রাশেদুল ইসলাম:

কক্সবাজারে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ৭৫ তম জন্ম উৎসব পালন করা হয়েছে। কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে দৌলত ময়দানে প্রধানমন্ত্রীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কেক কাটেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি।

মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫ টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে কেক কাটার পর জন্মবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়৷ এ সময় দৌলত ময়দানে লোকে-লোকারণ্য হয়ে পড়ে।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগ ও পৌরসভার সকল ইউনিট থেকে ব্যানার, ফেস্টুনসহ বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে মিছিল সহকারে লোকজন সভাস্থলে এসে জড়ো হন। দিনভর কক্সবাজার পৌরশহরে যেন এক উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছিল।

অনুষ্টানে কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এমপি।

এসময় এমপি বলেছেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালীকে তাঁর হাজার বছরের ইতিহাসে প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্র প্রদান করেছেন, তাঁরই কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা কর্তৃক সেই রাষ্ট্রটি আজ বিশ্বমান চিত্রে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত। তাঁরই শাসনকাল ইংল্যান্ডের রানী প্রথম এলিজাবেথের শাসনকালের মতো আজ থেকে ৫০০ বছর পরেও বাঙালীর ইতিহাসে স্বর্ণযুগ হিসেবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। শেখ হাসিনার শাসনকালেই বাঙালী বিশ্বসভায় উন্নত মস্তকে দাঁড়াতে পেরেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনা প্রথম হাঁটতে শিখেছেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আঙ্গুল ধরে। প্রথমে সেই বাড়িয়ে দেয়া হাত ধরে, পরে জাতির জনকের দেখিয়ে দেয়া পথ ধরে তিনি হাঁটছেন। আজও হাঁটছেন। হাঁটতে হাঁটতে পার করে দিয়েছেন ৭৪টি বছর। আর এই চুয়াত্তর বছরের সবটুকু ন্যস্ত করেছেন দেশমাতৃকার জন্য। তিনি আর কেউ নন- তিনি হচ্ছেন দেশের দূরদর্শী, বলিষ্ঠ নেতা, মানুষের আশা-আকাঙ্খার বাতিঘর, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
দেশের সমকালে তিনিই একমাত্র রাজনৈতিক নেত্রী, যাঁকে হারাতে হয়েছে সব। আর তাঁর এই হারানো আসলে পুরো জাতির জন্যই হারানো। বাঙালী জীবনে একমাত্র ট্র্যাজেডি পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্টের নৃশংসতা।

পিতৃহত্যাকারীরা চেয়েছে তাঁর বিনাশ। স্বয়ং রাষ্ট্রব্যবস্থা থেকেও তাঁর প্রাণ হরণের চেষ্টা চলেছে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে। হত্যার অপচেষ্টা চলে আসছে সেই ’৮১ সাল থেকে দেশে ফেরার পর থেকেই। কিন্তু শেখ হাসিনা পিতা বঙ্গবন্ধুর মতোই ‘জীবন্মৃত্যু পায়ের ভৃত্য’ করে এগিয়ে চলেছেন বিশ্বমানবের মুক্তির সাধনায়। ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন দ্রুতগতিতে।’

অনুষ্টানে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান।

উক্ত অনুষ্টানে জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক এম.এ মনজুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, রেজাউল করিম, মাহবুবুল হক মুকুল, এড. রনজিত দাশ, মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, কাজী মোস্তাক আহমদ শামীম, এড. সুলতানুল আলম, এটিএম জিয়া উদ্দিন চৌধুরী, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর, জেলা যুবলীগের সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর, জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদার, সাধারণ সম্পাদক শফিউল্লাহ আনসারী, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হামিদা তাহের, যুব মহিলা লীগের সভাপতি আয়েশা সিরাজ, সাধারণ সম্পাদক তাহমিনা চৌধুরী লুনা, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস,এম সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মারূফ আদনান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা জাফর আলম চৌধুরী, সাবেক সাংসদ আবদুর রহমান বদি, খোরশেদ আলম কুতুবী, ইউনুছ বাঙালি, ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম, এড. আয়াছুর রহমান, হেলাল উদ্দিন কবির, এড. তাপস রক্ষিত, আলহাজ্ব মকসুদ মিয়া, মিজানুর রহমান, শাহেনা আক্তার পাখি, রেবেকা সুলতানা আইরিনসহ আওয়ামী অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী। সভার শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা নুরুল আলম সরকার।

উল্লেখ্য, সকালে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে খতমে কোরআন, দোয়া মাহফিল, মসজিদ, মন্দির ও গীর্জায় বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও শত শত বেলুন উড়িয়ে ও আতশবাজি উৎসবের মধ্য দিয়ে বাংলার সফল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন পালন করেছে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ।