ডেস্ক নিউজ:
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ বলেছেন, ‘বর্তমান মন্ত্রিসভায় জাতীয় পার্টির যে তিন মন্ত্রী আছেন, আমিও মন্ত্রীর পদমর্যাদায় আছি, আমরা কিছুদিনের মধ্যেই মন্ত্রিসভা থেকে একযোগে পদত্যাগ করবো। এ ব্যাপারে আমরা ইতোমধ্যেই আলোচনা করেছি। পদত্যাগ করার বিষয়টি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।’ শুক্রবার (২ মার্চ) সকালে রংপুর সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির সঙ্গে জাতীয় পার্টির জোট করার কোনও সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।

এরশাদ বলেন, ‘প্রথমত আমাদের কাউকেই মন্ত্রিসভায় নেওয়া ঠিক হয়নি। বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ সংসদে এ বিষয়ে সঠিক কথাটি বলেছেন। তিনি বলেছেন, মন্ত্রিসভায় আমাদের দলের লোক থাকায় দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। অনেক সমালোচিত হয়েছি আমরা। তবে সরকারি দলের সঙ্গে মন্ত্রিসভায় যোগদান করার বিষয়টি ছিল রাজনৈতিক কৌশল। জার্মানিসহ অনেক দেশে এ নজির আছে। তবে আমরা আর মন্ত্রিসভায় থাকতে চাই না।’

বিএনপির সঙ্গে জাতীয় পার্টির জোট করার কোনই সম্ভাবনা নেই জানিয়ে এরশাদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচনে বিএনপি আসবে কিনা সে ব্যাপারে আমার যথেষ্ট সন্দেহ আছে। তারপরও সরকার চেষ্টা করছে। আমরাও মনে করি তাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত। তবে বিএনপি এখন নেতৃত্বহীন হয়ে পড়েছে। তাদের দলে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কোনও নেতা নেই। কে নেতৃত্ব দেবে কার নেতৃত্বে নির্বাচন হবে এসব সমস্যা আছে।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এরশাদ বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে না গেলে তো নির্বাচন বন্ধ হবে না। তাদের না যাওয়ায় কিছুই যায় আসে না। জাতীয় পার্টি আর আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে যায়, বিএনপি না গেলেও সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে।’

খালেদা জিয়ার জামিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি ৬ বছর ২ মাস কারাগারে ছিলাম। আমার বিরুদ্ধে সব মামলাই ছিল জামিনযোগ্য। তার পরেও আমি জামিন পাইনি। হাইকোর্ট আদেশ দেওয়ার পরেও আমাকে সংসদে আসতে দেওয়া হয়নি। পৃথিবীর কোনও দেশে কোনও নেতাই আমার মতো নির্যাতন ভোগ করেনি। আমার প্রতি যে অবিচার করা হয়েছে তার কোনও নজির নেই।’

এরশাদ বলেন, ‘আমরা আগামী ২৪ মার্চ ঢাকায় মহাসমাবেশের তারিখ ঘোষণা করেছি। আশা করছি সেখানে পাঁচ লাখ মানুষের সমাবেশ হবে। আমরা দেখাতে চাই জাতীয় পার্টি কতটা শক্তি সঞ্চয় করেছে। আগামীতে আমরা জনগণের রায় নিয়ে এককভাবে ক্ষমতায় যেতে চাই। আমাদের মূল লক্ষ্য হবে মহাসমাবেশের মাধ্যমে দেশের মানুষকে দেখানো আমরা নির্বাচন করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। বাকিটা সমাবেশেই বলবো।’

এর আগে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করার পর সরাসরি রংপুর সার্কিট হাউজে এসে পৌঁছালে দলের নেতাকর্মীরা তাকে স্বাগত জানান। এ সময় দলের মহাসবিচ রুহুল আমিন হাওলাদার, কোচেয়ারম্যান জিএম কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহাম্মেদ বাবলু, রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাসহ দলের নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন।-বাংলাট্রিবিউন: