কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর ৪৭৪ তম সাহিত্য সভায় বক্তাগণ :

অধ্যাপক মুফীদুল আলম ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১২:৫৫

পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে


প্রয়াত মুফীদুল আলমের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা

বার্তা পরিবেশক:

কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর আলোচনা সভায় বক্তাগণ বলেন, অধ্যাপক মুফীদুল আলম ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। তিনি ছিলেন একাধারে শিক্ষক, সাংবাদিক, নাট্যকার, কবি, অনুবাদক, গীতিকার, গবেষক, সংগঠক, সুরকার, বন্ধুবৎসল পিতা।

বক্তাগণ আরো বলেন, তিনি মঞ্চ নাটক লিখেছেন, অভিনয় করেছেন, নাটক পরিচালনা করেছেন। তাঁর লিখিত নাটক কবন্ধ ও লাবণী পয়েন্ট কক্সবাজারে মঞ্চস্থ হয়েছে। তাঁর পরিচালিত উল্লেখযোগ্য একটি নাটক হলো উর্দু লেখক কৃষণচন্দর এর গল্প অবলম্বনে লিখিত নাটক ‘কাফন’। ১৯৭৬-৭৭ সালে কক্সবাজার মঞ্চস্থ হয়েছে।

আজ ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ শনিবার বিকালে কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত জেলার বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী শিক্ষাবিদ কক্সবাজার কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক প্রয়াত মুফীদুল আলমের : জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনায় বক্তাগণ এসব কথা বলেন।

একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় একাডেমীর স্থায়ী পরিষদ সদস্য ও প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক দিলওয়ার চৌধুরী, নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও সিনিয়র আইনজীবী শামসুল আলম কুতুবী, একাডেমীর জীবন সদস্য ইঞ্জিনিয়ার বদিউল আলম, অর্থ সম্পাদক কবি মোহাম্মদ আমিরুদ্দীন, কক্সবাজার মডেল হাইস্কুলের সিনিয়র শিক্ষক কবি কানিজ ফাতেমা, নির্বাহী সদস্য জোসনা ইকবাল, কবি হাকিমুন নেছা বাপ্পী ও প্রয়াত অধ্যাপক মুফীদুল আলমের জ্যেষ্ঠ কন্যা কবি সমাজ গবেষক ঋতিল মনীষা প্রমুখ বক্তব্য পেশ করেন।

বক্তাগণ আরো বলেন, তিনি শিশুদের জন্য গান ও ছড়া যেমন লিখেছেন, তেমনিভাবে তাঁর লেখা কবিতা নানা পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। ১৯৭৬ সালে কক্সবাজার বাণিজ্য মেলা উপলক্ষে “প্যানোয়া” নামের একটি বুলেটিন সম্পাদনা করতেন। এর মাধ্যমে তিনি সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত হন এবং সে বছরই কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন।

বক্তাগণ বলেন, তিনি শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে সমাজ বিকাশে জড়িয়ে পড়েন। বিভিন্ন ধরণের রাজনৈতিক দলের সাথে বেশকয়েক বছর জড়িয়ে ছিলেন। শেষ অবধি তিনি বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির সাথে জড়িয়ে পড়েন এবং জেনারেল সেক্রেটারি দায়িত্ব পালন করেন।

উল্লেখ্য, তিনি ১৯৬৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাচেলর অফ সায়েন্সে ডিগ্রি লাভ করার পরে পশ্চিম পাকিস্তান চলে যান এবং ১৯৬৯ সালে করাচী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি বিষয়ে মাস্টার অফ আর্টস ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৩ সালে চট্টগ্রাম কলেজ থেকে এল.এল.বি পাশ করেন ও কক্সবাজার আইনজীবী সমিতিতে যোগদান করেন। ইংরেজি প্রভাষক হিসেবে চাকরি জীবন শুরু করেছিলেন ১৯৭০-৭৪ সালে কক্সবাজার (সরকারি) কলেজে। কলেজে অধ্যাপনা কালে ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশের ১ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তিনি বিএসসি ডিগ্রি নেওয়ার পরে কিছুদিন কক্সবাজারের উখিয়া হাইস্কুলে শিক্ষকতা করেন। তিনি দারুল ইহসান বিশ^বিদ্যালয়ের কক্সবাজার ক্যাম্পাসে ইংরেজি বিভাগে যোগদান করেন এবং ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়া পর্যন্ত সময় জড়িত ছিলেন।

কক্সবাজারের শুদ্ধ সঙ্গীতের ওস্তাদ আবু বক্কর সিদ্দিকীর কাছ থেকে উচ্চাঙ্গসংগীতে তালিম নেন ১৯৭২/৭৩ সাল থেকে। ওস্তাদের মৃত্যুর পর থেকে তিনি ২০১৪ সাল পর্যন্ত সংগীতায়তনের সভাপতি ছিলেন। তিনি বাংলা, উর্দু গজল, এমনকি ইংরেজিতেও গান লিখেছেন ও সুর করেছেন। বাংলাদেশের একমাত্র সংগীত বিষয়ক পত্রিকা ‘সরগম’ এ তাঁর নিয়মিত গীতি ও সুরের স্বরলিপি ছাপা হত।

তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসমূহ রুবাইয়াৎ অফ ওমর খৈয়াম (অনুবাদ), ইংরেজি ও বাংলায় লিখিত শায়েরী “লখতে খয়াল” ও “মাওসেতুঙ এর পর্যালোচনা”।