বিশেষ প্রতিবেদক:

মহেশখালীর কুতুবজোমে নির্বাচনি সহিংসতায় আবুল কালামের মৃত্য নিয়ে বেরিয়ে আসছে ভিন্ন তথ্য । প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা দাবি করছেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী নিয়ে নয়; মেম্বার প্রার্থীদের মধ্যে দ্বন্দ্বে আবুল কালাম খুন হয়েছেন। নিজেদের লোক নিজেরা হত্যা করে প্রতিপক্ষকে মামলায় ফাঁসানোরও অভিযোগ উঠেছে।

আবুল কালাম খুনের খুব কাছের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন, গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌস কাজল। তিনি বলেছেন, স্থানীয় বাদশা মেম্বারের পুত্র আবদুর রহিম এবং তারেক মিয়া আবুল কালামকে গুলি ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। তা দেখে ফেলায় জান্নাতুল ফেরদৌস কাজল ও তার এক ভাগনিকে গুলি করে বাদশা মেম্বারের ছেলে তারেক।

জান্নাতুল ফেরদৌস কাজলের শরীরে গুলির ৩৫টি স্প্লিন্টারের প্রবেশ করেছে। স্প্লিন্টারের যন্ত্রণা নিয়ে তিনি এখন মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে।

শুধু জান্নাতুল ফেরদৌস কাজল নয়; সেই খুনের দৃশ্য দেখেছিলেন আশেপাশের অনেকে। ক্যামেরার সামনে কথা বলতে ভয় পেলেও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তারা বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

জান্নাতুল ফেরদৌসকে মারতে না পারায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছিলো আবদুর রহিম, তারেক ও সাগর । ক্ষোভের কারণে তার বাড়িতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে হামলাকারীরা- এমন অভিযোগ করেছেন গুলিবিদ্ধ কাজলের পরিবার।

ঘটনার আরো বিস্তারিত জানতে গণমাধ্যকর্মীদের একটি দল গিয়েছিলো নিহত আবুল কালামের বাড়িতে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, তার জীর্ণ-শীর্ণ বাড়িটি ভেঙে সেখানে নতুন বাড়ি তৈরির কাজ চলছে। এক প্রার্থীর পক্ষ থেকে বাড়িটি তৈরি করে দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নিহত আবুল কালামের স্ত্রী।

আবুল কালামের স্ত্রী বলেছেন, ঘটনার সময় তিনি স্বামীর সাথে ছিলেন। মেম্বার প্রার্থী ফরিদুল আলম জালালীর ভাই আমজাদ হোসেন আবুল কালামকে গুলি করেছে।

তবে ঘটনার সময় উল্লেখ করে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, আবুল কালামের ঘটনার অন্তত আধা ঘণ্টা আগেই বাদশা মিয়া মেম্বারের পুত্র আবদুর রহিমের ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছিলেন আমজাদ হোসেন, তার বড় ভাই মেম্বার প্রার্থী ফরিদুল আলম জালালী, সাবেক জেলা ছাত্রলীগ নেতা মোবারক হোসেন বারেক এবং একরামুল হক। যার কারণে ওই সময় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন আমজাদ হোসেনসহ অন্যরা।

আবুল কালামের খুনের ঘটনায় মেম্বার প্রার্থী ফরিদুল আলম জালালী, আমজাদ হোসেনসহ তাদের পক্ষের আরো কয়েকজনকে আসামী করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, ছুরিকাঘাতের ঘটনা ধামাচাপা দিতেই নিজেদের লোক আবুল কালামকে হত্যা করেছে রহিম ও তারেক।

এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে বাদশা মেম্বারের ছেলে তারেক মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, পরিকল্পিতভাবে আবুল কালামকে হত্যা করা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, মামলার এজাহারই শেষ কথা নয়। তদন্তে উঠে আসবে খুনের সাথে জড়িতের নাম। জড়িত না থাকলে এজাহারভুক্ত আসামী হলেও তদন্ত প্রতিবেদন থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে।

সঠিক তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের আইনের আনা আনতে দাবি জানিয়েছেন কুতুবজোমের সাধারণ মানুষ।