মো: আশফাক উদ্দীন আরফাত
কয়েক দিনের ভারী-টানা বর্ষণে সৃষ্ট পাহাড়ী ঢল ও জোয়ারের পানিতে কক্সবাজার ঈদগাঁও’সহ সদরের বিস্তুীর্ণ এলাকা কোমর পানিতে নিমজ্জিত। বন্যাকবলিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে হাজার হাজার নারী-পুরুষ। বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে বৃহত্তর ঈদগাঁও’র প্রায় ৩ হাজারের অধিক পরিবার পানি বন্দি। সরেজমিনে দেখা যায়, কোমরসমান পানিতে তলিয়ে গেছে ঈদগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম ভোমরিয়াঘোনা, দরগাহ পাড়া সহ ৬/৭ টি গ্রাম, ইসলামাবাদের খোদাইবাড়ী, ওয়াহেদরপাড়া, হিন্দু পাড়ার সহ প্রায় ৫ টি গ্রাম, জালালাবাদের লরাবাক এলাকায় বেড়িবাধ ভাঙ্গন, মোহনবিলা সহ ৮/৯ টি গ্রাম, পোকখালী, ইসলামপুর এবং চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের প্রায় সকল গ্রাম জোয়ারের পানি ও পাহাড়ি ঢলে নিমজ্জিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে বেশ কয়েকদিন ধরে।
জেলা সদরের ২য় বৃহত্তম ঈদগাঁও বাজারের রক্ষাবাধেঁর উপর দিয়ে প্রবল বেগে ঢলের পানি উপচে পড়ে বাজারের উত্তর পার্শ্বে বাঁশঘাটা ও তৎপার্শ্বস্থ এলাকাসমুহে থৈ থৈ পানিতে ভরপুর হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বাঁশঘাটা ঝুলন্ত ব্রীজটি। পারাপার বন্ধ রয়েছে বলে জানান কয়েকজন পথচারী। ইতোমধ্যে পানিতে তলিয়ে গেছে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
ঈদগাঁও নদীর ঢলের পানি জলনাশী দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার ফলে বাধ ভেঙ্গে পশ্চিম ভোমরিয়াঘোনা, চৌধুরীপাড়া, দরগাহ পাড়া, ঈদগাঁও বাজার এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পোকখালীর গোমাতলী এলাকার বাসিন্দা সুজন বলেন, গোমাতলী কে দুর্গত এলাকা ঘোষনা করে- সেখানকার পানি বন্দি মানুষের জন্য দ্রুত ত্রান সামগ্রী পাঠানোর জন্য জেলা প্রশাসক- উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি। দীর্ঘ ১ বছরের বেশি সময় ধরে সাগরের জোয়ার ভাটার সাথে পানিবন্দি হয়ে অমানবিক জীবন যাপন করছে পোকখালী ইউনিয়নের ১০ হাজার মানুষ। গত বছর রোয়ানোর তান্ডবে গোমাতলীর বেড়িবাধ ভেঙ্গে সাগরের জোয়ার ভাঠায় দুর্বিসহ জীবন যাপন করে আসছে এখানকার অসহায় মানুষগুলো।
চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের ফরিদুল আলম মেম্বার জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন ২৭নং স্লুইচগেইটটি জোর পূর্বক বন্ধ করে রাখায় উজান থেকে নেমে আসা পানি বের হতে না পারায় এ সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে একাধিকবার তাগাদা দিলেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ইউনিয়নের প্রায় ৫/৬ শত পরিবার পানি বন্দী।
ইসলামাবাদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুর ছিদ্দিক জানান, ভারি বর্ষনের ফলে ঈদগাঁও নদীতে সৃষ্ট ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বন্যা দূর্গতদের সহযোগীতা অব্যহত রেখেছি এবং বৃহত্তর এলাকাকে বন্যাদূর্গত ঘোষনা করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
জালালাবাদের চেয়ারম্যান ইমরুল হাসান রাশেদ বলেন, আমার ইউনিয়নে বেড়িবাধ ভাঙ্গনে ও ঢলের পানিতে প্রায় ৭/৮ শত পরিবার পানি বন্দী আছে। আমাদের পরিষদ থেকে যথাসম্ভব সহযোগীতা করে যাচ্ছি এবং জেলাও উপজেলা প্রশাসনকে বৃহত্তর ঈদগাঁওকে অতি দ্রুত বন্যাদুর্গত এলাকা ঘোষনা করে ত্রান সহযোগীতার আহবান করেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।