মোঃ রেজাউল করিম, ঈদগাঁও, কক্সবাজার :

জালালাবাদের জনগণ ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। সরকারী-বেসরকারী ত্রাণের জন্য অপেক্ষা না করে নিজেদের সুযোগ নিজেরাই সৃষ্টিতে তৎপর হয়ে উঠেছেন। এদিকে গতকালও ব্যক্তিগত উদ্যোগে বেশ কয়েকজন ইউনিয়নের ৩টি ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন ও দূর্দশাগ্রস্থ লোকজনের সাথে কথা বলে তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদ আশা প্রকাশ করেছেন, আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ নির্মাণ ও ফরাজী পাড়া সড়ককে জনগণের জন্য উন্মুক্ত করতে পারবেন। তিনি ত্রাণের চেয়ে ভাঙ্গা বেড়ীবাঁধ ও সড়ক মেরামত অতীব জরুরী বলে মনে করছেন। উল্লেখ্য, ভারী বর্ষণের ১ম দিনে জালালাবাদ রাবার ড্যামের পশ্চিম পাশর্^স্থ বেড়ীবাঁধটি ভেঙ্গে বন্যার পানিতে ইউনিয়নের সবকটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়ে। টানা কয়েকদিন বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় এলাকার শত শত পরিবারের হাজার হাজার মানুষজন পানিবন্দী হয়ে পড়েন। উক্ত বেড়ীবাঁধের পানির ¯্রােতে জনগুরুত্বপূর্ণ জালালাবাদ-পোকখালী কার্পেটিং ব্রীজের পূর্ব লরাবাক ব্রীজ সংলগ্ন স্থানে ভয়াবহ ভাঙ্গন হয়। উক্ত ভাঙ্গন দিয়ে পানি জালালাবাদ ইউনিয়ন ছাড়াও পাশর্^বর্তী পোকখালী ও চৌফলদন্ডীতে ছড়িয়ে পড়ে। এর একদিন পর পূর্ব লরাবাক হাফেজ খানা সংলগ্ন স্থানে সড়কের বিরাট অংশ ভেঙ্গে যায়। এতে উক্ত সড়ক দিয়ে সকল প্রকার যানবাহন ও লোক চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। নিরুপায় লোকজন নৌকা যোগে ভাঙ্গা স্থান পারাপার করতে থাকেন। এক পর্যায়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ফরাজী পাড়া সড়কের ভাঙ্গন এলাকা দুটিতে অস্থায়ী কাঠের সাঁকো তৈরি করে আপাতত লোক চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়। পরে জেলা-উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরা ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শনে আসেন। তবে এখনো পর্যন্ত সরকারীভাবে ভাঙ্গন এলাকা মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। তবে জেলা প্রশাসক মো. আলী হোছন পরিদর্শনের সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বেড়ীবাঁধ পুর্ননির্মাণ ও জনগণের চলাচল স্বাভাবিক করতে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারদের নির্দেশ দেন। তার নির্দেশের প্রেক্ষিতেই স্থানীয় চেয়ারম্যান তাৎক্ষণিক সরকারী বরাদ্ধ না পেলেও উক্ত সাঁকো দুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন। এদিকে ভাঙ্গা স্থান পরিদর্শন ও ত্রাণ তৎপরতা গতকালও অব্যাহত থাকে। জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনিন সরওয়ার কাবেরী উক্ত ভাঙ্গনগুলো পরিদর্শন করে গেছেন। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ এলাকার লোকজন উপস্থিত ছিলেন। ভূক্তভোগীরা তার নিকট ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ তুলে ধরেন। পরে তিনি ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভাদিতলা দরগাহ পাড়া রাস্তার ভাঙ্গন পরিদর্শনে যান। সেখানে এলাকার বিপুল সংখ্যক লোকজন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে চেয়ারম্যান রাশেদের ব্যক্তিগত অর্থায়নে শুক্রবার ইউনিয়নের সহ¯্রাধিক পরিবারের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ত্রাণ তৎপরতায় শামিল হন জেলা ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ হোছাইন তানিম। অন্যদিকে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড খোদাইবাড়ী নতুন রাস্তার মাথার ঠিক পূর্ব পাশের্^র নদী ভাঙ্গনে অনেক বাড়ীঘর যে ভেঙ্গে যাচ্ছে সেটা এখনো চেয়ারম্যান মেম্বারসহ কারো নজরে আসেনি বলে জানান উক্ত এলাকার কানিজ ফাতেমা। তিনি দুঃখ করে বলেন, নির্বাচন আসলে ভোট আদায়ের জন্য সবাই আপন হয়ে যায়। কিন্তু বিপদের সময় তাদের কোন হদিস পাওয়া যায় না। অপরদিকে পোকখালী ইউনিয়নের নাইক্ষ্যংদিয়ায় ঈদগাঁও খালের ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে একটি চলাচল সড়ক। সেদিকে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন এলাকাবাসী।