হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ

আর মাত্র কয়েক দিন পর খুশীর ঈদ। কিন্ত টেকনাফে মানুষের মধ্যে খুশী নেই। সেই সাথে টেকনাফে ঈদের বাজারও জমে উঠছেনা। একটার পর একটা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর মানুষ দিশেহারা। এখনও ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারেনি। উপজেলার সর্বত্র ধ্বংস লীলা। ২৯-৩০ মে ঘুর্ণিঝড় ‘মোরা’র আঘাতে ক্ষতি হয়নি এমন কোন প্রতিষ্টান, সরকারী-বেসরকারী দপ্তর, ব্যক্তি বা পরিবার কেউ নেই। ক্ষতি হয়নি এমন কোন খাত বা সেক্টরও নেই। ধনী থেকে কুলি-মজুরসহ প্রত্যেক শ্রেনীর ও পেশার মানুষের কম-বেশী সকলেই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। পাকা ভবন, চারদিকে পাকা বাউন্ডারী হলেও গাছপালা এবং বাগান নষ্ট হয়েছে। টিন শেড, কাঁচা বাড়ি ও কুঁড়ে ঘরের তো কথাই নেই। সকলেই ক্ষতিগ্রস্থ, কিন্ত সরকারী ত্রাণ বরাদ্দে অপ্রতুল। ক্ষতিগ্রস্থ মানুষ কাংখিত সরকারী-বেসরকারী ত্রাণ পায়নি। হাজার হাজার পরিবারে মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। খাবার নেই। মানুষের মনে খুশী নেই। অনেক পরিবারে চুলাও জ্বলছেনা।

এরপর আবার কয়েক দিন যেতে না যেতেই ১১-১২ জুন প্রচন্ড ঝড়ো হাওয়ায় আবারও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন সীমান্ত উপজেলা টেকনাফের মানুষ। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। এমনকি অব্যাহত মুষলধারে বর্ষনে পাহাড় ধসে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পশ্চিম সাতঘরিয়াপাড়া পাহাড় ধসে ২ জন নিহত হওয়ার ঘটনা এবং নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে মানুষ পানি বন্দি ও টেকনাফ-সেন্টমার্টিদ্বীপ নৌ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় খাদ্য সংকট ইত্যাদি উপর্যুপরি প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের মনে আনন্দ নেই।

টেকনাফের বিখ্যাত ও ঐতিহাসিক জনপদ শাহপরীরদ্বীপ তো আরেক উপখ্যান। গত ৫ বছরেও জোড়া লাগেনি টেকনাফ-শাহপরীরদ্বীপ সড়কের। শাহপরীরদ্বীপে বসবাসকারী মানুষের দুর্ভোগ দুর্গতির কষ্ট লিখে বুঝানো সম্ভব নয়।

এদিকে মানুষের ঈদের চাহিদা মেঠাতে টেকনাফ পৌর শহর, হ্নীলা, হোয়াইক্যং, সাবরাং, শাহপরীরদ্বীপ, শামলাপুর বাজারের বড় বড় মার্কেট গুলো অপরুপ সাজে সাজানো হলেও ঈদের কেনাকাটা নেই বললেই চলে। পণ্য আছে, ক্রেতা খুবই কম।

ব্যবসায়ীরা জানান মানুষের চাহিদা পুরণ করতে লক্ষ লক্ষ টাকা পুঁজি বিনিয়োগ করা হয়েছে। প্রতি বছর এ সময়ে প্রচুর কেনাকাটা হত। কিন্ত এবারে ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ঈদের কেনাকাটা মোটেও জমছেনা। এমতাবস্থায় ব্যবসায়ীগণ ক্ষতির আশংকা প্রকাশ করছেন।