সিবিএন ডেস্ক: জেলে যাওয়ার আগে পরী শেষ কাজটি করছিলেন ‘প্রীতিলতা’কে ঘিরে। কাজ শেষ করেছেন ৩৫ ভাগ। মূলত এই কাজের ভেতরে নিমগ্ন থাকতেই গ্রেফতার হন তিনি। এরপর টানা ২৭ দিনের কারাবাস।

বিপরীতে অনিশ্চয়তায় পড়ে যান ‘প্রীতিলতা’ টিমসহ অন্য অনেক নির্মাতা-প্রযোজক। ভক্তদের কপালেও বলিরেখা জমে এই ভয়ে, এখানেই বুঝি শেষ পরীমণি! না, তা হলো না। ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে বীরকন্যা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার আত্মাহুতি দিলেও পর্দার জন্য প্রস্তুত প্রীতিলতা জেল থেকে বের হলেন বীরের বেশেই। চারপাশে স্লোগান তুলে দিলেন, ‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’! পরীমণি

১ সেপ্টেম্বর এভাবে বীরের বেশে ঘরে ফেরার পরেও শঙ্কা কাটেনি। অনিশ্চয়তা ছিল মামলার চার্জশিট, জামিন বাতিলসহ নানা বিষয়ে। যদিও তার আইনজীবী শুরুতেই বলেছেন, পরীমণির অসম্পূর্ণ কাজ করতে আইনি কোনও বাধা নেই। তবু প্রশ্ন, মানসিকভাবে পরীমণি শুটিংয়ের জন্য ফিট তো?

সুখবর হলো, এসব শঙ্কা আর অনিশ্চয়তা ছাপিয়ে এরমধ্যে পরীমণি গুছিয়ে নিয়েছেন নিজেকে। নির্মাতা রাশিদ পলাশসহ ‘প্রীতিলতা’র পুরো টিমের সঙ্গে বৈঠক করেছেন এরমধ্যে। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অক্টোবরের দিকে তারা শুটিংয়ে নামবেন ফের। বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেন ছবিটির চিত্রনাট্যকার গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন, ‘পরীমণি প্রীতিলতার সেটে যাওয়ার অপেক্ষায় আছেন। আমরা অক্টোবরে শুটিংয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

 সম্প্রতি পরীর বাসায় ‘প্রীতিলতা’র নির্মাতা ও নাট্যকার

ধারণা করা হচ্ছে, অক্টোবরের শেষ দিকে পরীমণি ‘প্রীতিলতা’র সেটে অংশ নেবেন। তবে তার আগেও শুটিংয়ে নামার একটি আভাস মিললো। গুঞ্জন রয়েছে, সবাইকে চমকে দিয়ে গিয়াস উদ্দিন সেলিমের নতুন সিনেমা ‘গুনিন’-এ যুক্ত হচ্ছেন এই অভিনেত্রী। এর আগে দু’জনের দারুণ অভিজ্ঞতা রয়েছে ‘স্বপ্নজাল’ ছবির মাধ্যমে। সেই রেশ মিলতে পারে আবারও।

কারণ, গত সপ্তাহে ছবিটির জন্য চুক্তিবদ্ধ থাকা নুসরাত ফারিয়া বেরিয়ে গেছেন শিডিউল জটিলতায় পড়ে। এতে তিনি অন্যতম চরিত্র রাবেয়ার ভূমিকায় অভিনয় করার কথা ছিল। আর শুটিং শুরুর কথা ছিল অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। এরমধ্যে ছবির আরেক চুক্তিবদ্ধ অভিনেতা শরিফুল রাজ সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন। মূলত তার সুস্থতার জন্যই শুটিং পিছিয়ে নেওয়া হয় অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। অন্যদিকে একই সময়ে আগেই নুসরাত ফারিয়ার শিডিউল দেওয়া আছে দেশের বাইরে অন্য প্রজেক্টে। শিডিউল জটিলতায় পড়েন ‘গুনিন’ নির্মাতা সেলিম। সেটি মোকাবিলার জন্যই এবার পরীমণিকে চাইছেন এই নির্মাতা।পরীমণিপরীমণি

যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনই মুখ খুলতে নারাজ সেলিম-পরী দু’জনেই। সেলিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘পরীকে পেলে তো সবচেয়ে খুশি হতাম। বিষয়টি নিয়ে আমরা আসলে ভাবছি। এখনই চূড়ান্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।’

অন্যদিকে পরীমণিও বলেছেন প্রায় একই কথা, ‘সেলিম ভাই আমার সবচেয়ে পছন্দের নির্মাতা। তার ছবিতে কাজ করার জন্য সব সময় অপেক্ষায় থাকি। তবে এই বিষয়ে (গুনিন) এখনই বলার মতো কিছু হয়নি। কারণ, এখন আমি অনেক জটিলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।’

 গিয়াস উদ্দিন সেলিম ও পরীমণি

বিশ্বস্ত সূত্র জানাচ্ছে, পরী-সেলিম এখনও চুক্তিবদ্ধ না হলেও তারা উভয় পক্ষই ছবিটি করার বিষয়ে সম্মত রয়েছেন। আর সেটি চূড়ান্ত হওয়া এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। ধারণা করা হচ্ছে, সেলিমের ‘গুনিন’ দিয়েই পরীমণি শুটিংয়ে ফিরছেন, অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে।

সূত্র আরও বলছে, পরীমণি জেল থেকে মুক্তির প্রথম দিনই (১ সেপ্টেম্বর) ‘গুনিন’ ছবিটির প্রস্তাব পান! যা তার কাছে ছিল মেঘ না চাইতে বৃষ্টির মতো উপহার। মানে এই দাঁড়ালো, পরীমণি সহসা থামছেন না; প্রীতিলতা কিংবা রাবেয়া হয়ে ছিঁড়বেন অসময়ের শেকল, উড়বেন পাখা মেলে, রুপালি আকাশে। জেল থেকে বেরিয়ে…