কথা দিচ্ছি বৃহত্তর ঈদগাঁওর জনগন আপনার সাথে থাকবে।প্রিয় শ্রদ্ধাভাজন, সাংগঠনিক উপজেলা ছাত্রদল নিয়ে যা হয়েছিল তা আর নতুন করে বলছিনা।বিভিন্ন সময়ে ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়নের ফলে আগ্নেয়গিরির রূপ ধারণ করেছিল তাদের মনোভাব, কমিটির পরে তা বিস্ফোরণের ফলে দাবানলটি একসময় জ্বালিয়ে দিচ্ছিল ঈদগাঁওর রাজনীতি।এই উত্তাপ বৃহদাকার রুপ নেওয়ার আগেই দ্রুত হস্তক্ষেপ ও উপযুক্ত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আপনি দল কে বাঁচিয়েছিলেন অপূরণীয় ক্ষতির আশংকা থেকে। ঐ সময়ে যারা আপনার সাথে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেছিল তাদের জামায়াত শিবিরের অপবাদ দিয়ে দুরে ঠেলে দিয়ে ঐ সব নেতারা বিষের দানা রোপন করেছে। এখন সাবেক কমিটির মত আর সক্রিয় নেই ছাত্রদল।যার সুযোগ নিচ্ছে যুবলীগ-ছাত্রলীগ। বেগম জিয়ার রায়ের দিন মোটা মোটা লাঠি হাতে বাসষ্ঠেশনে তাদের অবস্থান বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের ফসল বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রিয় গার্ডিয়ান,

আমার অভিযোগের ভিত্তিতে আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে:তাহলে কেন আপনি ঈদগাঁওর প্রোগ্রামে গেলে অনুষ্ঠান স্থান কানাই কানাই পূর্ণ হয়ে যায়? কেনই বা সাধারণ কর্মীগণ নিজের মূল্যবান সময় নষ্ট করে দলের কল্যাণে কাজ করে?সব প্রশ্নের উত্তর একটা’ই, ঈদগাঁওর প্রত্যেক বিএনপি কর্মী নিজেকে জননেতা লুৎফুর রহমান কাজল মনে করে।দলকে মন-প্রাণ দিয়ে ভালবাসে এই জন্য এরা দলের প্রোগ্রাম সফল করতে সর্বাত্মক চেষ্টা করে।

মাটি ও মানুষের প্রিয় নেতা, আমি এখন দেশের বাইরে অবস্থান করছি।তারপরেও নিজেকে কখনো আদর্শ থেকে বিচ্যুত করি নাই। আমার বিশ্বাস যতদূরেই থাকি আপনিই আমার অভিভাবক, আপনিই আমার নেতা, আপনিই আমার শেষ আশ্রয়স্থল। আপনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মেধা ও রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দ্বারা আপনি নিশ্চয়ই সব জানেন এবং বোঝেন। তাই দলের ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে অভিভাবকের কাছে অভিযোগ আমি করতেই পারি। আমি একজন জিয়া রণাঙ্গনের আদর্শিক সৈনিক এবং আপনার আবেগের সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন ক্ষুদ্র কর্মী হিসেবে বলতে চাই, ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির যেই ক’জন নেতা দলের ক্ষতি করছে,যাদের কারণে জনসমর্থন বা তরুণ সমাজ দলের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারছে না তাদের সাথে আমার ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক কোনো বিরোধ ও দ্বন্দ্ব নেই, কখনো ছিল না। বিবেকের তাড়নায় সংগঠনকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচাতে কতিপয় নেতা মহোদয় সম্পর্কে সংগঠনবিরোধী অপকর্ম আপনাকে জানানো পবিত্র দায়িত্ব বলে মনে করছি। আমার বিশ্বাস, আপনি একটু খোঁজ নিলেই সব জানবেন।

সবশেষে আবারও বলছি, কতিপয় স্বার্থান্বেষী পদবীধারী ব্যক্তিদের এই হিংস্র দানবের ছোবল থেকে ঈদগাঁওর যুব ও তরুণ সমাজকে বাঁচান, আপনি ছাড়া আমাদের এই আকুতি ও কান্না আর কেই-বা বুঝবে? তাই অনতিবিলম্বে সদর আসনে আপনার ভোট ব্যাংক খ্যাত বৃহত্তর ঈদগাঁও নিয়ে এখনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিন।

ইতি

মাহমুদুল করিম

যুব উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক গোল এমারা ও রিয়াদেকার কমিটি পবিত্র মক্কা।

সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি জালালাবাদ ইউনিয়ন ছাত্রদল।