অভিন্ন প্রশ্ন পদ্ধতিতে আগামী ১৫ আগস্ট থেকে কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিসের (মাস্টার্স সমমান) পরীক্ষা নেয়া হবে। পরী্ক্ষা চলবে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত। এ কারণে ১১ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে।

রোববার শিক্ষামন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির চট্টগ্রামের দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালকের কার্যালয়ে এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (বেফাক) সভাপতি ও হেফাজতের আমির শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী। তিনি সাংবাকিদের বলেন, কওমি মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থার বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি বহুমুখী ষড়যন্ত্র হয়েছে। এসব ষড়যন্ত্র প্রতিরোধ করে কওমি মাদরাসার স্বকীয়তা শতভাগ অক্ষুণ রেখে স্বীকৃতি পেয়েছি। এটাকে ধরে রাখতে হলে পূর্বের যে কোনো সময়ের তুলনায় এখন অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এটা নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন বা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন তারা নিজেদের স্বার্থের চিন্তা থেকেই এমনটা করছেন।

ওলামায়ে কেরামদের কোনোরূপ বিভ্রান্তি ও অপপ্রচারে কান না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র বা ছলচাতুরি করতে না পারে, সেজন্য সবার দৃঢ় ঐক্য ও সতর্ক থাকতে হবে। কওমি মাদরাসা বোর্ডসমূহ কোনোভাবেই প্রচলিত রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়।

বৈঠক সূত্র জানায়, ‘আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ নামে সর্বোচ্চ সংস্থার আওতায় দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা গ্রহণ ও সনদ বিষয়ক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই অভিন্ন প্রশ্নপত্রে একসঙ্গে সব বোর্ডের আওতাধীন মাদরাসাসমূহে দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষা নেয়া হবে। এই কমিটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকার থেকে কোনো ধরনের আর্থিক সহযোগিতা বা সুবিধা গ্রহণ করবে না।

গত বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত ছয় বোর্ডের নিবন্ধিত দাওরায়ে হাদিসের মাদরাসাসমূহ ‘আল-হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ সংস্থায় নিবন্ধিত মাদরাসা বলে গণ্য হবে।

কওমি সনদ বাস্তবায়ন কমিটির কো-চেয়ারম্যান মাওলানা আশরাফ আলী বৈঠকের বিষয়ে বলেন, সারা দেশের নিবন্ধিত কওমি মাদরাসার দাওরায়ে হাদিস পরীক্ষা অভিন্ন প্রশ্নপত্রে অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বেফাক থেকে ছয়জন এবং অন্য পাঁচ বোর্ড থেকে একজন প্রতিনিধি নিয়ে ১১ সদস্যর পরীক্ষা সংক্রান্ত উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মাওলানা শামসুল হককে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। এই কমিটি পরীক্ষার সব কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন।

মুফতি মাওলানা রূহুল আমীন বলেন, আজকের বৈঠকের পর স্বীকৃতির পথ আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। কওমি সনদ বাস্তবায়ন কেন্দ্রীয় কমিটি নির্দেশনা মোতাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপ-কমিটি কাজ শুরু করবে। পরবর্তী এ সংক্রান্ত আরও কোনো উপ-কমিটি করার প্রয়োজন হলে সেটি করা হবে। পর্যায়ক্রমে একটি নীতিমালার মধ্যে নিয়ে আসা হবে।