ইমরান হোসাইন, পেকুয়া:
উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’। মৌসুমের প্রথম এ ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকা সমূহে ১০ নং মহাবিপদ সংকেত জারী করেছে আবহাওয়াগত অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড় মোরা মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে পেকুয়া উপজেলা প্রশাসন। সারাদিন ব্যাপক সচেতনতা চালানো হলেও উপকূলবাসীর অনেকেই এ সর্ম্পকে আগ্রহ দেখায়নি। ঘূর্ণিঝড় আসছে যেনেও ঝুঁকি নিয়ে বসত ঘরে অবস্থান করেছে উপকূলের বাসিন্দারা।
তবে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর ১০ নং মহাবিপদ সংকেত জারী হওয়া ঘর থেকে বের হতে শুরু করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে যারা এর আঘাতের প্রথম শিকার হবেন সেই প্রান্তিক উপকূলের মানুষদের সরিয়ে নিতে তৎপর সিপিপি, রেডক্রিসেন্ট, উপজেলা প্রশাসন ও স্ব স্ব ইউনিয়ন পরিষদের সেচ্ছাসেবকরা।
পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল করিম বলেন, সন্ধ্যা থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রায় ২০হাজারেরও বেশি মানুষ উপজেলা ৭২টি আশ্রয়ণ কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
পেকুয়া উপজেলা দুর্যোগ প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু বলেন, আমাদের এক হাজার স্বেচ্ছাসেবী মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন। আর তা আমরা প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করছি ও নির্দেশনা দিচ্ছি।
সোমবার (২৯ মে) রাত ৮ টায় সরেজমিনে মগনামা ইউনিয়নের শরত ঘোনা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সাইক্লোন শেল্টারগুলো মানুষে পরিপূর্ণ। উপকূলের মানুষ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে সেখানে রাত্রিযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এলাকায় মাইকিং ও জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশে আমরা ইফতার সেরে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে চলে আসি।
তারা আরো জানান, দূরদূরান্ত থেকে সাইক্লোন সেন্টারে আসতে গিয়ে দিতে হচ্ছে অতিরিক্ত গাড়ী ভাড়া। এছাড়া গাড়ী অপ্রতুলতা তো আছে। তাই একপ্রকার বাধ্য হয়ে পরিবার পরিজন ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে পায়ে হেটে আশ্রয়ণ কেন্দ্রে আসছেন অনেকেই। কেউবা ছুটছেন আত্মীয় স্বজনের বাড়ী।
উপজেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় পেকুয়ায় প্রস্তুত রয়েছে ৭৩টি আশ্রয় কেন্দ্র। জরুরি সহায়তার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টা খোলা রয়েছে কন্ট্রোল রুম। এছাড়া রেডক্রিসেন্ট, সিপিপির পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে জরুরি কন্ট্রোল রুম।
পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে ৮টি, রেডক্রিসেন্ট ৩টিসহ মোট ১১টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।