হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ

‘রিচিং আউট-অব-স্কুল চিলড্রেন (রস্ক) ফেইজ-২ প্রকল্পের প্রি-ভোকেশনাল স্কিলস প্রশিক্ষণ প্রোগ্রামের’ উপজেলা ইনডাকশন কর্মশালা ২৫ এপ্রিল দুপুরে টেকনাফ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্টিত হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় উক্ত রস্ক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

উপজেলা ইনডাকশন কর্মশালায় নবাগত ইউএনও জাহিদ হোসেন ছিদ্দিকের পক্ষে সভাপতিত্ব করেন একাডেমিক সুপারভাইজার মোঃ নুরুল আবছার। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রস্ক প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মোঃ নুরুজ্জামান মল্লিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আহমদ, রস্ক প্রকল্পের সহকারী পরিচালক মাসুদ আল সামসুজ্জোহা। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সেভ দ্য চিলড্রেনের নিশাত আফরোজ মির্জা, হোয়াইক্যং মডেল ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব অধ্যক্ষ মাওঃ নুর আহমদ আনোয়ারী, সেন্টমার্টিনদ্বীপ ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নুর আহমদ, মহিলা বিষয়ক অফিসার মোঃ আলমগীর কবির, সহকারী শিক্ষক হাবিব উল্লাহ, অর্জুন দাশ, সাংবাদিক হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম। কর্মশালায় জনপ্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা, আনন্দ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এনজিও প্রতিনিধি, ব্যাংক অফিসার, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, সাংবাদিক, স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকা অংশগ্রহণ করেন।

সভায় বলা হয় আনন্দ স্কুল ও প্রাইমারী স্কুল থেকে ৫ম শ্রেনী পাস করে ঝরে পড়া ১৫ বছরের উপরে বয়সী অতি দরিদ্র পরিবারের ৩০০ জন শিক্ষার্থী বাছাই করে ৩ ব্যাচে ২২টি ট্রেডে ৩ মাস প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। সরকারী অর্থায়ণে সম্পুর্ণ বিনা মুল্যে প্রশিক্ষণ চলাকালীন শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন জনপ্রতি যাতায়ত ও টিফিন ভাতা হিসাবে ১০০ টাকা এবং প্রশিক্ষণ শেষে এককালীন ৮০০ টাকা পাবেন। সেভ দ্য চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনালের কারিগরী সহায়তায় ‘বিটা’ নামক একটি সংস্থা টেকনাফ উপজেলায় উক্ত কর্মসুচী বাস্তবায়ন করবে। অনুষ্টান উপস্থাপনায় ছিলেন বিটার অশোক বড়–য়া।

উল্লেখ্য, রস্ক প্রকল্পের ১ম পর্যায়ে প্রকল্পভুক্ত এলাকার ৯০টি উপজেলায় উক্ত কর্মসুচী বাস্তবায়ন করা হবে বলে জানা গেছে।

লাঞ্চের সময়ে নাস্তা !

কর্মশালাটি সকাল ১১টায় শুরু হয়ে সোয়া ১টায় শেষ হয়। কর্মশালায় জনপ্রতিনিধি, সরকারী কর্মকর্তা, আনন্দ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, এনজিও প্রতিনিধি, ব্যাংক অফিসার, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, সাংবাদিক, স্কুল শিক্ষক-শিক্ষিকা অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের দেয়া হয় স্বল্প দামের ১টি করে বলপেন, ১টি করে নোট বুক, রস্ক প্রকল্পের ১টি ফোল্ডার। যে কোন ধরণের সভা ও কর্মশালা দুপুরে শেষ হলে লাঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। কিন্ত এতে ব্যতিক্রম দেখা গেছে। দুপুর সোয়া ১টায় শেষ হয় করা হলেও লাঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়নি। কর্মশালা শেষে প্রত্যেককে ছোট্র পানির বোতল ও হালকা নাস্তার (১টি আপেল, ১টি সমুচা, ১পিস কেক) প্যাকেট দেয়া হয়েছে। এমনকি যাতায়ত ভাতাও দেয়া হয়নি। দুরদুরান্ত থেকে অংশগ্রহণকারীরা কর্মশালায় যোগদান করে যাতায়ত ভাতা ছাড়া দুপুরে লাঞ্চের সময়ে শুধু নাস্তার প্যাকেট দেয়ায় অনেকেই অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ##

