বিশেষ প্রতিবেদক:

কক্সবাজার লাবণী পয়েন্টস্থ সাগরপাড়ে হোটেল মিডিয়া ইন্টারন্যাশনাল থেকে বিলুপ্ত প্রজাতির হুতুম পেঁচার ৭ টি ছানা উদ্ধার করা হয়েছে।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের শহর রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম আতা এলাহি ৩০ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার সময় হুতুম পেঁচার ছানাগুলো উদ্ধার করে বনবিভাগ হেফাততে আনা হয়।
সাগরপাড়ের হোটেল মিডিয়া ইন্টারন্যাশনালের ব্যবস্থাপক মো. শাহ আলম (রাজা শাহ আলম) জানান, হোটেলের ছাদের উপর হুতুম পেঁচা বাসা বেঁধে ছিল। গত কিছুদিন আগে ৭টি ছানাও দেয়। এই হুতুম পেঁচা ছানাগুলোর ডাকে হোটেলে আগত অতিথিরা ভীত হন। ৩০ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বনবিভাগকে বিষয়টি জানানো হলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হুতুম পেঁচাগুলো তারা উদ্ধার করে নিয়ে যান। তবে, ছানাগুলোর মা (হুতুম পেঁচা) উড়ে পালিয়ে গেছে।
কক্সবাজার শহর রেঞ্জ কর্মকর্তা একেএম আতা এলাহী বলেন, শহরের মানুষ পেঁচার ডাকের সাথে তেমন সম্পৃক্ত নয় বললেই অনেকে ভয় পান।
উদ্ধার হওয়া হুতুম পেঁচাগুলোকে সেবা দিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে চকরিয়া ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, হুতুম পেঁচার ছানাগুলো পার্ক অভ্যন্তরে রাখা হয়েছে।
সাফারী পার্কের ভেটেরিনারি চিকিৎসক ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, হুতুম পেঁচার ছানাগুলো ছোট। এগুলোকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ছানাগুলো এখন সুস্থ আছে।
কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন,
কয়েক বছর আগেও আমাদের দেশে যেভাবে পেঁচা দেখা যেতো এখন আর তেমন দেখা যায় না। দিন দিন আমাদের দেশে পেঁচার সংখ্যা কমে যাচ্ছে। কীট-পতঙ্গ, সাপ, ব্যাঙ পেঁচার খাদ্য। পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে পেঁচার ভূমিকা অতুলনীয়। পেঁচা পাখিদের দলের হলেও এরা অন্যান্য পাখিদের সাথে একত্রে থাকে না। এরা একাকী। নির্জনে বাস করে। এরা নিশাচর। বাংলাদেশে পেঁচা চেনে না এমন মানুষের সংখ্যা কম। তবে শহরের মানুষ পেঁচার ডাকের সাথে তেমন সম্পৃক্ত নয় বললেই চলে। পেঁচাকে অনেকে কুসংস্কারবশত অশুভ পাখি মনে করে থাকে। বস্তুত পেঁচা একটি অতি উপকারী পাখি। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পেঁচার ভূমিকা অতুলনীয়। প্রাকৃতিকভাবে বালাই ব্যবস্থাপনার জন্য পেঁচার জুড়ি নাই। এদের বাঁচিয়ে রাখা আমাদেরই কর্তব্য।