মোঃ নিজাম উদ্দিন, চকরিয়া:
চকরিয়া উপজেলার খুটাখালীতে মৎসঘের দিয়ে জোয়ারভাটা খালের লবণাক্ত পানি ঢুকিয়ে দিয়ে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এতে অন্তত পাঁচশ একর চাষাবাদের ফসল অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। চরম ক্ষয়ক্ষতির আতঙ্কে নির্ঘুম দিন কাটাচ্ছে কৃষকরা।
সরেজমিনে জানা গেছে, খুটাখালী ৩নং ওয়ার্ড হেতালিয়া পাহাড় এলাকার বাসিন্দা নুরুল হোসনের ছেলে মোঃ কাজল রাবারড্যাম সংলগ্ন একটি মৎস ঘের পাঁচ বছরের চুক্তিতে মাছচাষ করে আসছিল। চুক্তির মেয়াদ প্রায় শেষ হলে কিছুদিন আগে তিনি ঘেরটির সকল মাছ তুলে নেন। মাছ উত্তোলনের সময় ঘের সীমান্ত পাড়ের আনুমানিক ৩০ ও ৪০ ফুট প্রশস্ত দুটি পানি অপসারণের পথ তৈরি করে। ঘেরটি ত্যাগ করে চলে আসলেও পানি নিষ্কাশনের পথ দুটি বন্ধ করেননি কাজল নামের ওই ব্যক্তি। বর্তমানে এ পথ দুটি দিয়ে পার্শ্ববর্তী জোয়ার-ভাটা খাল থেকে লবনাক্ত পানি প্রবেশ করছে অনবরত। জোয়ার আসলে স্রোতা করে পানির সৃষ্ট জলবদ্ধতায় ফসল তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে খাসঘোনা, মিয়াছার ঘোনা, কালাইয়া ঘোনা, মৌলভীর ঘোনাসহ বাককুমের ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় পাঁচশ একর চাষী জমির।
এ বিষয়ে অবগত করলেও মোঃ কাজল দাপট দেখিয়ে কোনপ্রকার কর্ণপাত করছেন না বলে জানায় কৃষকরা। এমনকি কৃষকদের অসহায়ত্বের সুযোগে তাদের পিটিয়ে মারার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলেও জানায় তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক বলেন, উপজেলার কয়েকজন নেতার নাম ব্যবহার করে তাদের উপর এই নিরব নির্যাতন চালাচ্ছে। এমনকি মৎস ঘেরটি ত্যাগ করার সময় পানি নিষ্কাশনে বাঁধ কেটে দেয়া অংশ দিয়ে লবনাক্ত পানি ঢুকিয়ে দিচ্ছে। যারফলে জোয়ারের লবনাক্ত পানিতে প্রায় পাঁচশ একর পাকা ধান ধ্বংস হওয়ার অবস্থা হয়েছে। এনিয়ে উপায়ান্তর না দেখে কৃষকদের নিরব অন্তকান্নায় নির্ঘুম দিন পার করছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত মোঃ কাজলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মৎস ঘেরটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় আমি এটি মালিক পক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছি। ঘেরটিতে পানি নিষ্কাশনের দুটি ভাঙ্গা অংশের একটি ছিল পুরাতন। অপরটির পলবুট দিয়ে ইদুরের গর্ত হয়েছিল। তা আস্তে আস্তে ভেঙে গিয়ে বড় আকার ধারণ করেছে। এগুলো সংস্কার করার বিষয়ে তিনি ঘেরটি মালিককে বুঝিয়ে দিয়েছে উল্লেখ করে কোনপ্রকার আশ্বাস দেননি।
ঘের মালিক পক্ষের স্থানীয় মনির আহমদ জানান আমরা ঘেরটি এখনো বুঝে নিইনি। মেয়াদকাল রয়েছে আরো দুই মাস। তাছাড়া শতশত একর ধান চাষে লবনাক্ত পানি ঢুকিয়ে দেয়া ভাঙ্গা অংশ দুটি সংস্কার করতে বলা হলে তিনি তা কিছুতেই শুনছেন না।
এ বিষয়ে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামসুল তাবরিজ জানান, ভুক্তভোগী কৃষকরা একটি লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।