আবদুর রশিদ, নাইক্ষ্যংছড়ি :
ককসবাজারের অতি নিকটের পার্বত্য নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন পর্যটন লেকে প্রশাসনের কঠোরতা ও নজরদারীর শুরুতেই বন্ধ হয়ে গেছে ইভটিজার,বখাটে ও মাদকাসক্তদের উপদ্রব । অন্যান্য এলাকার মতো এখানে মাদকাসক্ত ও বখাটেরা আস্তানা গাড়তে চেয়েছিল ঈদকে সামনে রেখে। কিন্তু হয়েছে হিতে বিপরীত। ফলে ঈদের সময় থেকে দিন দিন পর্যটকের সংখ্যা বাড়ে চলছে এখানে । নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থেকে পর্যটকরা পাহাড়ী কন্যা নাইক্ষ্যংছড়ি সহ আশপাশের অনেক সুন্দর সুন্দর এলাকা নিরাপদে পরিভ্রমন করতে পারছেন এ জন্যে।
নাইক্ষ্যংছড়ির পর্যটন উপবন লেকে আসা একাধিক পর্যটক জানান, পাহাড়ি ঝর্ণা,পাহাড়ি পরিবেশে লেক, আর লেকের উপর ঝুলন্ত ব্রিজ সহ আরো কয়েকটি স্পট দেখার জন্যে তারা নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে আসেন গত ২৮ জুন। নাম মাত্রে টিকিট কেটে তারা দীর্ঘক্ষণ এ লেকে অবস্থানের পর ফেরার পথে কিছু ইভটিজারের উপদ্রব তাদের নজরে আসে । তারা বিষয়টি প্রশানকের লোকজনকে জানানোর সাথে সাথে তা সমাধান হয় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অভিভাবক সূলভ আচরণে। তিনি ইভটিজারকে শাস্তি না দিয়ে পর্যটকদের বুঝিয়ে এবং অভিভাবক সূলভ আচরণ করে ঈদ আনন্দের সুযোগ করে দিয়েছেন ঊভয়কে । এটি দৃষ্টান্ত।

ককসবাজার তারাবুনিয়াছড়ার থেকে আগত পর্যটক ফেরদৌস আলম জানান,নাইক্ষ্যংছড়ি অনেক সুন্দর পর্যটন এলাকা। ককসবাজারকে আকর্ষনীয় করতে নাইক্ষ্যংছড়ির অবদান অনেক বেশী। তিনি গত ২৯ জুন বিকেলে এ পর্যটন লেকে এসে এখানকার অপরূপ দৃশ্য অনুধাবন করেছেন পরিবার সহ। পর্যটন লেকটি সকলকে বিমূহিত করেছে ঝুলন্ত ব্রীজ ও লেকের নীল জলে ।
বিশেষ করে কঠোর নিরাপত্তা,বখাটে মূক্ত ও প্রশাসনের নজরদারীতে মুক্ত মনে তারা এ পর্যটন কেন্দ্রে কাটিয়েছেন অনেক সময় ধরে।
এভাবে গেল ঈদের পর এক সপ্তাহে ব্যাপী বিগত বছরের দ্বিগুন পর্যটকের সমাগম হয়েছে নাইক্ষ্যংছড়িতে। এ সময়ে পুরো উপজেলা সদরে হাজার হাজার পর্যটক- কৃত্রিম উপবন পর্যটন লেক, গয়াল খামার, মারমা ও চাক পাড়া, কৃষি খামার,বাকঁখালী ব্রীজ,কচ্ছপিয়া-গর্জনিয়ার শস্যভান্ডার সব কিছু দেখে তারা ফিরে গেছেন নিজ নিজ বাড়িতে। তারা খুবই খুশি জানালেন- এ প্রতিবেদককে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও প্রেস ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা মাঈনুদ্দিন খালেদ জানান, ঈদের আগে পরে নাইক্ষ্যংছড়ির পরিবেশ অনেক ভাল । উপজেলা সবর্ত্র নিরাপত্তার চাদরে পর্যটকরা ঘুরে বেড়িয়েছেন গত এক সপ্তাহ। উপজেলা