খালেদ হোসেন টাপু, রামু:
পাঁচদিনের উৎসবমুখরের মাধ্যমে পূজা শেষে কক্সবজারের রামু বাঁকখালী নদীতে সম্প্রীতির বন্ধনে প্রতিমা বিসর্জন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (৩০ শে সেপ্টেম্বর) বাঁকখালীর চরে সকল ধর্মের মানুষের উপস্থিতিতে সম্প্রীতির এক সেতু বন্ধন তৈরি হয়। বিসর্জন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহজাহান আলি বলেন, যে কোন ধর্মীয় উৎসব সকলের মাঝে সম্প্রীতি বন্ধনের সৃষ্টি করে। এ বছরও আনন্দঘন পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব পালন হয়েছে। শারদীয় দুর্গোৎসব শুধু বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য নয়, এটি জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির চেতনায় জাতীয় ঐক্যের একটি মহামিলনোৎসব। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ, এখানে সকল ধর্মের মানুষের সহবস্থান রয়েছে। বিশ্বে এ এক অনন্য ইতিহাস। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘকাল থেকে রামুতে উৎসব মূখর পরিবেশ ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করা হচ্ছে। দুর্গাপূজার সার্বজনীন আবেদনে মানুষে মানুষে সৌহার্দ্য, ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার যে চর্চা বিরাজমান, সে চর্চায় সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির মেলবন্ধন তৈরী করে। মানুষ মানুষের জন্য সুসম্পর্কের বারতা নিয়ে আসে। এই শুভ গুণগুলোকে আমরা প্রতিনিয়ত চর্চা করলে, রামুর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি কখনো নষ্ট হবে না।
রামু বাঁকখালীর চরে প্রতিমা বিসর্জন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রতন মল্লিকের সভাপতিত্বে প্রতিমা বিসর্জন পরিষদের সহ-সভাপতি সুশান্ত পাল বাচ্চুর সঞ্চালনায় বিসর্জন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফতেখাঁরকুল চেয়ারম্যান ফরিদুল আলম, রামু থানার ওসি (তদন্ত) মিজানুর রহমান। এতে অন্যান্যদে মাঝে বক্তব্য ও উপস্থিত ছিলেন, বিসর্জন উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা ননী গোপাল দে, উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক প্রকাশ সিকদার, কালি মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক চন্দন দাশ গুপ্ত, রামু উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নিলোৎপল বড়–য়া, সাংবাদিক খালেদ শহীদ, খালেদ হোসেন টাপু, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আনছারুল হক ভূট্টো, হিন্দু নেতা ছোটন দে, রূপন ধর, অনাথ বিন্দু ধর, রামু সৎসঙ্গ আশ্রমের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ ভট্টাচার্য্য প্রমুখ। বিজর্সন মন্ত্র পাঠ করেন, রামু সর্বজনীন কেন্দ্রীয় কালি মন্দিরের পুরোহিত সুবীর ব্রাক্ষ্মন চৌধুরী বাদল।
রামু উপজেলা প্রতিমা বিসর্জন উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক রতন মল্লিক জানান, সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে রামু বাঁকখালী নদীতে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। শনিবার দুপুরে শোভাযাত্রার মাধ্যমে রামু বাঁকখালী নদীর চরে নেয়া হয় দেবীকে। বিকেল প্রধান অতিথি উপস্থিত থেকে প্রতিমা নিরঞ্জন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। প্রতি বছর রামুতে দুর্গতি নাশিনী দুর্গা মায়ের পূজা অত্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনায় উদযাপন করা হয়। প্রতিমা বিসর্জন ও ৫ দিনব্যাপী দূর্গোৎসবে উপজেলার হাজার হাজার দর্শণার্থীর পদচারণায় মুখরিত ছিল পুরো এলাকা। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পরিবেশে রামুতে শারদীয় দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দূর্গোৎসব উদযাপনে স্থানীয় লোকজনদের সহযোগীতার জন্য আমরা সবার কাছে কৃতজ্ঞ।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।