এম আবু হেনা সাগর , ঈদগাঁও॥
এবার চাপাক্ষোভ আর শোকে মূহ্যমান হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। খুনীচক্রদের গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিলে ফুঁসে উঠছে এলাকার সর্বশ্রেণি পেশার মানুষজন। সদরের উপকূলীয় ইউনিয়ন চৌফলদন্ডীর নতুন মহাল এলাকায় একের পর এক ছুরিকাঘাতের মত জঘন্যতম ঘটনা ঘটে যাচ্ছে। কোন সুরাহা পাচ্ছে না এলাকাবাসী। চলতি বছরের ৯ জুন রহমানিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক সাইফুল ইসলাম খুনের এক মাসের মাথায় শোকের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের একই স্টাইলে দিনদুপুরে বিদেশ ফেরত আরও এক যুবককে খুন করা হয় ছুরিকাঘাতে। এই নিয়ে এলাকাবাসী একদিকে শোকাহত অন্যদিকে চোখে মুখে হতাশার কালোছায়ায় চাপাক্ষোভ মুখর হয়ে পড়ে। চৌফলদন্ডীর কালু ফকির পাড়া নামক এলাকায় পাওনা টাকার লেনদেন সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। ৯ জুলাই সকাল এগারটার দিকে চৌফলদন্ডীর লাল মিয়ার পুত্র ওসমান নতুন মহাল এলাকার ছৈয়দ আহমদের পুত্র প্রবাস ফেরত ছৈয়দ করিমকে ফোনে ডেকে নিয়ে কালু ফকির পাড়া এলাকায় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। এতে স্থানীয় ও আত্মীয় স্বজনরা ছৈয়দ করিমকে উদ্ধার করে দ্রুত কক্সবাজারের একটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ছৈয়দ করিমের অবস্থার অবনতি দেখা দিলে তাকে একই দিন সন্ধ্যার দিকে চট্টগ্রামের উদ্দ্যেশে প্রেরণ করা হয়। রাত দশটার দিকে চট্টগ্রামে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। ১১ জুলাই সকাল সাড়ে নয়টায় স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ আহমদ স্কুলের মাঠে মরহুমের নামাজের জানাযায় শোকার্ত মানুষের ঢল নামে। অপরদিকে ১২ জুলাই সকাল সাড়ে নয়টার দিকে চৌফলদন্ডীর নতুন মহাল বাজারে এলাকাবাসীর উদ্যেগে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ছৈয়দ করিমের খুনিকে গ্রেফতারের দাবীতে বিশাল এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে মানববন্ধন শেষে প্রায় সহ¯্রাধিক লোকজন মিছিল সহকারে ইউনিয়নের খামার পাড়াস্থ জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বাসভবনে যান। সেখানে বিক্ষোভ মিছিলোত্তর সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- জেলা পরিষদ প্রশাসক খাঁন বাহাদুর মোস্তাক আহমদ চৌধুরী ও জেলা মহিলা সংস্থার সভানেত্রী কানিজ ফাতেমা মোস্তাক। উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি হাবিব উল্লাহ, ঈদগাহ ফরিদ আহমদ (ডিগ্রী) কলেজ ছাত্রলীগ নেতা কাজী আব্দুল্লাহ সহ এলাকার গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গরা। এমনটায় নিশ্চিত করেন চৌফলদন্ডী ছাত্রলীগ সভাপতি মনজুর আলম। এদিকে এক মাসের ব্যবধানে এলাকার দুই যুবক খুনের ঘটনায় অপরাধীরা এখনো ধরা ছোয়ার বাহিরে রয়েছে বলে জানান সচেতন এলাকার লোকজন। এ বিষয়ে চৌফলদন্ডী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি বলেন, অপরাধ নিমূল করা হউক এলাকা থেকে, সন্ত্রাসী চক্ররা যতই শক্তিশালী হউক না কেন? তাকে আইনের আওতায় আনার জোর দাবী জানান। ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতির মতে, অপরাধ অপকর্ম দুরীকরণে পুলিশী নজরদারীর পাশাপাশি নতুন মহাল এলাকায় পুলিশের অস্থায়ী চৌকি স্থাপন করা হলে হয়তো এলাকা জুড়ে অপরাধ অনেকটা কমে আসবে বলে মত প্রকাশ করেন। আবার খুন হওয়া যুবকের নিকট আত্মীয় এক ছাত্রলীগনেতা জানান, তার চাচাতো ভাই ছৈয়দ করিমের হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হউক। তবে এলাকাবাসীর মতে, চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের নতুন মহালবাসীর শনিরদশা কোন ভাবেই কাটছেনা। লেগেই আছে একের পর এক। এই নির্মম দশা থেকে কবে বেরিয়ে আসতে পারবে এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের। চৌফলদন্ডীর ইউপি চেয়ারম্যান এলাকায় অপরাধ বন্ধের লক্ষ্যে পুলিশের সহযোগীতা কামনা করেন। এদিকে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ জানান, অপরাধীদের গ্রেফতারে পুলিশী তৎপরতা অব্যহত রয়েছে।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।