বর্তমানে মগনামা ঘাট বিনোদন পিপাসু মানুষগুলো ও পর্যটকদের নিকট দিন দিন আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। পেকুয়া উপজেলা প্রতিষ্ঠার ১৫ বছর অতিক্রান্ত হলেও এ এখানে সরকারী বা বেসরকারী উেদ্যগে গড়ে উঠেনি কোন পর্যটন স্পট। বিশেষত কোন পর্যটন স্পট গড়ে না উঠলেও প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকরা বসে নেই। ছুটির দিনে ও প্রতিদিন বিকেলে বিনোদনের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন তারা। তেমনি পর্যটকদের দৃষ্টি এড়িয়ে থাকতে পারেনি পেকুয়ার সবচেয়ে পশ্চিম সীমান্তবর্তী মগনামা ঘাট। যেখানে আছে বিশাল সমুদ্রের মাঝখানে বসে অবারিত নির্মল হাওয়ায় গা ভাসিয়ে দিয়ে মনের আনন্দে ঢেউ আর জেলেদের মাছ ধরার এক বিরল দৃশ্যর দেখা মিলে। মগনামাঘাটের বৈশিষ্ট্য হল প্রকৃতির নির্মল হাওয়া ও জলের মাঝখানে বসে জলের খেলা দেখা এবং জেলেদের মাছ বিকিকিনি ও মগনামা থেকে কুতুবদিয়া যাত্রীদের ডিঙ্গি নৌকায় উঠানামা করার দৃশ্য। জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য দেখা বড়ই আনন্দের। ঢেউয়ের তালে তালে ছোট বড় নৌকা সাম্পানের চলাচলের দৃশ্যটি কবির মনে কবিতার ছন্দ মিলিয়ে দেয়। প্রাকৃতিক নির্মল হাওয়া ভারাক্রান্ত মনকে নিয়ে যায় অজানা সুরের নীড়ে। তাছাড়াঘাটের সিঁড়িতে বসে জলের সাথে মিতালীও করা যায়।
সন্ধ্যা বেলায় সূর্য ডুবার দৃশ্যটি অন্যরকম অনুভূতির জন্ম দেয়। মনে হয় সাগরের ঐ তীরে একটি ছোট গ্রামে সূর্যটি হারিয়ে যাচ্ছে। মগনামা ঘাট ঘুরে দেখা যায়, কুতুবদিয়ার লোকজনের পারাপারের মাধ্যম হচ্ছে মগনামা ঘাট। প্রতিদিনই কয়েক হাজার মানুষ এই ঘাট দিয়ে পারাপার করেন বলে কর্তৃপক্ষ জানান। কেউ নতুন বউকে সাথে নিয়ে আবার কেউ প্রিয়তমার হাত ধরে, অনেকে পরিবার পরিজন নিয়ে মঘনামা ঘাটে বেড়াতে আসেন। প্রতিদিন বিকেলে পর্যটকদের পদভারে মুখরিত থাকে মগনামা ঘাট। জুমাবার ও বৃহস্পতিবার
পর্যটকদের বেশী ভিড় লক্ষ্য করা যায়।

কিভাবে যাবেন : পেকুয়া এবং কুতুবদিয়া লোকজন মগনামা ঘাট না চিনবার কোন কারণ নেই। তবে বাইরের পর্যটকরা মগনামা ঘাটে আসতে চাইলে জানা দরকার। চট্টগ্রাম থেকে মগনামা ঘাটে আসতে চাইলে এস, আলম বাসে সরাসরি আসা যাবে। চকরিয়া থেকে আসতে
চাইলে চকরিয়া জীপ ষ্টেশন থেকে সিএনজি করে অথবা বাস টার্মিনাল থেকে বাসে এবং লাল বোটে আসা যাবে।

সুবিধাসমূহ : নদীর পাড় মূল ঘাট কমপক্ষে ২শ গজ দূরে সরু একটি দীর্ঘ ব্রীজ দিয়ে মিলিত হয়েছে থৈ থৈ জলের উপর স্থাপিত ঘাটের মূল
পাটাতনের সাথে। মূল পাটাতনের দের্ঘ্য ২০ গজ ও প্রস্থ ২০ গজ। পাঠাতনের চারপাশে দেয়া হয়েছে রেলিং এর নিরাপত্তা বেষ্টনী।
তাছাড়া পাঠাতনের উত্তর পশ্চিম কোণায় জেলা পরিষদ নির্মাণ করেছে একটি যাত্রী ছাউনি ও গণশৌচাগার। এখানে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের সুবিধার্থে একটি কুলিং কর্ণার স্থাপন করে চেয়ার টেবিল বসার ব্যবস্থা করেছে। তাছাড়া মগনামা ঘাটের হোটেলগুলো খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।
দিন দিন পর্যটকদের নিকট আকর্ষণীয় হয়ে উঠা মগনামা ঘাট পর্যটকদের নিকট আরো আকর্ষণীয় করতে চাইলে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা জরুরি হয়ে পড়েছে। তাছাড়া মগনামা ঘাটের প্যারাবন গুলো পযর্টকদের বিমোহিত করবে। ঘাটের দুপার্শ্বে প্যারাবন সৃজন করে ঘাটের
সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি করেছে বন বিভাগ।

-ছবি ও প্রতিবেদন: গিয়াস উদ্দিন