শাহেদুল ইসলাম মনির, কুতুবদিয়া:

কুতুবদিয়ার ৬টি ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ শুরু সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর)। এই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ।

গতকাল শনিবার ছিলো প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন। প্রার্থীরা যে যেভাবে পারছেন ভোটারদের ঘরে ঘরে কিংবা যাকে যেভাবেই পাচ্ছেন নিজ নিজ প্রতীকে ভোট কামনা করছেন। দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ার সর্বত্রই যেনো উৎসবমুখর পরিস্থিতি। মিছিল, মিটিং কিংবা স্লোগানের স্বর চোখ জোড়ানো। প্রার্থীদেরও প্রত্যাশা সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। প্রার্থীদের পাশাপাশি কুতুবদিয়ার সড়ক-উপসড়ক, পাড়া-মহল্লা কিংবা চায়ের দোকানগুলোতেও ভোটারদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দিন-রাত চলছে আড্ডা-গল্প ও নানান বিশ্লেষণ। দীর্ঘদিন পর নির্বাচনের আমেজ যেনো চোখে পড়ার মতো।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার জামশেদুল ইসলাম সিকদার জানান, স্থানীয় সরকারের তৃণমূল পর্যায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। নিবাচনে প্রতিযোগিতা থাকবে, কিন্তু সেটা হতে হবে পরিচ্ছন্ন, মারামারি কিংবা বিশৃঙ্খলা কখনো কাম্য নয়। জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সকল পক্ষ চায় একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। সরকারেরও কঠোর নির্দেশনা রয়েছে নিরপেক্ষ নির্বাচন করার। একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ, র‌্যাব, কোস্ট গার্ড, বিজিবি, আনসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক কেন্দ্রে কেন্দ্রে অবস্থান ও টহলরত অবস্থায় থাকবেন। উপজেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা ৪ জন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ৬ জন, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ জন, র‌্যাবের স্ট্রাইকিং টিম ১টি, র‌্যাবের মোবাইল টিম ২টি, বিজিবি ৬টি টিম, কোস্ট গার্ডের স্ট্রাইকিং ফোর্স ১টি, কোস্ট গার্ডের মোবাইল টিম ২টি, পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে প্রতি ইউনিয়নে ১টি মোবাইল ফোর্স, পুলিশ ও আনসারের সমন্বয়ে স্ট্রাইকিং ফোর্স তিন ইউনিয়নের ১টি। এছাড়াও উপজেলার মোট ভোটকেন্দ্র ৫৪টিতে প্রিসাইডিং অফিসার ৫৪ জন, সহ-প্রিসাইডিং ২৩০ জন, পোলিং অফিসার ৪৬০ জন, ৫৪ টি প্রতি ভোটকেন্দ্রে ১ জন পুলিশ অফিসার, ৪ জন পুলিশ সদস্য, ১ জন আনসার পিসি, ১ জন আনসার এপিসি ও আনসার সদস্য ১৫ জন ( পুরুষ ৮, মহিলা ৭ জন) দ্বায়িত্ব পালন করবেন বলে তিনি জানান।

কুতুবদিয়া উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন মোট ৩৩ জন। এছাড়াও ইউপি সদস্য পদে পুরুষ ২২৩ জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৭৬ জন নির্বাচন করছেন।
এই ৬টি ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ৮৭ হাজার ৫৮২ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৪৫ হাজার ৮১৩ জন ও মহিলা ভোটার সংখ্যা ৪১ হাজার ৭৬১ জন।
কুতুবদিয়ার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে উত্তর ধূরুং ইউপি নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র ৯টি ও ভোটকক্ষ ৪৪টি। এই ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ১৮ হাজার ১৯৩ জন। যারমধ্যে পুরুষ ৯ হাজার ৬৩৯ জন ও মহিলা ৮ হাজার ৫৫৪ জন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, সাধারণ পুরুষ সদস্য পদে ৪৩ জন ও সংরক্ষি মহিলা আসনে ১৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
লেমশীখালী ইউপি নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র ৯টি ও ভোটকক্ষ ৩৬টি। এই ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ১২ হাজার ৬৭৩ জন। যারমধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৭২৯ জন ও মহিলা ৫ হাজার ৯৪৪ জন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৭ জন, সাধারণ পুরুষ সদস্য পদে ৪৪ জন ও সংরক্ষি মহিলা আসনে ১৪ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
বড়ঘোপ ইউপি নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র ৯টি ও ভোটকক্ষ ৪৮টি। এই ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ২০ হাজার ২৯ জন। যারমধ্যে পুরুষ ১০ হাজার ৩৫১ জন ও মহিলা ৯ হাজার ৬৭৮ জন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, সাধারণ পুরুষ সদস্য পদে ৩৮ জন ও সংরক্ষি মহিলা আসনে ১১ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
দক্ষিণ ধূরুং ইউপি নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র ৯টি ও ভোটকক্ষ ৩৪টি। এই ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ১১ হাজার ৫৯৩ জন। যারমধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ১০৩ জন ও মহিলা ৫ হাজার ৪১০ জন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৫ জন, সাধারণ পুরুষ সদস্য পদে ৩২ জন ও সংরক্ষি মহিলা আসনে ১২ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
কৈয়ারবিল ইউপি নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র ৯টি ও ভোটকক্ষ ২৭টি। এই ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ৯ হাজার ২৬৩ জন। যার মধ্যে পুরুষ ৪ হাজার ৭৫০ জন ও মহিলা ৪ হাজার ৫১০ জন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৬ জন, সাধারণ পুরুষ সদস্য পদে ৩০ জন ও সংরক্ষি মহিলা আসনে ১০ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।
আলী আকবর ডেইল ইউপি নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র ৯টি ও ভোটকক্ষ ৪১টি। এই ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ১৫ হাজার ৮৩১ জন। যারমধ্যে পুরুষ ৮ হাজার ২৪১ জন ও মহিলা ৭ হাজার ৫৯০ জন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, সাধারণ পুরুষ সদস্য পদে ৪৪ জন ও সংরক্ষি মহিলা আসনে ১২ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

উল্লেখ, চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েও নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় মাঠে দেখা মিলেনি বড়ঘোপ ইউনিয়নের তৌহিদুল ইসলাম খোকন, কৈয়ারবিল ইউনিয়নের জাহেদুল ইসলাম, লেমশীখালী ইউনিয়নের আবু মজিদ আবদুল্লাহ ও মো. সরওয়ার আলম এবং উত্তর ধূরুং ইউনিয়নের আশাদুল কবির।