ইমাম খাইর, সিবিএন:
মঙ্গলবার (৩১ আগষ্ট) সকাল সাড়ে ১১ টা। ভরদুপুরের গরম মাথায় পড়ছে। ঠিক ওই সময়ে পর্যটন শহরের মোটেল লাবনীর প্রবেশ পথে গলায় কার্ড ঝুলিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন একজন যুবক। তার নাম ফারুক আজম। তিনি ট্যুর অপারেটরস এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (টুয়াক) এর নির্বাচনে দপ্তর সম্পাদক পদের প্রার্থী (নির্বাচিত)। কিন্ত ভোট চাচ্ছেন সভাপতি পদপ্রার্থী আনোয়ার কামালের দেওয়াল ঘড়ি মার্কায়। নিজে যে একজন প্রার্থী তা বেমালুম ভুলে গেলেন। ভোটার দেখলেই ছুটে যান, ভোট খোঁজেন দেওয়াল ঘড়িতে।

তপ্ত গরমে মাথার ঘাম ঝরে পড়ছে পায়ে, মাটিতে। ভিজে গেছে গায়ের জামা-কাপড়। তাও দৃষ্টি নেই। ভোটের মাঠে অনড় ফারুক আজম। আজিব ব্যাপার তো!

ফারুক আজমকে বলতে দেখা যায়- ‘সভাপতি প্রার্থী (নির্বাচিত) আনোয়ার কামাল আমার বড় ভাই। তার জন্য একটি ভোট চাই। দেওয়াল ঘড়ি মার্কায় ভোট চাই। আপনার একটি ভোটেই হার-জিত। আপনি চাইলে জিতে যাবে আমার ভাই। আপনার হাতেই আমাদের সম্মান।’

তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার এই নির্বাচনে ফারুক আজম নিজের জন্য একটিবারও ভোট চান নি। বরাবরই ভাইয়ের কথা বলেছেন। এটিকে বলে দায়িত্বশীলতা, ভাইয়ের প্রতি ভালবাসা।

নিজের জন্য ভোট না চাইলেও ভোটারদের প্রতি আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ় মনোবলে গলায় পরলো বিজয়ের মালা।

আর একজন প্রার্থীর প্রতি ভোটারদের কি পরিমাণ আস্থা ও বিশ্বাস থাকলে বিনা প্রচারণায় নির্বাচিত হয়, তার প্রমাণ ফারুক আজম। এটি একটি নতুন দৃষ্টান্তও বটে।

মোটেল লাবনীতে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ হয়।

তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও টুয়াকের নির্বাচনে ছিল সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ।

ফারুক আজম টুয়াকের গত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। সমুদ্র পাড়ের বাহারছড়ায় বেড়ে ওঠা এই সন্তান যথেষ্ট সাহসী। সমাজ উন্নয়ন ও মানবসেবামূলক কাজে তাকে পাওয়া যায়। একজন ক্রিড়াবিদও তিনি।

ফারুক আজম কক্সবাজার শহর সমাজসেবার সদস্য, পৌর প্রিপ্যারেটরী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাক্তন ছাত্র ফোরামের সাধারণ সম্পাদক এবং বাহারছরা করোনা কল্যাণ তহবিলের অন্যতম যোদ্ধা।

টুয়াকের নতুন দায়িত্ব যেন যথাযথ পালন করতে পারেন- সবার দোয়া, পরামর্শ ও সহযোগিতা কামনা করেছেন ফারুক আজম।