টেকনাফে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস পালিত

হাফেজ মুহাম্মদ কাশেম, টেকনাফ

“চিরতরে ম্যালেরিয়া হোক অবসান” প্রতিপাদ্য নিয়ে টেকনাফে বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস পালিত হয়েছে। কর্মসুচীর মধ্যে ছিল র‌্যালী ও আলোচনা সভা। এ উপলক্ষ্যে ২৫ এপ্রিল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হাসপাতাল চত্বর থেকে একটি র‌্যালী প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে হাসপাতাল মিলনায়তনে আলোচনা সভায় মিলিত হয়।

টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ সুমন বড়–য়ার সভাপতিত্বে ও হিতৈষী বাংলাদেশের উপজেলা প্রোগ্রাম ম্যানেজার জিয়াউল হক সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শ্রুতি পূর্ণ চাকমা, মেডিকেল অফিসার ডাঃ প্রণয় রুদ্র, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মুমিনুল ইসলাম, শেড পুষ্টি প্রকল্পের মামুন বিন হোসাইন, আইসিডিডিআরবি’র অমিত বণিক, ব্রাক যক্ষা কর্মসুচীর কামরুজ্জামান, জাতীয় মহিলা আইনজীবি সমিতির তরিকুল ইসলাম, ওসিসি’র সুব্রত সরকার, নাফ রেডিও’র মোঃ হারুন প্রমুখ। র‌্যালী ও সভায় টেকনাফ হাসপাতালের ডাক্তার, স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা বিভাগের কর্মী, নার্স, মিডিয়াকর্মী, এনজিও সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ স্থানীয়রা অংশ গ্রহন করেন।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন ম্যালেরিয়া নির্মূলের লক্ষ্যে ২০০৭ সাল থেকে ম্যালেরিয়া প্রবণ জেলা গুলোতে ম্যালেরিয়া কমিয়ে আনা ও ম্যালেরিয়া জনিত মৃত্যুর সংখ্যা শূন্যে নিয়ে আসা হচ্ছে সরকারের মূল লক্ষ্য। তাছাড়া সকল পরিবারে কীটনাশকযুক্ত মশারী ব্যবহার ও ঝোঁপ জঙ্গল, বাড়ীর আঙ্গীনাসহ নালা নর্দমা পরিষ্কার রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন। যাতে মশা বংশ বিস্তার করতে না পারে।

হিতৈষী বাংলাদেশ এর উপজেলা ম্যানেজার জিয়াউল হক সরকার জানান চলতি বছর টেকনাফে ৬ জন সাধারন ম্যালেরিয়া রোগী ধরা পড়েছে। যা গত বছরে ছিল ২৪ জন।

উল্লেখ্য, ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য টেকনাফ উপজেলায় পর্যায়ক্রমে কীটনাশকযুক্ত মশারী বিতরণ করে আসছেন হিতৈষী বাংলাদেশ। ইতিমধ্যে ১ লাখ ৬১ হাজার মশারী বিতরণ করা হয়েছে। বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস উপলক্ষ্যে হিতৈষী বাংলাদেশ ম্যালেরিয়া পরীক্ষা ও সনাক্তের জন্য স্বাস্থ্য ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছিল। এতে অনেকে বিনা মুল্যে ম্যালেরিয়া পরীক্ষা করেছেন।

প্রসঙ্গতঃ বাংলাদেশ সরকার ২০০৭ সাল থেকে ম্যালেরিয়া নির্মূলের লক্ষ্যে ম্যালেরিয়া প্রবণ ১৩টি জেলার ৭১টি উপজেলায় ২১টি এনজিওর সমন্বয়ে গঠিত কনসোর্টিয়াম কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে আসছে।