সিবিএন ডেস্ক:
বাংলাদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের শুমারি সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। চলতি জুলাই মাসেই শুমারির ফলাফল প্রকাশ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। বাংলাদেশে অবস্থানরত অনিবন্ধিত মিয়ানমার নাগরিক শুমারি প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, শুমারির শেষে এখন প্রতিবেদন তৈরীর কাজ চলছে। এই মাসের মধ্যে প্রতিবেদন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে কূটনীতিকদের কাছে প্রতিবেদনটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর হওয়ার কথা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
আলমগীর হোসেন জানান, মোট দুই ধাপে শুমারি সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম ধাপে ২০১৬ সালের ২-১৫ জুন এবং দ্বিতীয় ধাপে এই বছরের ২-১৪ মার্চ শুমারি করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, প্রথম ধাপে দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করা মিয়ানমারের নাগরিকদের শুমারি করা হয়। কিন্তু গত বছর অক্টোবর ও নভেম্বরে মিয়ানমার থেকে নতুন করে অবৈধ অনুপ্রবেশ শুরু হওয়ায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়। নতুন আসা মিয়ানমারের নাগরিকদের গণনায় অন্তর্ভূক্ত করতে আবারো শুমারি করা হয়।
আলমগীর হোসেন জানান, বাংলাদেশে ঠিক কী পরিমাণ মিয়ানমারের নাগরিক বসবাস করছে তা প্রতিবেদন চূড়ান্ত হলে জানা যাবে। বাংলাদেশে অবস্থান করা মিয়ানমারের নাগরিকদের মধ্যে ইসলাম ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী রাখাইন ও অল্প কিছু সংখ্যক হিন্দু ধর্মাবলম্বীও পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, প্রথম ধাপে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও পটুয়াখালী জেলায় এবং দ্বিতীয় ধাপে কক্সবাজারের ছয় উপজেলা এবং চট্টগ্রামের পাঁচ উপজেলায় শুমারি করা হয়। শুমারিতে আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুন ও রীতিনীতি যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার দুটি নিবন্ধিত শরণার্থী শিবিরে প্রায় ৩০ হাজার রোহিঙ্গা বসবাস করছে। এর বাইরে আরো পাঁচটি অনিবন্ধিত শিবিরে বসবাস করছে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে আসা কয়েক লাখ রোহিঙ্গা মুসলমান।
বাংলাদেশে বসবাসরত মিয়ানমারের এসব নাগরিকদের যথাযথ মনিটরিংয়ের আওতায় আনার জন্য ২০১৩ সালে কৌশলপত্র প্রণয়ন করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই কৌশলপত্রের আলোকে দেশে অবৈধভাবে বসবাসরত মিয়ানমারের নাগরিকদের শুমারি করা হয়। শুমারিতে মিয়ানমারের নাগরিকদের সম্পর্কে প্রায় ৫০টি তথ্য জানতে চাওয়া হয়েছে।
আলমগীর হোসেন জানান, ‘অধিকাংশ রোহিঙ্গা ও অন্যান্য মিয়ানমারের নাগরিকদের বর্তমান আবাসস্থল হচ্ছে কক্সবাজার জেলা। এছাড়া বান্দরবান জেলায়ও বেশ কিছু মুসলমান ধর্মাবলম্বী রোহিঙ্গা ও অন্য ধর্মের মিয়ানমারের নাগরিকের অবস্থান শনাক্ত করা গেছে। মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী জেলা এবং পূর্বে থেকে দুটি নিবন্ধিত শরণার্থী শিবির থাকায় কক্সবাজার জেলায় স্বাভাবিকভাবে অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের বসবাস বেশি।’ রোহিঙ্গাসহ বেশির ভাগ মিয়ানমারের নাগরিক বৃহত্তর চট্টগ্রামের জেলাগুলোতে বসবাস করলেও পটুয়াখালি জেলায় বেশ কিছু মিয়ানমারের নাগরিকের অবস্থান শনাক্ত করা হয়েছে। যারা অনেক দিন ধরে সেখানে বসবাস করছে।