টুয়াক সংলাপ অনুষ্ঠানে বক্তারা

প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
দায়িত্ব চাপিয়ে দেয়া নয়; নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করে সবার সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই কক্সবাজারের পর্যটন সেক্টরকে এগিয়ে নিতে হবে। একই সাথে কক্সবাজারকে সামগ্রিকভাবে পর্যটকদের কাছে তোলে ধরতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার ট্যুর অপারেটস্ এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) আয়োজিত কক্সবাজার ট্যুরিজম রিভিউ নামক পর্যটন সংলাপ অনুষ্ঠানে ‘দায়িত্বশীল পর্যটন এবং কক্সবাজারের অবস্থা’ শীর্ষক পর্যালোচনা সভায় বক্তারা একথা বলেন।
হোটেল সীগালের পুল হলে টুয়াক সদস্য মোঃ ইদ্রিস আলীর সঞ্চলানায় ও আহ্বায়ক এম.এ. হাসিব বাদলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সংলাপ অনুষ্ঠানে অংশ নেন- কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এ- ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা, ট্যুরিষ্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী, কটেজ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কাজী রাসেল আহমদ নোবেল, কিটকট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাবু, টুয়াকের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস.এম কিবরিয়া, টুয়াকের যুগ্ম আহবায়ক এস. কাজল ও ইফতেকার চৌধুরী, এস. আর ট্যুরস এন্ড ইভেন্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছৈয়দ হোসেন ডালিম, হোটেল সীগালের সিনিয়র অফিসার হারুনুর রশীদ, এমডি ম্যাক্স, সাংবাদিক শাহেদ মিজানসহ আরো অনেকে। শুরুতে প্রতিপাদ্য বিষয়ের উপর প্রবন্ধ পাঠ করেন টুয়াকের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাফ উদ্ দৌলা (আশেক)।
সভায় বক্তারা বলেন, কক্সবাজার বিশ্বের বৃহৎ সমুদ্র সৈকতের নগরী। কিন্তু আমরা সেভাবে বিশ্ব পরিম-লে প্রভাব বিস্তার করতে পারিনি। কারণ আমাদের সমন্বয়হীনতা রয়েছে। পর্যটনের সব সেক্টরে সংশ্লিষ্ট সবাই নিজেদের ইচ্ছেমতো কাজ করে যাচ্ছি। কেউ সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছি না। যার ফলে সমন্বয়হীন পর্যটন কর্মকা-ের কারণে পর্যটন আশানুরূপ অবস্থানে পৌছাতে পারছিনা। যার জন্য আমরা যারা পর্যটক সেবা প্রদানকারী তারাই বেশির ভাগ দায়ী। কারণ আমরা নিজ অবস্থান থেকে যথাষথ দায়িত্ব পালন করছিনা।
বক্তারা আরো বলেন, কক্সবাজারে শুধু সমুদ্র সৈকত নয়; পর্যটকদের আকৃষ্ট করার মতো অনেক উপসঙ্গ রয়েছে। মহেশখালীর সোনাদিয়া, রামু বৌদ্ধ পুরাকীর্তি, ডুলহাজারা সাফারি পার্ক, সৃদুশ্য বাঁকখালী নদী, ধর্মীয় কৃষ্টি, কুদুম গুহাসহ আরো অনেক পর্যটক আকৃষ্ট করার মতো স্পট রয়েছে। কিন্তু আমরা শুধু সমুদ্র সৈকত নিয়ে পড়ে আছি। একই সাথে আমাদের পান, লবণ, শুটকি শিল্পকে পর্যটকদের কাছে তুলে ধরতে হবে। তবেই কক্সবাজারে বেড়াতে এসে পর্যটকদের একঘেয়েমিতা কেটে যাবে। একই সাথে পর্যটকদের আরো বিনোদনের ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
বক্তারা বলেন, কক্সবাজারের সামগ্রিক সেবা ব্যবস্থায় দায়িত্বশীলতার পর্যাপ্ত অভাব রয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা কিছুটা উন্নতি হলেও অন্যান্য সেবা সেক্টরে দুর্বলতা রয়ে গেছে। বিশেষ করে পরিবহন ব্যবস্থা, হোটেল-মোটেল, খাবার রেস্তোঁরাসহ অন্যান্য সেবাখাতের সেবা বৃদ্ধি পায়নি। টমটম, রিক্সাওয়ালাদের পর্যটক হয়রানি, হোটেল-মোটেল ও রেস্তোঁরায় পর্যটকদের হয়রানির অভিযোগ বরাবরই থেকে যাচ্ছে। সর্বোপরি সব সেক্টরে আচার-আচরণ থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে উন্নত সেবা নিশ্চিতে স্ব স্ব অবস্থান থেকে সবাই কাজ করে শতভাগ পর্যটক বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে পর্যটকদের বিচরনের সুবিধার্থে সিটি ম্যাপ স্থাপন করতে হবে।
বক্তারা অভিমত ব্যক্ত করেন, অনেক হয়েছে, আর কথা নয় এবার কাজ চাই। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদেরও এগিয়ে যেতে হবে। এই জন্য কক্সবাজারের পর্যটন নিয়ে ২০ বছরের জন্য আগাম পরিকল্পনা করতে হবে। পরিকল্পনা মাফিক এগিয়ে গিয়ে কক্সবাজারকে বিশ্বের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। আর এইসব বাস্তবায়নের জন্য পর্যটনের নিদির্ষ্ট দপ্তর স্থাপনের বিষয়টি বার বার বক্তারা তুলে ধরেন। সভাপতির সমাপনী বক্তব্যে আহবায়ক এম. এ. হাসিব বাদল বলেন- পর্যটন বিষয়ে নিয়মিত চর্চার জন্য টুয়াক একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরী করতে সক্ষম হয়েছে। আপনাদের সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে পর্যটনকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাব।