এম আবু হেনা সাগর, ঈদগাঁও
জোয়ারের পানির সাথে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে টিকিয়ে আছে উপকূলী গোমাতলীর অসহায় গ্রামবাসী। এবার তারা ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হলো। বৃহত্তর এলাকার বিভিন্ন স্থানে সব বয়সী লোকজন আনন্দ উচ্ছ্বাসে ঈদ উৎসব কেটেছে। কিন্তু উপকূলীয় গোমাতলীর শিশু কিশোরেরাও ঈদের গণ আনন্দ থেকে বিমুখ হল। জোয়ার-ভাটার পানি তাদের এই উৎসবকে হতাশ করেছে। বৃহত্তর ঈদগাঁও তথা ছয় ইউনিয়নের পাড়া মহল্লা জুড়ে সম্প্রতি ঈদের খুশির আমেজ বিরাজ করলেও পোকখালীর উপকূলবর্তী গোমাতলীর লোকজনকে হতাশার কালো ছায়ায় দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। এবারও বৃহত্তর গোমাতলীর আজিম পাড়া, চরপাড়া, রাজঘাট, ঘাইট্ট্যাখালী, পশ্চিম গোমাতলী ও বারডল্ল্যা পাড়ার প্রায় দশসহ¯্রাধিক সর্বশ্রেণি পেশার মানুষজন এবার ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। অপরদিকে লবণ ও মৎস্য খ্যাত এলাকা হিসাবে সু-পরিচিত পোকখালীর গোমাতলী। এটি বর্তমানে ক্ষত-বিক্ষত যোগাযোগ সড়ক বললেই চলে। মানুষজনের চলাফেরা অনেকটা দায় হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থী, চাকরিজীবি, সাধারণ লোকজন ও নারীরা যাতায়াতে নিধারুন কষ্ট পাচ্ছে। জেলা সদরের উপকূলীয় এলাকা পোকখালী ইউনিয়নের গোমাতলীবাসী গেল ঘূর্ণিঝড় মোরা’সহ পরবর্তী সময়ে প্রচন্ড বৃষ্টিপাতে গোমাতলী হয়ে ঈদগাঁও আসার প্রধান সড়কটি ভেঙ্গে খাঁন খাঁন হয়ে পড়েছে। এক কথায় ক্ষত-বিক্ষত গোমাতলীর একমাত্র যোগাযোগ সড়কটি। ৬নং সুইচ গেইট সংলগ্ন বেড়িবাঁধ এখনো পরিপূর্ণ ভাবে সংস্কার না হওয়ায় বৃহত্তর এলাকার লোকজনদেরকে সকাল-সন্ধ্যা দু’বার করে জোয়ারের পানির সাথে সংগ্রাম করে টিকে থাকতে হচ্ছে। বাপ-দাদার পুরনো ভিটে বাড়ি কিংবা স্বামীর দেওয়া জায়গা ছেড়ে অনেকে অন্যত্রে সরিয়ে যেতে নারাজ। যতই বৃষ্টি আর তোফান আসুক না কেন? নিজ জমির উপর বসতি থেকে পিছপা হবে না বলে জানান কয়েক অসহায় নারী। এভাবে অসংখ্য কষ্টে নিপতিত হওয়া মানুষজন মলিন চেহারায় আক্ষেপ কণ্ঠে জানান- একদিকে প্রতিনিয়ত জোয়ারে পানিতে বিধ্বস্ত, অন্যদিকে রাস্তাঘাটের করুন দশা। দূর্ভোগ আর দূর্গতির মধ্য দিয়ে গোমাতলী এলাকাবাসীকে অতি কষ্টের বিনিময়ে দিন পার করতে হচ্ছে। পশ্চিম গোমাতলীর বাজার হতে ঈদগাঁও বাজারে আসে নানা কাজ কর্মের লক্ষে প্রতিনিয়ত প্রায় দশ হাজার নর-নারী। এই যোগাযোগ সড়কের বেহাল দশার চিত্র দীর্ঘদিনের। সংস্কারের নেই কোন কারও মাথা ব্যাথা। পুরো সড়ক জুড়েই খানা খন্দকে ভরপুর। বহু কষ্ট আর ত্যাগ তিতিক্ষার বিনিময়ে লবণাক্ত পানি পেরিয়ে শত শত অসহায় লোকজন প্রয়োজনীয় কাজে জেলা সদরের গুরুত্ববহ ঈদগাঁও বাজারমুখী হতে দেখা যাচ্ছে। গোমাতলীর পানি বন্দি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাস্তার দু’পাশে লবণ মাঠ আর বিলে পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এখনো পর্যন্ত বহু গ্রামের চারপাশে অথৈয় পানি। চলাফেরার কোন সু-ব্যবস্থা নেই। চলতি ঈদ মৌসুমেও বিশাল এলাকাবাসীকে ঈদের খুশির আনন্দের পরিবর্তে হতাশার কালো ছায়া বিরাজ করতে দেখা যায়। অপরদিকে পোকখালী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার দেশ-বিদেশের এ প্রতিনিধিকে জানান- ঈদ আনন্দ ভেস্তে গেলো পাঁচ গ্রামবাসীর। প্রতিনিয়ত সকাল সন্ধায় জোয়ার-ভাটায় বিধ্বস্ত করে তুলছে এলাকাবাসীকে। ঈদের আনন্দ উৎসব থেকে এবার বিমুখ হলো গোমতলীর অসহায় লোকজন। তবে কয়েক সচেতন লোকজনের মতে, ঈদের নামাজের পরপরই জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্লাবিত হওয়ায় এক ধরণের বন্দি জীবন কাটাতে হচ্ছে সেখানকার লোকজনদেরকে। যার ফলে ঈদ আনন্দ অনেকটা বিলিন হয়ে গেল। তারা দ্রুতসময়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জোরদাবী জানান।