এখন থেকে সরকারি-বেসরকারি স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হতে হলে শিক্ষার্থীর বয়স ছয় বছরের বেশি হতে হবে। জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০-এর আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় এ বয়স নির্ধারণ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। অর্থাৎ ছয় বছরের নিচের কেউ প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে না।

নতুন বছরে সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোতে প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তির নীতিমালা ও সময়সীমা জারি করা হয়েছে। সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, করোনার কারণে গত বছরের মতো এ বছরও বিদ্যালয় থেকে ভর্তি ফরম বিতরণ করা হবে না। শুধু অনলাইনে gsa.teletalk.com.bd আবেদন চলবে। আগামী ২৫ নভেম্বর আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে চলবে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হবে। সরকারি স্কুলে ভর্তির লটারি ১৫ ডিসেম্বর আর বেসরকারি স্কুলের লটারি হবে ১৯ ডিসেম্বর আয়োজন করা হবে। লটারি শেষে রাতে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

বলা হয়েছে, ২০২২ সালে স্কুলে ভর্তিতে বিভাগীয় শহর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অবস্থিত সব সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে অনলাইন ও এসএমএসের মাধ্যমে ভর্তির আবেদনপত্র পূরণ ও ফি প্রদান সংক্রান্ত কাজ করতে হবে।

শিশুর বয়স নির্ধারণের বিষয়ে জানতে চাইলে মাউশির সহকারী পরিচালক (বিদ্যালয়) মো. আমিনুল ইসলাম টুকু শনিবার রাতে জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ বছর প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে শিশুর বয়স ছয় বছর প্লাস নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থাৎ প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ৬ বছর পূর্ণ বা তার বেশি হতে হবে। তবে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যদি কোনো শিশুর বয়স ছয় বছর পূর্ণ না হয়, তাহলে ওই শিশুর ভর্তি আবেদন বাতিল বলে গণ্য হবে।’

ভর্তিতে যেসব শর্ত মানতে হবে

সরকারি বিদ্যালয়: ঢাকা মহানগরে ৪৪টি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও তিনটি শাখা থাকবে। এবার জাতীয়করণ হওয়া আরও দুটি বিদ্যালয় যুক্ত হয়েছে। এগুলোতে মাউশির অধীন কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনায় ভর্তির কাজ হয়। এবারও বিদ্যালয়গুলোকে তিনটি গুচ্ছ বা গ্রুপ (এ, বি এবং সি) করে ভর্তির কাজ হবে। আবেদনের সময় একজন শিক্ষার্থী একটি গুচ্ছের পাঁচটি বিদ্যালয়ে ভর্তির পছন্দক্রম দিতে পারবে। এখান থেকে লটারির মাধ্যমে একটি বিদ্যালয় নির্বাচন করা হবে।

আবেদনের সময় একজন প্রার্থী একই গ্রুপে পছন্দের ক্রমানুসারে সর্বাধিক পাঁচটি বিদ্যালয় নির্বাচন করতে পারবে। এছাড়া সারাদেশে আবেদনকারীর আবেদনের সময় প্রতিষ্ঠান নির্বাচনকালে থানাভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা পাবেন। এক্ষেত্রে প্রার্থীরা প্রাপ্যতার ভিত্তিতে প্রতিটি আবেদনে সর্বোচ্চ পাঁচটি বিদ্যালয় পছন্দের ক্রমানুসারে নির্বাচন করতে পারবে। প্রথম শ্রেণির ভর্তির ক্ষেত্রে বয়স ৬ বছরের বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে।

ডাবল শিফটের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উভয় শিফট পছন্দ করলে দুটি পছন্দক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। একই পছন্দক্রমের বিদ্যালয় কিংবা শিফট দ্বিতীয়বার পছন্দ করা যাবে না।

বেসরকারি বিদ্যালয়: ঢাকা মহানগরীর বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান সংলগ্ন কমপক্ষে একটি ও সর্বোচ্চ তিনটি প্রশাসনিক থানা ক্যাচমেন্ট এরিয়া হিসেবে নির্ধারণ করা যাবে। এছাড়া আবেদনকারীরা আবেদনের সময় প্রতিষ্ঠান নির্বাচনকালে মহানগর পর্যায়ের জন্য বিভাগীয় সদরের মেট্রোপলিটন এলাকা ও জেলা সদরের সদর উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা পাবে। এক্ষেত্রে প্রার্থীরা প্রাপ্যতার ভিত্তিতে প্রতিটি আবেদনে সর্বোচ্চ পাঁচটি বিদ্যালয় পছন্দের ক্রমানুসারে নির্বাচন করতে পারবে।

ডাবল শিফটের প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে উভয় শিফট পছন্দ করলে দুটি পছন্দক্রম সম্পন্ন হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। একই পছন্দক্রমের বিদ্যালয় কিংবা শিফট দ্বিতীয়বার পছন্দ করা যাবে না।

করোনা মহামারির কারণে গত বছর প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এর আগে শুধু প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো। দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তিতে পরীক্ষা নেওয়া হতো। নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হতো জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে।
– জাগোনিউজ