ইমাম খাইর, সিবিএন:
কক্সবাজার শহরের উত্তর নুনিয়াছড়া আশ্রয়কেন্দ্রে ৩জন শিশু ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছে। সোমবার রাত সাড়ে ১২ টার দিকে তারা অসুস্থ হয়।
তাছাড়া একজন বয়স্ক মহিলা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রচন্ড বমি করছেন ওই মহিলা। সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আশ্রয়কেন্দ্রে কোন ধরণের মেডিকেল না থাকায় আশ্রয় নেয়া লোকজন চরম উদ্বিগ্ন।
স্থানীয় বাসিন্দা এবি ছিদ্দিক খোকন সিবিএনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জরুরী ভিত্তিতে অন্তত একটি মেডিকেল টিম পাঠানোর দাবী করেছেন।
এদিকে শহরের সৈকত বালিক উচ্চ বিদ্যালয়, তৈয়বিয়া মাদ্রাসা, উত্তর নুনিয়াছড়া আশ্রয় কেন্দ্রে ঘুর্নিঝড় কবলিত মানুষদের দেখতে এবং তাদের খোঁজ খবর নেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। এ সময় তিনি আশ্রিত লোকজনের উদ্দেশ্যে বলেন, আতংকিত হবেন না। মনে সাহস রাখেন। নিশ্চয় আল্লাহ সহায় হবেন।
সুত্র মতে, থাইল্যান্ড থেকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ এখন কক্সবাজার উপকূলে অবস্থান করছে। এটি ক্রমান্বয়ে শক্তিশালী হয়ে ওঠছে। যে কোন মুহুর্তে কক্সবাজার সাগর উপকূলবর্তী এলাকায় আঘাত হানার আভাস দিচ্ছে আবহাওয়াবিদরা।
সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় আবহাওয়া অধিদপ্তর ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করেছে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুছ সোমবার রাত সাড়ে ১১ টায় সিবিএনকে জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’ কক্সবাজার থেকে ২৮০ কিলোমিটার এবং চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। স্বাভাবিকের চেয়ে পানি ৬/৭ ফুট বাড়তে পারে। এটি মঙ্গলবার সকালের দিকে কক্সবাজার উপকূলের আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬২ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৮৯ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরসমূহকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, উপকূলের ৫৩৭টি আশ্রায়ন কেন্দ্রকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া ঘোষণা দেয়া হয়েছে উপকূলবর্তী সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে অস্থায়ী আশ্রায়ন কেন্দ্র। পর্যাপ্ত পরিবহন ব্যবস্থার পাশাপাশি ৪ হাজারের অধিক স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ৮৮টি মেডিকেল টিম। খোলা হয়েছে উপজেলা পর্যায়ে কন্ট্রোল রুম।