ইমরান হোসাইন, পেকুয়া :

উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোরা’। মৌসুমের প্রথম এ ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হলেও উপকূলবাসীর অনেকেই এ সর্ম্পকে কিছুই জানেন না। ঘূর্ণিঝড় আসছে, তারপরও ঝুঁকি নিয়ে বসত ঘরে অবস্থান করছেন উপকূলের বাসিন্দারা।

ঘূর্ণিঝড় মোরার প্রভাবে উপকূল জুড়ে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত থাকলেও যারা এর আঘাতের প্রথম শিকার হবেন সেই প্রান্তিক উপকূলের মানুষ এখনো জানেনা তাদের ওপর ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে। তারা জানান, কোথাও মাইকিং করে সতর্কতা জারি করা হয়নি। বলা হয়নি কাউকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে।

অন্যদিকে পেকুয়া উপজেলা দুর্যোগ মোকাবেলা কমিটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে বিকেলের মধ্যে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে আসার নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু পেকুয়া
উপজেলার উপকূলীয় তিন ইউনিয়নের প্রায় দেড় লাখ মানুষ এখনো আশ্রয় কেন্দ্রে আসেন নি। অনেকেই দুর্যোগের সংকেত না পাওয়া ও পৈতৃক ভিটেমাটির মায়ায় দুর্যোগে ঝুঁকি নিয়েই নিজস্ব বসতবাড়িতে অবস্থান করছেন।

পেকুয়া উপজেলা দুর্যোগ প্রস্তুতি কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান শাফায়েত আজিজ রাজু বলেন, আমাদের এক হাজার স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছেন। আর তা আমরা প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করছি ও নির্দেশনা দিচ্ছি।

সোমবার (২৯ মে) বিকেল ৫ টায় সরেজমিনে রাজাখালী ইউনিয়নের বকশিয়া ঘোনা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সাইক্লোন শেল্টারগুলো খালি অবস্থায় পড়ে আছে। উপকূলের মানুষ ঝুঁকি নিয়ে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ বসতঘরের মধ্যে রাত্রিযাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এলাকায় এখনো পর্যন্ত কোনো মাইকিং করা হয়নি। জানানো হয়নি দুর্যোগের কোনো আগাম সতকর্তা। প্রশাসন কিংবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কেউ তাদের জানায়নি দুর্যোগের খবর।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় পেকুয়ায় প্রস্তুত রয়েছে ৭৩টি আশ্রয় কেন্দ্র। জরুরি সহায়তার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৪ ঘণ্টা খোলা রয়েছে কন্ট্রোল রুম। এছাড়া রেডক্রিসেন্ট, সিপিপির পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে জরুরি কন্ট্রোল রুম। পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে ৮টি, রেডক্রিসেন্ট ৩টিসহ মোট ১১টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এদিকে প্রান্তিক উপকূলে দুর্যোগের সংকেত না পৌঁছালেও পেকুয়া উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুবুল করিম।

তিনি বলেন, বিপদ সংকেতের সঙ্গে সংগতি রেখে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও নগদ অর্থ রয়েছে। এছাড়া সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসার জন্য মাইকিং করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় সিপিপি, রেডক্রিসেন্টসহ পেকুয়ায় সরকারি, বেসরকারিভাবে প্রায় এক হাজারেরও অধিক সেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে।