শামীম ইকবাল চৌধুরী, নাইক্ষ্যংছড়ি(বান্দরবান) থেকে:
রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের মূর্তিমান আতংক ২১ মামলার আসামী জহির উদ্দিনের নেতৃত্বে ফের হামলার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (২ জুলাই) সকালে কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ মৌলভীরকাটা গ্রামের আবছার কামালের উপর হামলার ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছে পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (৩ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে জহির উদ্দিন ও তার ভাই আমির আলী বাবুল লাইসেন্সধারী একটি বন্দুক নিয়ে ভাগ্নে আবছার কামালের উপর প্রকাশ্যে হামলা চালায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গর্জনিয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ কাজী আরিফ উদ্দিনসহ সঙ্গীয় ফোর্স পৌছার আগেই সটকে পড়ে তারা।
আবছার কামালের বোন মর্জিনা আক্তার, সাজেদা আক্তার ও ছোট ভাই মোস্তফা কামাল এ প্রতিবেদককে জানান- তাদের পিতার প্রাপ্ত সম্পত্তি দখল নিতে দীর্ঘদিন ধরে বাধা দিয়ে আসছে সন্ত্রাসী জহির উদ্দিন গং। তাদের পরিবারকে না জানিয়ে উক্ত জমি গোপনে অন্যত্র দান করার প্রতিবাদ করায় তাদের ভাইয়ের উপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।
সরেজমিনে জানা যায়, কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মূর্তিমান আতংকের নাম জহির উদ্দিন। একাধিক মামলায় বিগত সময়ে জেল খেটেছেন একাধিকবার। নানা অভিযোগের কারণে পিতা-মাতার জানাজায় পর্যন্ত হাজির হতে পারেনি। যখন যাকে ইচ্ছা তার উপর হামলা করেছে। পাহাড়সম অভিযোগের কারণে দীর্ঘদিন এলাকায় না থাকলেও সম্প্রতি এলাকায় নির্দ্বিধায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। যে কোন ঘটনাতেই তার বড় ভাই বাবুলের লাইসেন্সধারী অস্ত্র নিয়ে হাজির হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
জানতে চাইলে, অস্ত্রের লাইসেন্সকারী আমির আলী বাবুল জানান- অস্ত্রটি তার নিজের নামে করা। ভাই জহির কর্তৃক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবী করেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানান- জহির উদ্দিন একাই একশো। প্রকাশ্যে তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস কেউ কখনো দেখাতে যাননা। যার কারণে তার দৌরাত্মে এলাকার লোকজন ভীতসন্ত্রস্থ হয়ে পড়েছে। ভয়ে কেউ মুখও খুলতে চান না। তার পেছনে এলাকার অনেক প্রভাবশালীও রয়েছেন, যার কারণে সে এখন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
হামলার শিকার আবছার কামালের স্ত্রী রাজিয়া সোলতানা জানান- তার পরিবারসহ এলাকার শত শত মানুষ জহির উদ্দিন গংয়ের কাছে জিম্মী এটা দিবালোকের মত সত্য। কিন্তু ওই সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাননা। তাই আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে গোপন তদন্তের মাধ্যমে ওই সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
এদিকে আবছার কামাল এ প্রতিবেদককে মুঠোফোনে জানান- ‘আমার পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জায়গা দখল নিতে জহির উদ্দিন গং বেপরোয়া হয়ে উঠেছে’। এ কারণে রবিবার সকালে প্রকাশ্য দিবালোকে অস্ত্র নিয়ে আমার উপর হামলা চালায়। এবিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে’।
এবিষয়ে জানতে চাইলে রামু থানার নিয়ন্ত্রণাধীন গর্জনিয়া পুলিশ ফাড়িঁ ইনচার্জ কাজী আরিফ উদ্দিন বলেন- ‘খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি’। কিন্তু হামলার শিকার পরিবার ছাড়া বাইরের কেউ ঘটনার বিষয়ে প্রকাশ্যে সাক্ষী দিতে চাননি। তবে জহির উদ্দিনের বিষয়ে একাধিক মামলা ও অভিযোগের বিষয় তিনি অবগত আছেন।