ডেস্ক নিউজ:
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শাস্তি হলে জেল কোড অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বুধবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

খালেদা জিয়ার সাজা হলে তাকে কোথায় রাখা হবে, সে বিষয়ে কোনো প্রস্তুতি আছে কিনা- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তাই জেল কোড অনুযায়ী যেভাবে তাকে রাখার নিয়ম রয়েছে- ঠিক সেভাবেই রাখা হবে। তার কী হবে তা কোর্টই জানে, আমরা বলতে পারি না। তাকে রাখতে কোর্ট যেভাবে আদেশ দেবে আমরা সেভাবেই রাখব।

প্রস্তুতির বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ও অধিদফতর সব সময়ই যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকে।

কোন জেলে খালেদা জিয়াকে রাখা হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমি স্পষ্ট করে বলেছি কারা অধিদফতর কোথায় কীভাবে রাখবেন এটা তাদের ব্যাপার। তারা সব সময়ই প্রস্তুত থাকে, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য।

বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার রায় ঘিরে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, কেউ যদি নাশকতা করতে চায়, ভাঙচুর করতে চায়, ২০১৩-১৪ সালের মতো জ্বালাও পোড়াও করতে চায়, একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে চায়, মানুষকে জিম্মি করতে চায়, মানুষের রাস্তাঘাট বন্ধ করতে চায়, আমরা অবশ্যই সেটা প্রতিহত করব।

তিনি আরও বলেন, জনগণের জানমাল রক্ষার দায়িত্ব নিরাপত্তা বাহিনীর, সে কাজটি নিরাপত্তা বাহিনী দক্ষতার সঙ্গে করতে পারবে। আমরা দেশবাসীকে জানিয়ে দিতে চাই- এ ধরনের কোনো কিছুই হবে না। কারণ জনগণ সেগুলোর আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় না। জ্বালাও-পোড়াও তারা বিগত দিনেও প্রত্যাখ্যান করেছে সামনের দিনেও করবে।

রায়কে ঘিরে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ এবং ধরপাকড় হচ্ছে- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ফেসবুকে যে ধরনের তথ্য আদান-প্রদান হচ্ছে, সেগুলো নিয়ে ডিএমপি কমিশনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- কোনো ধরনের সমাবেশ, লাঠি কিংবা বিস্ফোরক নিয়ে কেউ ঢাকায় না ঢুকতে পারে ও ঢকায় অবস্থান করতে না পারে। এটাই হলো কথা।

‘নিরাপত্তা বাহিনী অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। তারা সবকিছু সুন্দরভাবে করতে পারছে। তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে। তার মানে এ নয় যে কিছু হবে। তবে যদি কিছু হয় সেজন্যই প্রস্তুতি।’

ধরপাকড়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ৩০ জানুয়ারি ঢাকায় কী ঘটনা ঘটেছিল। সেদিন খালেদা জিয়ার গাড়ি ধীরে ধীরে যাচ্ছিল, সম্মুখ ভাগ থেকে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রিজন ভ্যানের ওপর আক্রমণ হলো, নিরাপত্তা বহিনীর ওপর আক্রমণ হলো। এ দৃশ্য রাজশাহীতে পিটিয়ে পুলিশ হত্যার দৃশ্যের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে।

‘পুলিশ অত্যন্ত দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। এ বিষয়ে (পুলিশের ওপর হামলা) আমাদের ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। আমার কাছেও রয়েছে’ বলেই পুলিশের ওপর হামলার কিছু ছবি সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

পুলিশের ওপর হামলাকে পূর্বপরিকল্পিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলো (ফটো) দেখে আমরা (জড়িতদের) শনাক্ত করছি। যে যেখানে অবস্থান নিচ্ছে আমরা ধরে আনছি। এখানে (হামলায় অংশ নেয়া) ছিল এমন বেশ কিছু লোককে আমরা ধরে এনেছি। চারজনের পরিচয় পেয়েছি।’

চারজনের পরিচয় তুলে ধরে আসাদুজ্জামান খান বলেন, একজন হলেন মামুন খান, পিতা মাসুম বিল্লাহ, ঝালকাঠির নলসিটির বাসিন্দা তিনি। মামুন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক। রুহুল আমিন, তার পিতা আব্দুল কাদের, তিনি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে। রুহুল ঢাকার ৯৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক। হারুন-অর-রশিদ, পিতার নাম আব্দুল মালেক, সে ২৬নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক। ইশতিয়াক আহমেদ নাসির, পিতার নাম শফি আহমেদ। নাসির ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি। কাউকে চাঁদপুর থেকে কাউকে নোয়াখালী থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ চারজন ছাড়াও আরও যারা সন্দেভাজন ছিলেন, যারা অর্থদাতা, পরামর্শ ও নির্দেশ দাতা ছিলেন তাদেরকেও নির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে আটক করা হয়েছে।