প্রশাসন,বিজিবি, ও পুলিশ যার যার অবস্থান থেকে সব কিছু দেখেছেন। গত ২৮ জুন অনেক লোকের সামনে প্রকাশ্যে ইভটিজাররা উপবন পর্যটন লেকে মেয়েদের নাজেহাল করতে চেয়েছিল পারে নি তারা। বিশেষ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম সরওয়ার কামালের অভিভাবক সূলভ আচরন,নজরদারী এবং সর্বক্ষণিকভাবে তদারকিতে ্ঘটনা বেশী দূর এগোয় নি। সমাধান হয়ে গেছে। একারণে এ বছর এখানে সবারই ঈদ কেটেছে অনেক সুন্দরভাবে। যদিও বিগত সময়ের মতো এবছরও বখাটেরা পর্যটকদের ঈদের আনন্দ নশ্চাৎ করতে চেয়েছি পরিকল্পিতভাবে। পারে নি প্রশাসন সজাগ ছিল বলে। এছাড়া পরিবেশও অনেক সুন্দর ছিল এ বছর। এ কারণে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সর্বস্থরের লোকজন সাধুবাদ দেন তার ভাল মনোভাবের কারনে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সচিব মোহাম্মদ ইমরান মেম্বার জানান, নানা কারণে নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকাটি আলোচিত। বিশেষ করে পর্যটন নগরী না হলেও পর্যটন শহর হিসেবে এলাকার নাম দেশ ব্যাপী। তিনি আরো বলেন, এবারের ঈদে পর্যটকের ঢল নেমেছিল নাইক্ষ্যংছড়িতে। ঈদের পরপর কিছু বখাটে ডির্স্টাব করলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তা সুন্দরভাবে সমাধান করে দিয়েছেন।
সে দিন ঈদের পরের ২৮ জুন অনেক পর্য়টকের উপস্থিতির সুযোগ নিয়ে বহিরাগত কিছু যুবক পর্যটন লেকে বেড়াতে আসা কয়েকজন যুবতী ও ছাত্রীকে ইভটিজিং করলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাদের কঠোর শাস্তির প্রক্রিয়ায় না এনে অভিভাবকের মতো শাসন করে মহত্বের পরিচয় দিয়েছেন। এ কারনে মন্দ কাতারের কতেক লোক নাখোশ। কিন্তু সর্বস্থরের এলাকাবাসী,রাজনৈতিক নের্তৃবৃন্দ,পর্যটক ও সূশীল সমাজের কাছে তিনি প্রসংশিত হয়েছেন সেদিন এ ঘটনায়। এ কারণে কুচক্রিরা অনেকের র্দূনাম রটাতে তৎপর।
কিন্তু বরাবরের মতো নাইক্ষ্যংছড়ির উন্নয়নকে বাধাদানকারী সেই চক্রটি পূর্বের ইউএনও শাহেদুল ইসলাম সাহেবের মতো বর্তমান ইউএনও স্যারকেও বদলী করতে উঠে পড়ে লেগেছে। যা এলাকার দূর্নাম-ক্ষতি, সরকারের ও ক্ষতি। এব ধরনের আচরণ ভাল মানুষরা পছন্দ করে না।
এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম সরওয়ার কামাল এ বিষয়ে জানান,মানবিক কারন ও আইন- শৃংখলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রশাসন এলাকার লোকজনকে ঈদের আনন্দ দিতে সহায়তা করেছে নিয়মমাফিক । এ কারণে নাইক্ষ্যংছড়িতে এবারের ঈদে পর্যটক এসেছে অনেক বেশী।
কিন্তু কিছু যুবক পরিকল্পিতভাবে আইন শৃংখলা নষ্টের চেষ্টা করলেও প্রশাসন সজাগ থাকায় পারেনি।