হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী, ঘুমধুম থেকে ফিরে :
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে সরাসরি কোন সড়ক পথ না থাকায়- কক্সবাজারের রামু ও উখিয়া উপজেলা হয়ে ৪৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নে। ঘুমধুমের তুমব্রু পশ্চিমকুল সীমান্তের শূণ্যরেখায় অস্থায়ী রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে আছেন অন্তত নয় হাজার রোহিঙ্গা। তাঁরা সকলেই মিয়ানমার বাহিনীর নির্যাতনের কবলে পড়ে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন।

তাঁদেরকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল থেকে উখিয়ায় সরিয়ে নিচ্ছে প্রশাসন। সেই আশ্রয়শিবিরে গিয়ে জানা যায়- কোন একটি গোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এই জন্য তাঁরা যেতে চান না। তবে প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং জনপ্রতিনিধিরা পরে তাদেরকে রাজি করান।

শিবিরে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বলিবাজার এলকার ছৈয়দুল ইসলাম (৩২) বলেন, ‘আমাদেরকে নোয়াখালির ভাসানচরে নেওয়া হবে বলে অনেকে বলেছে, এই জন্য লোকজন হেটেই উখয়ার নানা আশ্রয় শিবিরে চলে যাচ্ছেন।’

তবে সরেজমিনে দেখা যায়- মঙ্গলবার মিয়ানমার লাগোয়া ঘুমধুমের তুমব্রু পশ্চিমকুল পাহাড়চূড়া হতে পঞ্চাশ
পরিবারের ২২৮জন রোহিঙ্গাকে তাঁদের মালামালসহ, কক্সবাজারের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের (আরআরআরসি) কাছে হস্তান্তর করেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসন।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক হস্তান্তর অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এসব রোহিঙ্গাদেরকে ১৫টি মিনিবাসে করে পর্যায়ক্রমে পুলিশ পহারায় উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে নেওয়া হয়।

হস্তান্তরকালে বান্দরবানের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মফিদুল আলম, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল, নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপি চেয়ারম্যান তসলিম ইকবাল চৌধুরী, ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

পরে শরণার্থী ক্যাম্পে গিয়ে এসব রোহিঙ্গাদের খোঁজখবর নেন ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া। এসময় তিনি তাঁদেরকে দশ কেজি করে চাউল বিতরণ করেন।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন- ‘চিকিৎসা, বাসস্থান এবং সব ধরনের সুবিধার জন্য রোহিঙ্গাদের নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে উখিয়ায় সরানো
হচ্ছে। বর্তমান সরকার রোহিঙ্গাদের জন্য খুবই মানবিক। পর্যায়ক্রমে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরের রোহিঙ্গাদেরকেও সরানো হবে।’