আব্দুস সালাম,,টেকনাফ :
কক্সবাজারের টেকনাফ শাহপরীরদ্বীপ নাফনদীর চর থেকে প্রতিনিয়ন বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। চরে ড্রেজার বসিয়ে দিনরাত এসব বালু উত্তোলন করে আসছে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সাবরাং অর্থনৈতিক জোনে মাটি ভরাটের জন্য এসব বালু উত্তোলন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা চরের বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে শনিবার বিকালে শাহপরীর দ্বীপ বেড়িবাঁধে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাবরাং অর্থনৈতিক জোনে মাটি ভরাটের জন্য শাহপরীরদ্বীপ দক্ষিণ পাড়া সংলগ্ন নাফনদীর ঘোলার চর সম্মুখভাগ থেকে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ড্রেজারের সঙ্গে বড় পাইপ সংযোগ স্থাপন করে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরত্বে সাবরাং অর্থনৈতিক জোনে এসব বালু ফেলা হচ্ছে। চায়না হারবার নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি বাস্তবায়ন করছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাবরাং অর্থনৈতিক জোনে মাটি ভরাটের জন্য নাফনদীর বেড়িবাঁধের অতিনিকটে ড্রেজার বসিয়ে যেভাবে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তাতে অচিরেই শাহপরীরদ্বীপ হুমকির মুখে পড়বে। তারা দ্বীপের দূরবর্তী স্থান থেকে বালু উত্তোলনের পরিবর্তে নিকটবর্তী স্থান থেকে চরের বালু উত্তোলন করায় যেকোন সময় ভাঙ্গনে দ্বীপটি বিলীন হয়ে যেতে পারে।
দ্বীপের নিকটবর্তী চর থেকে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে শাহপরীরদ্বীপ বেড়িবাঁধে হাজার হাজার জনতার উপস্থিতিতে একটি প্রতিবাদী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন হয়েছে। এতে দ্বীপবাসী তাদের এলাকার নিকটবর্তী চর থেকে বালু উত্তোলন বন্ধের দাবিসহ দ্বীপ রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) মাস্টার জাহেদ হোসেন বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কয়েকশ কোটি টাকার একাধিক প্রকল্প শাহপরীরদ্বীপ রক্ষায় বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। অথচ সেই শাহপরীর দ্বীপকে হুমকিতে ফেলে চর থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অবিলম্বে দ্বীপের চর থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, আমাদের এলাকা কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে দেয়া যায়না। কারো বালু দরকার হলে দ্বীপের দূরবর্তী স্থান থেকে নিতে পারে। কিন্তু চর কেটে এভাবে বালু উত্তোলন আমরা মেনে নেব না।
সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, অর্থনৈতিক জোনে যে পরিমাণ বালু দরকার তা শাহপরীরদ্বীপ চর থেকে নেয়া হলে দ্বীপটি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। বিশেষ করে দ্বীপে পর্যটক জেটির খুব কাছ থেকে বালু উত্তোলন করার ফলে প্রথম প্রভাবে জেটিটি ধ্বসে পড়তে পারে। এ বিষয়ে সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
স্থানীয় কলেজ ছাত্র আব্দুল বাসেদ বলেন, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটের যে স্থানে ডুবোচর সৃষ্টি হয়ে প্রতিবছর সেন্টমার্টিন নৌযান চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি হয় সেখান থেকে বালু উত্তোলন করা হলে একদিকে নদী খননের মাধ্যমে নৌ চলাচলের রাস্তা হবে অন্যদিকে অর্থনৈতিক জোনের বালুর চাহিদাও মিটবে।
শাহপরীরদ্বীপ চর থেকে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য হারুন অর রশিদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাস্টার জাহেদ হোসেন, সাবরাং ইউপি সদস্য রেজাউল করিম রেজু, আব্দুল মান্নান, সাবেক ইউপি সদস্য মোহাম্মদ ইসমাইল, নুরুল আমিন, উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা আব্দুল বাসেদ, ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি হাফিজ উল্লাহ ও সাধারণ স¤পাদক মোহাম্মদ শরীফ বিভিন্ন প্রতিষ্টান প্রধানগণ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।