মোঃ কাউছার উদ্দীন শরীফ, ঈদগাঁওঃ

কক্সবাজারের রশিদ নগরে অবাধে চলছে লাল মাটির পাহাড় ও টিলা কাটার মহোৎসব। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এসব পাহাড় ও টিলা কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়। তাছাড়া পাহাড়ের লাল মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে পুকুর ও নিচু জমি। বিভিন্ন ফসল ও সবজি আবাদের নাম করে কিংবা বাড়িঘর নির্মাণের কথা বলে ২০-৩০ ফুট উঁচু টিলা কেটে সমতলভূমিতে পরিণত করা হচ্ছে।

জানা যায়, কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের মেহেরঘোনা রেঞ্জের আওতাধীন ধলিরছড়া বিট এলাকায় পাহাড়জুড়ে রয়েছে হাজার হাজার একর সংরক্ষিত বনাঞ্চল। চুরি করে গাছ পালা কেটে বিক্রি করা হচ্ছে, আর বিভিন্ন চাষের জন্য পাহাড়ের গাছপালা কেটে আগুন লাগিয়ে গোটা পাহাড় জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। এতে করে উজাড় হয়ে যাচ্ছে পাহাড়ী বনাঞ্চল। সেই সাথে নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। পরিবেশের উপর পড়ছে মারাত্মক আঘাত। কিন্তু এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। যারা সেখানে বনরক্ষণ করবেন তারাই সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি। গাছকাটা বা পাহাড় জ্বালিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়ালে অপহরণ ও গুম খুনের আশংকা রয়েছে তাদের। আর এ জন্যই পাহাড়ী সন্ত্রাসীদের সাথে সমঝোতা করে দিন পাড় করছে পাহাড়ের বনরক্ষকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কক্সবাজারের রামুর রশিদ নগরের ফকিরা কবর থেকে ঘোনা পাড়া হয়ে যেতে দীর্ঘ পথ পাহাড় আর পাহাড়। এর বেশির ভাগই সরকারের সংরক্ষিত বন। অথচ এই বনে কোনো গাছ নেই। দূর থেকে দেখলে পাহাড়গুলোকে ন্যাড়া মনে হয়। আবার এই সংরক্ষিত বনেরই কোনো কোনো এলাকায় বসতি গড়েছে পাহাড়িরা। গড়ে তুলেছে পাকা বাড়ি এবং দোকানপাটও। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, সংরক্ষিত বনের গাছ হয়তো চুরি হয়ে গেছে; নয়তো পাহাড়ে নানা চাষের জন্য তা কেটে ফেলেছে পাহাড়িরা। আর এগুলো যাদের দেখার দায়িত্ব সেই বন বিভাগ একেবারেই চুপ।

স্থানীয়রা বললেন, ওই পাহাড়গুলোতে আগুন লাগিয়ে গাছপালা পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে নানা চাষের জন্য। চাষের সাথে পাহাড়িরাই জড়িত। ওসব পাহাড়ে গাছ লাগানো হলেও কোনো লাভ হয় না। কোনো এক সময় তা পুড়িয়ে সেখানে চাষ করে পাহাড়িরা। এভাবেই ন্যাড়া হয়ে গেছে অসংখ্য পাহাড়। একই সাথে লাইন দিয়ে গড়ে উঠেছে বসতি। পাহাড়িরা এসব বসতি গড়ে তুলেছে।

সংরক্ষিত এলাকায় বসতি স্থাপনের ব্যাপারে কামাল উদ্দীন নামের এক যুবক বলেন, মানুষ থাকবে কোথায়? বাধ্য হয়ে বনবিভাগের জায়গায় বসতি স্থাপন করছে। অনেক মানুষ এখন আর দুর্গম পাহাড়ে থাকতে পারে না। সেখানে অনেক ঝামেলা আছে। তাই বাধ্য হয়ে তারা রাস্তার আশপাশে সংরক্ষিত বনে বসতি স্থাপন করে থাকেন।

এসব বিষয়ে ধলির ছড়া বিট কর্মকর্তা মোঃ আব্দু রমিহের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে বলেন,আমি বাগানে আছি পরে দেখা হবে।

মেহেরঘোনা রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ রিয়াজ উদ্দীনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মুঠোফোনে বলেন,বিট কর্মকর্তাকে পাটানো হবে।