সায়মন সরওয়ার কায়েম:
প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক জনবল দিয়ে চলছে ঈদগাঁও ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ। পর্যাপ্ত পরিমানে ট্রাফিক সদস্য না থাকায় ঈদগাঁওতে যানজট নিরসনসহ সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো যেমন অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে তেমনি অতিরিক্ত চাপ নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের। স্টেশ‌নের কিছু কিছু এলাকা যানজটে নাকাল হয়ে চরম ভোগান্তির তৈরী হচ্ছে দিনের পর দিন।

ঈদগাঁও ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর প্রিয়দর্শী চাকমা জানান, বর্তমানে যে পরিমানে ট্রাফিক পুলিশের সদস্য কাজ করছে শুধু ঈদগাঁও বাস স্টেশন তার দ্বিগুণ জনবল প্রয়োজন। বাসস্ট্যান্ড, বাজার, শপিংমল, হাসপাতাল এলাকাগুলোতে কমিউনিটি পুলিশের যে সদস্যরা কাজ করে তা দিয়েও পর্যাপ্ত হয় না। ঈদগাঁওতে গুরুত্বপূর্ণ ৮টি প‌য়ে‌ন্টে অপরিহার্য হিসেবে প্রতিদিনই ট্রাফিক সদস্য থাকতে হয়। কিন্তু যে পরিমানে লোকবল আছে তা দিয়ে যানজট নিরসন অসম্ভব হ‌য়ে প‌ড়ে‌ছে। তারপরও আমরা কাজ করে যা‌চ্ছি।

ট্রাফিক পুলিশ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ঈদগাঁওতে বর্তমানে একজন সার্জেন্ট, একজন এটিএসআই এবং মাত্র একজন কনস্টেবল পুলিশ সদস্য কাজ করছেন। এছাড়াও আরো ৪জন কমিউনিটি পুলিশ সদস্যও নিয়োজিত রয়েছেন। তারা দুই শিফটে কাজ করছে। গুরুত্বের বিবেচনায় বিভিন্ন মোড়গুলোতে প্রতিদিন বেসরকা‌রি লোকবল দিয়ে কাজ করা হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ঈদগাঁওতে বাস স্টেশন এলাকা যানজটে নাকাল অবস্থা। যে পরিমানে ট্রাফিক পুলিশ আছে তা পর্যাপ্ত না। কিছু কমিউনিটি পুলিশ সদস্য দায়িত্বে থাকলেও তারা ঝিমিয়ে পড়েছে। যানজট নিরসনে দায়িত্ব পালন করতে হিম‌শিম খা‌চ্ছে। সম্প্রতি বাস স্টেশন বাজারে প্রবেশ পথসহ সড়কগুলো
যানযট লেগেই থাকে। এতে করে এ বাস স্টেশন এলাকা অতীতের চেয়ে বর্তমানে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। নিয়মিত ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রী ও সাধারণ মানুষ। দীর্ঘদিনের এ ভোগান্তি থেকে রেহায় চান যাত্রী ও বাস-‌মি‌নিবাস শ্রমিকরা।

কক্সবাজার থেকে চকরিয়া যাবেন খতিজা জান্নাত নামে এক যাত্রী জানান, তিনি বাস স্টেশনে একটি বাসে উঠে বসে আছেন প্রায় ৩০ মিনিট। সড়কে বাস ও গণপরিবহনে জট থাকায় ঈদগাঁওতে থেকে বাস বের হতে পারছে না মহাসড়‌কে। জট ভেঙ্গে চলাচল স্বাভাবিক করতে ট্রাফিক, কমিউনিটি পুলিশ কেও দেখা যাচ্ছে না। তখন দীর্ঘ এ যানজটে বসে আছে খতিজা জান্নাত সহ বিভিন্ন বাসে শত শত যাত্রী।

একাধিক বাস চালক ও হেল্পারদের অভিযোগ, ঈদগাঁও ট্রাফিক বিভাগ থেকে ২-৩ জন কমিউনিটি পুলিশ সদস্যকে যানজট নিরসনে দায়িত্ব দেওয়া হলেও জট নিরসনে তারা যথাযথ ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। এতে করে যাত্রীদের সঙ্গে চালক ও শ্রমিকরাও ঘন্টার পর ঘন্টা ভোগান্তিতে থাকেন।
মি‌নিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন ঈদগাঁও বাস স্টেশন জট নিরসন করে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার পথ স্বাভাবিক রাখতে ৩-৪জন কমিউনিটি পুলিশ সদস্য দায়িত্ব আছেন। তারা ইদানিং ঝিমিয়ে পড়েছেন। ট্রাফিক পুলিশ এ কমিউনিটি পুলিশ সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করলেও তাদের পারিশ্রমিক দেন বাস মালিক সমিতি। তিনি আরও বলেন, ট্রাফিক বিভাগের প্রতি অনুরোধ ঈদগাঁও বাস স্টেশন এলাকার যানজট নিরসনে যেন একটু নজর দেন।

ঈদগাঁও ট্রাফিক ইন্সপেক্টর প্রিয়দর্শী চাকমা বলেন, ঈদগাঁও বাস স্ট‌্যান্ড চতুর্মুখী সড়ক থেকে বাস ও গণপরিবহন আসা-যাওয়া করে। যানজট নিরসনে যে পরিমান পুলিশ সদস্য প্রয়োজন তার জন্য আমরা উপর মহলে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি। এছাড়া কমিউনিটি পুলিশ সদস্যদের কাজে লাগানোর জন্যও বিভিন্ন এলাকার স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করছি। ঈদগাঁও উপজেলার বাসিন্দা ও ঈদগাঁও আর্দশ শিক্ষা নিকেতন কেজি স্কুলের শিক্ষক জনাব নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা গত কয়েক বছর যাবতই গণমাধ্যমে জানতে পারছি যে ঈদগাঁওতে ট্রাফিক পুলিশের সংখ্যা বাড়বে। যানজট নিরসন হবে। কিন্তু সবই কথার কথা। ঈদগাঁওবাসী এসব কথার কোন বাস্তবায়নই পাচ্ছে না।