সিবিএন ডেস্ক:
১৮ বছরের কম বয়সী নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার বিষয় নিয়ে নীতিগত সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বর্তমানে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, গত ২৩ আগস্ট বিষয়টি বাস্তবায়নের জন্য নির্বাচন কমিশার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন- জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ সংক্রান্ত কমিটিতে পাঠান। সেই কমিটি গত ২৫ আগস্ট বৈঠক করে সিদ্ধান্ত দেয় অপ্রাপ্ত বয়স্কদেরও এনআইডি দেওয়ার। এক্ষেত্রে আবার একটি উপ-কমিটি করা হয়। সেই কমিটিই বর্তমানে সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়নের উপায় খুঁজছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, সরকার সব বয়সীদের করোনা টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ইতোমধ্যে ১৮ বা তার ঊর্ধ্বের বয়সীদেরও টিকা দেওয়ার ঘোষণা এসেছে। ধীরে ধীরে আরো নিচের দিকে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এক্ষেত্রে টিকা কার্ড পেতে যেন ১৮-এর নিচের বয়সীদের কোনো সমস্যা পোহাতে না হয়, তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হচ্ছে।

সূত্রগুলো জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে গত ৮ আগস্ট এনআইডি অনুবিভাগ একটি সভা করেছে। যেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে ১ জানুয়ারি ২০০৬ বা এর পূর্বে যাদের জন্ম তাদের এনআইডি দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এনআইডি অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীর স্বাক্ষরিত ওই সভার কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, ১ জুনয়ারি ২০০৬ বা এর পূর্বে জন্মগ্রহণকৃত নাগরিকদের নিবন্ধন করার লক্ষ্যে তথ্য সংগ্রহের জন্য কমিশনের অনুমোদন গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিষয়টি বাস্তবায়ন করবে এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) মো. নুরুজ্জামান তালুকদার।

বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে প্রস্তাবটি কমিশনের কাছে নথিতে উপস্থাপন করা হয়েছিল। নথিতে অনুমোদন না দিয়ে বিষয়টি বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য বলে কমিশন।

এর আগে ২০১৯ সালে ২০০৪ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পূর্বে জন্মগ্রহণকারীদের তথ্য নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে সে সময় যাদের বয়স ১৬ বা তার ঊর্ধ্বে তাদের তথ্য নিয়ে রাখা হয়েছিল। এদের মধ্যে অনেকেই বয়স ১৮ বছর পূর্ব হওয়ায় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভোটার তালিকায় যুক্ত হয়ে গেছেন। বাকিরা কয়েক মাসের মধ্যেই ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন। সেই সময় যারা নিবন্ধন করেছিলেন তাদের এনআইডি সরবরাহ চলমান রয়েছে।

এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) মো. নুরুজ্জামান তালুকদার এ বিষয়ে বলেন, ১৮ বছরের নিচের বয়সীদের করোনার টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে টিকা কার্ড পেতে যাতে কোনো সমস্যা না হয়, তাই এ কার্যক্রম হাতে নেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা কিছুটা এগিয়ে থাকছি। যদি আরও নিচের বয়সীদের টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, তখন তাদের কিভাবে এনআইডি দেওয়া যায়, তা নিয়ে পরবর্তীতে ভাবা হবে। আপাতত ১৬, ১৭ বছর বয়সীদের এনআইডি হোক।

এক্ষেত্রে তারা অনলাইনে প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র দিয়ে আবেদন করলেই হবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে কেবল দশ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের আইরিশ দিয়ে আসতে হবে।

বর্তমানে ইসির সার্ভারে ১১ কোটি ১৭ লাখ নাগরিকের তথ্য রয়েছে। এখান থেকে সরকারি-বেসরকারি প্রায় ১৫০টি প্রতিষ্ঠান নাগরিকদের পরিচয় শনাক্তকরণের মাধ্যমে সেবা দিয়ে থাকে।