শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, ঈদগাঁও
কক্সবাজার সদর উপজেলার ইসলামাবাদ ইউনিয়নের রাজঘাটা নামক এলাকায় নির্বিচারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে বাসিন্দাদের বসতবাড়ী, ফসলী জমি, নদীর দু’পাড়ের রক্ষা বাঁধ ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিলীন হয়ে নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ। প্রশাসনের নির্বিকার আচরণে বেঁচে থাকার শেষ আশ্রয়স্থল হারিয়েছেন অনেকে। ইসলামাবাদসহ পুরো ঈদগাঁওতে বালির ব্যবসা এখন রমরমা। ব্যবসায়ীরা তাদের বালি রেখে সরকারী সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে। সূত্র জানায়, ইসলামাবাদে বালি ব্যবসায়ীরা সরকারী সম্পত্তি দখল করে রমরমা বালির ব্যবসা করে গেলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও কর্তৃপক্ষ নির্বিকার। কেউ কিছুই বলছে না। এরা প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাচ্ছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এমনকি সড়ক কেটে সমান করে সেখানে বালি স্তুপ করে রাখছে। বালির সাথে উঠা পানি এগিয়ে গিয়ে সড়ক ভেঙ্গে দেবে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একজন সচেতন ব্যক্তি জানান প্রভাবশালী একটি মহলের মদদে এরা বালি উঠিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিহীত ব্যবস্থা নেয়া একান্ত জরুরী বলে মনে করছেন স্থানীয় লোকজন। নদীর গভীর তলদেশ থেকে ড্রেজার মেশিনের সাহায্যে বালি উত্তোলন করায় নদীর পরবর্তী আবাদী জমিতে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, ইসলামাবাদ রাজঘাটা, গজালিয়া, ওয়াহেদের পাড়া গ্রামের পাশ দিয়ে বহমান ঈদগাঁও নদীতে বর্তমানে পানি কম থাকায় কিছু অসাধু বালু ব্যবসায়ী ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে। গত ৫/৬ মাস যাবৎ বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে। নদীতে ভাসমান নৌকার উপর ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বোয়িং করে গভীর তলদেশ থেকে পাইপের সাহায্যে বালি উত্তোলন করায় নদীর পরবর্তী আবাদী জমিতে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এদিকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করায় স্থানীয় বিক্ষুদ্ধ জনগণ বেশ কয়েকবার বাঁধা দিলেও ব্যবসায়ীরা ক্ষমতার দাপট ও পুলিশের ভয় দেখিয়ে ঈদগাঁও নদী থেকে বালি উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় সচেতন ব্যক্তিরা। এসব বালি গাড়ী ভর্তি করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়ার সময় গজালিয়া রোডটি প্রতিনিয়ত ভেঙ্গে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে। ফলে বর্তমানে সড়কটি যোগাযোগ অচল হয়ে পড়ছে দিনদিন। স্থানীয় চেয়ারম্যান নুর ছিদ্দিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান। শুধু তাই নয়, নদীতে মেশিন বসিয়ে বালি উত্তোলন করায় ইতোমধ্যে টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ী ঢলে নদীর দু’পাশ ভাঙতে শুরু করেছে। বালি উত্তোলনে নিষেধ করলেও এসব বিষয়ে অভিযোগ করেও কোন ধরণের প্রতিকার মিলছে না। তবে বালি ব্যবসায়ী মুন্না মেম্বার, বাবুল ও দেলোয়ার বলেন প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন বালি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে জরিমানাও করা হচ্ছে। তবে আমার অফিসের কেউ যদি অবৈধ লেনদেনের সাথে জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইসলামাবাদে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন
পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে
![](https://www.coxsbazarnews.com/wp-content/uploads/2017/06/Islamabad_cracked_road.jpg)