এম.জিয়াবুল হক, চকরিয়া:

ঈদের ছুটিতে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারাস্থ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক দর্শনে পর্যটক-দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ স্বাভাবিক থাকায় ঈদের দিন থেকে পার্কে বাড়ছে দর্শানার্থী আগমন। তবে মাঝে মধ্যে হালকা বৃষ্টি হলেও দশনার্থীদের আগমনে তেমন ভাটা পড়েনি বলে জানিয়েছেন পার্কের সংশ্লিষ্টরা।

ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে চলতি অর্থবছর ব্যাপক উন্নয়ন কাজের মাধ্যমে আগে থেকে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় সাফারি পার্কের সকল পর্যটন স্পট। ফলে নানা ধরণের জীববৈচিত্রের পাশাপাশি পার্কের সৌর্ন্দয্য বিমুহিত করছে দশনার্থীদেরকে। পর্যটক-দশানার্থীদের যানবাহন জটলা কমাতে পার্কের বাইরে রাখা হয়েছে বিশাল গাড়ি পাকিং স্পট। বরাবরের মতো এবারও প্রতিজন দর্শনার্থীর ভ্রমন ফ্রি নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা করে। তবে ছোটদের জন্য ভ্রমন ফ্রি মাত্র ১০ টাকা।

পার্কের ভেতরে ও বাইরে দর্শনার্থীদের অবাধ ভ্রমন নিশ্চিত করতে ঈদের দিন থেকে থানা পুলিশের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এ প্রসঙ্গে চকরিয়া থানার ওসি মো.বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বছরের বিশেষ দিবস গুলোতে সাফারি পার্কে প্রচুর দশনার্থীর আগমন ঘটে। সেই ধারাবাহিকতায় সাফারি পার্কের কর্মকর্তাদের অনুরোধে ঈদের দিন থেকে পার্কের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশের একটিদল সার্বক্ষনিক পার্কের ভেতরে বাইরে টহলে রয়েছেন।

তবে অভিযোগ উঠেছে, পার্কের আশপাশ এলাকায় কোন ধরণের উন্নতমানের খাবার হোটেলও নেই। এ অবস্থার কারনে ভ্রমনে আগত পর্যটক-দশনার্থীরা চাহিদা মতো ভোজন নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন।

সাফারি পার্কের বিট কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী জানিয়েছেন, ঈদের দিন থেকে গতকাল পর্যন্ত গড়ে ১২ থেকে ১৫ হাজার দশনার্থী পার্ক দর্শনে এসেছেন। দশানার্থীদের কেউ কেউ হেঁেট আবার অনেকে ভাড়া নিয়ে পার্কের নিজস্ব পরিবহন যোগে পার্ক দর্শন করছেন। তিনি বলেন, ঈদের ছুটি ইতোমধ্যে শেষ হলেও আজ (শুক্রবার) ও আগামীকাল শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় এ দুইদিনে পার্কে বিপুল পরিমাণ দশনার্থী আগমনের সম্ভাবনা রয়েছে। আশা করি এবারের ঈদুল ফিতরে দর্শনার্থী আগমন অতীতের রেকর্ড ভঙ্গ করতে পারে।

ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের তত্তাবধায়ক (রেঞ্জ কর্মকর্তা) মো. মোরশেদুল আলম বলেন, পর্যটক-দশানার্থীদের ভ্রমন আনন্দদায়ক করার জন্যই ঈদের আগেই পার্কের বিভিন্ন পর্যটন স্পটকে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে। দর্শণার্থীদের নিরাপদ ভ্রমন নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ অবস্থার ফলে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই ঈদের দিন থেকে এ পর্যন্ত দশানার্থীরা স্বাচ্ছন্দে ভ্রমন করেছেন।

জানা গেছে, সাফারি পার্কের ভেতরে গহীণ অরণ্যে চলে যাওয়া আঁকাবাঁকা সড়কের দুই পাশের অসংখ্য গাছ-গাছালি, বনজঙ্গলে ভরপুর বিশাল লেকের বির্স্তীণ জলরাশির সৌন্দর্য উপভোগ করছেন আগত দর্শণার্থীরা। অনেকে সেলফি তুলতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন।

পার্কের অলিগলিতে অবস্থিত পশু ও পাখীশালায় হরেক প্রজাতির জীবজন্তু দেখতে ভিড় করেছে দর্শনার্থীরা। পার্কের ভেতরে হেটে নারী, শিশু, যুবক ও বয়স্কসহ নানা বয়সের মানুষ অবলোকন করছে পশু-পাখীদের অবাধ বিচরণ। সখের বশে অনেকে হাতির পিটে চড়তেও দেখা গেছে।

সাফারি পার্কে দর্শণার্থীদের জন্য রয়েছে, বাঘ, সিংহ, হরিণ, হাতি, উটপাখি, সাম্বার, মযূর, সারস পাখি, উটপাখি, কুমির, জলহস্তী, মায়া হরিণ, চিতা হরিণ, ভাল্লু,, খরঘোশ, অজগর, বন্যশুয়র, বানর, কালো শিয়াল, উল্টোলেজী বানর, লাম চিতা, হনুমান, তারকা কচ্ছপসহ ৭০ প্রজাতির পশুপাখি।